সারা দেশ

অবশেষে বন্ধ করে দেওয়া হলো সেই সেতু

বরগুনার আমতলী উপজেলায় সেতু ভেঙে ৯ জন নিহতের পর সেতুর পাশে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়েছে। ভাঙা সেতুতে আবারও যেন কোনো গাড়ি উঠে না পড়ে সেজন্য প্রবেশমুখে পুঁতে দেওয়া হয়েছে পিলার।  এ সাইনবোর্ড ও পিলার পুঁতে দিয়েছে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ।এছাড়াও আগামী শনিবারের মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২০ থেকে ২৫টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে সাইনবোর্ড ও ব্যারিকেড দেওয়া হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আমতলী উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. নিজাম উদ্দিন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হালকা যান নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে ৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের হলদিয়াহাট সেতুটি নির্মাণের জন্য ২০০৮ সালের ৩১শে অক্টোবর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। সেতুটি নির্মাণের ৫ বছরের মধ্যেই এটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ ১৬ বছরে সেতুটির আর কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি। তবে ঝুঁকি এড়াতে সেতুর পাশে ঝুঁকিপূর্ণ লেখা একটি সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি যান চলাচল রোধে সেতুর মুখে গাছ পুঁতে দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পরবর্তীতে সেই গাছ তুলে যান চলাচল অব্যাহত থাকলেও আর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আমতলী উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ।কেবল ওই একটি সেতুই নয়, হলদিয়া ইউনিয়নের ওই খালের ওপর নির্মিত প্রায় সবগুলো সেতুই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, আমার ইউনিয়নে আরও অনেকগুলো ঝুঁকিপূর্ণ সেতু রয়েছে। এসব সেতু দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। না হলে আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আমার ইউনিয়নের বাসিন্দারা আমতলী উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

আমতলী উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. নিজাম উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ভেঙে যাওয়া সেতুটিতে নতুন করে কোনো দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে এ কারণেই সেতুর পাশে ঝুঁকিপূর্ণ সাইনবোর্ড ও প্রবেশমুখে পিলার পুঁতে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আরও প্রায় ২০ থেকে ২৫টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে আগামী শনিবারের মধ্যে সাইনবোর্ড এবং ঝুঁকি বিবেচনায় প্রয়োজন হলে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হবে।এ বিষয়ে বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান খান গণমাধ্যমকে জানান, ঢাকা থেকে আমাদেরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে, আমরাও প্রয়োজন জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।

শুধু আমতলী না জেলার সব সেতুর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যেসব সেতু একদমই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে সেগুলোতে সাইনবোর্ড সাঁটানোর পাশাপাশি সম্পূর্ণ আটকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। বিশেষ করে আয়রন ব্রিজ স্টিল দিয়ে তৈরি করায় ওপর থেকে দেখে ভালো মনে হলেও পানির নিচে কী অবস্থায় আছে তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। পরবর্তীতে যেগুলো কম ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলোতে সাইনবোর্ড দেওয়ার পাশাপাশি যাতে সাইকেল রিকশা ছাড়া ভারী কোনো যান উঠতে না পারে সে ব্যবস্থা করা হবে।

উল্লেখ্য, শনিবার (২২শে জুন) মাদারীপুর থেকে বরগুনার আমতলীতে বউভাত খেতে আসার পথে বরগুনার আমতলীর চাওড়া ও হলদিয়া ইউনিয়নের মাঝামাঝি হলদিয়া ব্রিজ ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ে অন্তত ৯ জন নিহত হন।

%d bloggers like this: