লাইফ স্টাইল

চা না কফি কোনটি বেশি উপকারী জেনেনিন

আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই চা-কফির পাগল। আশেপাশে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা যিনি চা কিংবা কফি কোনটাই পান করেন না । থাকলেও সে সংখ্যা খুবি কম। যারা চা পানে শৌখিন তারা নিজেদের চা প্রেমী বলে থাকেন। আবার কফিপ্রেমীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। চা-কফি শুধু দেশেই নয়, সারা বিশ্বেই রয়েছে এর জনপ্রিয়তা। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের সকাল শুরু হয় এক কাপ অথবা চায়ের চুমুকে।অনেকে চা-কে স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী বলে মনে করেন, আবার অনেকে কফিকে স্বাস্থ্যের জন্য ভাল বলে মনে করেন।

তবে বেশিরভাগ মানুষই জানেন না কোন পানীয় শরীরের জন্য বেশি উপকারী, চা না কফি।ভেবে দেখুন তো আপনিও হয়তো উত্তর বলতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছেন মনে মনে। আসলে এই প্রশ্নটি খুবই কঠিন এবং শুধু সাধারণ মানুষই নয়, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও এই নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে গিয়ে বিভক্ত হয়ে গিয়েছেন দুই ভাগে। আজ আমরা জানার চেষ্টা করব চা বা কফি স্বাস্থ্যের জন্য কোনটি আসলে বেশি উপকারী।ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চা ও কফি নিয়ে এ পর্যন্ত শতাধিক গবেষণা করা হয়েছে এবং সেগুলি থেকে বিভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে। একটি সমীক্ষা অনুসারে, কফিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যেখানে চায়ে ফাইবার থাকে না।

ফাইবার হজম সিস্টেমের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান এবং এক কাপ কফিতে প্রায় ১.১ থেকে ১.৮ গ্রাম ফাইবার থাকে। এমনকি কফিতে কমলার রসের চেয়ে বেশি ফাইবার থাকে। এই দিক থেকে চায়ের চেয়ে কফি কিন্তু বেশি ভাল।ক্যাফেইন সম্পর্কে কথা বলতে গেলে মনে রাখতে হবে, চা এবং কফি উভয় পানীয়েই ভাল পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে। এক কাপ কফিতে প্রায় ১০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে, আর এক কাপ চায়ে প্রায় ৫০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে।ক্যাফেইন অল্প পরিমাণে গ্রহণ করা হলে, এটি শরীরে শক্তি সরবরাহ করতে পারে এবং মানুষের মেজাজ ভাল রাখে, ফুরফুরে রাখে। এটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী বলে মনে করা হয়।

তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ ক্ষতিকর।মায়োক্লিনিকের রিপোর্ট অনুসারে, প্রতিদিন ৪০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ক্যাফেইন গ্রহণ নিরাপদ বলে মনে করা যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিন ১-২ কাপ কফি বা চা পান করার কোনও ক্ষতি নেই।অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে চা এবং কফি উভয়ই হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে বিবেচিত হতে পারে। এই দুটি জিনিস খাওয়া হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে। কফি এবং চায়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পলিফেনল থাকে, যা কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। হার্টের স্বাস্থ্যের দিক থেকে চা এবং কফি উভয়ই উপকারী বলে বিবেচিত হতে পারে।

এছাড়াও, কফি ফাইবার এবং মাইক্রোবায়োম স্বাস্থ্যের জন্য ভাল বলে মনে করা হয়। শুধু তাই নয়, কফি পান করলে ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।অন্যদিকে চা পান রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। উভয়ই হার্টের স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ুর দিক থেকে উপকারী। সামগ্রিকভাবে, কফির আরও পরিচিত উপকারিতা রয়েছে, তবে তুলনামূলক ভাবে কিন্তু চায়ের উপকারিতা কম। এমনটাই দেখা গিয়েছে এখনও পর্যন্ত গবেষণা করে। তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

%d bloggers like this: