11 June 2024 , 7:16:28 প্রিন্ট সংস্করণ
গ্রীষ্মকালের আবহাওয়া মানেই ভ্যাপসা গরম। এমন পরিবেশে রোগজীবাণুর সংক্রমণ একটু বেশিই বাড়ে। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাবও বাড়ে। এ সময় বাড়ে কনজাঙ্কটিভাইটিসের (Conjunctivitis) প্রাদুর্ভাবও। ফলে চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ে। এ রোগের মূল কারণ ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে অ্যালার্জি বা আঘাত পাওয়ার কারণেও হতে পারে। কনজাঙ্কটিভাইটিসকে পিংক আই বা রেড আইও বলে। সময়মতো ও সঠিক চিকিৎসা না হলে দীর্ঘদিন এ রোগে ভুগতে হতে পারে রোগীকে।
পাশাপাশি চোখের কর্নিয়ারও ক্ষতি হয়।লক্ষণ ও চিকিৎসা : চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জ্বালা, চুলকানি, ব্যথা, চোখ খচখচ করা, পানি পড়া, আলোর দিকে তাকাতে কষ্ট হওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। অনেক সময় চোখের পাতা আঠার মতো জুড়ে যায়। চোখে ময়লার আস্তরণ পড়তেও দেখা যায়। এসব লক্ষণ দেখা দিলে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। তার পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি বাড়িতেও চোখের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। পরিষ্কার কাপড় হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে পানিটা নিংড়ে নিন। কয়েক মিনিট ভেজা কাপড়টি চোখের ওপর আলতোভাবে লাগিয়ে রাখুন।
এছাড়া হালকা গরম পানিতে এক চিমটি লবণ দিয়ে তাতে তুলা ভিজিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে পারেন। চোখ ঘষা বা স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন। কারণ এতে চোখে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে। চোখের সংক্রমণ হলে কন্ট্যাক্ট লেন্স পরবেন না, যতক্ষণ না চোখ ভালো হয়। কারণ লেন্সে ব্যাকটেরিয়া আটকে থাকতে পারে। ফলে চোখের সমস্যা আরও বাড়বে। চোখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিন। বাইরে থেকে ফিরে কাজটি করতে হবে। চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শে চোখে ড্রপ বা মলম দিতে পারেন। সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে সেরে যাবে।
পরামর্শ : কনজাঙ্কটিভাইটিস ভাইরাস প্রতিকারে সুনির্দিষ্ট ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন নেই। কিছু নিয়ম মেনে চললে এ রোগ থেকে ঝুঁকিমুক্ত থাকা যায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা কনজাঙ্কটিভাইটিস প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। বাইরে থেকে ফিরে হাত ধোয়া, বিশেষ করে খাওয়ার আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।ঘরের চারপাশ পরিষ্কার রাখুন। ধুলাবালি ও অ্যালার্জেনের কারণে কনজাঙ্কটিভাইটিস হতে পারে। কারও এ রোগ হলে তার ব্যক্তিগত জিনিস ব্যবহার করবেন না।
এ রোগ ছোঁয়াচে। যেখানে মানুষের ভিড়, সেসব জায়গা বর্ষাকালে কনজাঙ্কটিভাইটিসসহ বহু সংক্রামক রোগের প্রজনন ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। তাই সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ভিড় এড়িয়ে চলুন। বাড়ির বাইরে বের হলে সানগ্লাস ব্যবহার করুন। এ ছাড়া সাঁতার কাটার সময় চোখে চশমা ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার ও পানি পান এ রোগ থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায়। প্রতিদিনের খাবারে খনিজ ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার রাখা, বিশেষ করে ভিটামিন-এ জাতীয় খাবার চোখের জন্য ভালো।