সারা দেশ

অনুপ্রবেশকালে ৬ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত দিয়েছে বিজিবি

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে ৬ জন মিয়ানমারের নাগরিককে পুশব্যাক করেছে ১১ বিজিবি। ২৩ জুন রোববার বিকেলে নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন (১১ বিজিবি) এর অধীনস্থ লেম্বুছড়ি বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত পিলার-৫০/২ এস সংলগ্ন সীমান্তের বাহিরমাঠ নামক স্থান দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে তারা।নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে তাদের আটক করা হয় পরবর্তীতে ১১ বিজিবির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে আনুমানিক ৫ টা ৪০ মিনিটের দিকে সীমান্তের একই এলাকা দিয়ে তাদেরকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পুশব্যাক করা হয় বলে সূত্র নিশ্চিত করে।

এ বিষয়ে জানতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (১১ বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মো: সাহল আহমদ নোবেলকে মুঠোফোনে কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।এদিকে মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি (এএ) ও স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে দেশটির সামরিক বাহিনীর যুদ্ধ চলছে। এ ঘটনার জেরে সীমান্ত পেরিয়ে আবারও টেকনাফে রোহিঙ্গার ঢল নামতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, নতুন করে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া মিয়ানমার রাখাইনে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করলে রাখাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা পালানোর চেষ্টা করে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও স্থানীয় রোহিঙ্গাদের বরাতে জানা গেছে রাখাইন রাজ্যে সংঘর্ষ দিন দিন বেড়েই চলছে।

সেখানে থাকা রোহিঙ্গারা নিজ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন। টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনের অপর পাশে রাখাইনের মংডুর টাউনশীপ এলাকার বিভিন্ন সীমান্তে শত শত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুরা অবস্থান করছেন।এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনপ্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানা যায় স্থানীয় এক সূত্রে।

এর আগে ২০১৭ সালে মিয়ানমারে নিরাপত্তা চৌকি ও ক্যাম্পে হামলার ঘটনার জেরে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বাস্তুচ্যুত হয়ে পালিয়ে আসে বাংলাদেশে। আশ্রয় নেয় উখিয়া-টেকনাফে। এখনো পর্যন্ত মিয়ানমার সরকার কোনো রোহিঙ্গাকে দেশে ফেরত নেয়নি।জাদিমুড়ার রোহিঙ্গা নেতা নুরুল আমিন জানান, রাখাইনের মংডু টাউনশীপ শহরের চারপাশে আরাকান আর্মি ও দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।

এমন পরিস্থিতিতে রাখাইনের রোহিঙ্গারা বাড়ি-ঘর ছাড়ছেন এবং সেখানে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী জানান, বিগত সময় রোহিঙ্গারা এদেশে অনুপ্রবেশ করার কারণে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা। তাই নতুন করে কোনো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আমরা চাই না।

পালংখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা রোহিঙ্গারা উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয়ের পরে এ দুই উপজেলার বেড়েই চলেছে খুন, অপহরণ ও মাদক কারবার। এজন্য নতুন করে কোনো রোহিঙ্গা যেন সীমান্ত পেরিয়ে আসতে না পারে সেজন্য সর্তক থাকতে হবে।

টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবির সদস্যরা। সার্বক্ষণিক রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন।