9 May 2024 , 3:59:53 প্রিন্ট সংস্করণ
‘পুনর্জন্ম’র মতো জনপ্রিয় সিরিজের নির্বাহী প্রযোজক মাসুদুল মাহমুদ রুহানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৮ মে) রাতে রাজধানীর পূর্ব রায়েরবাজারের একটি মেস বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
ব্যক্তিজীবনে সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে রুহানের। ২০২০ সালে বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সংসার মাসখানেক আগেই ভেঙে যায় তার। এরপর থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। জানা গেছে, সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল এই প্রযোজকের। যে কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগে গত ৪ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দেন রুহান। যেখানেও ছিল বিরহের কথা। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান থেকেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর আগে একটি পোস্টে সূরা আর রহমানের একটি আয়াত শেয়ার করেন রূহান। সেই আয়াতটি হল-‘তবে তোমরা তোমাদের রবের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে।’
এরপর তিনি লেখেন, ‘আমরা কতো অদ্ভুত ভাবে সমগ্র বিশ্বের সকলে মিলে একই সুতায় গাথা। যে সূতা দেখাও যায় না!! কি বিচ্ছিরি রাতের শেষে এতো সুন্দর সকাল লুকিয়ে থাকতে পারে আমরা ভেবেও দেখি না…। জীবন কি অদ্ভুত! কতো সুন্দর!’
বুধবার (৮ সে) দিবাগত রাত ১টার দিকে হাজারীবাগ থানা পুলিশ পূর্ব রায়েরবাজার হাই স্কুলের ঢালে ১১৬/৩ নম্বর একটি বাড়ির ষষ্ঠ তলার মেস থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠায়। মরদেহ উদ্ধারকারী হাজারীবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গণমাধ্যমকে জানান, গত এক মাস আগে স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় রুহানের। তবে এর আগে থেকেই পূর্ব রায়েরবাজারের একটি মেসে থাকতে শুরু করেন রুহান। তার রুমমেট বুধবার রাত ১১টার দিকে মেসে ফিরে দেখেন ফ্যানের সঙ্গে বিছানার চাদর পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন রুহান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আশপাশের লোকজনকে ডেকে আনেন। খবর পেয়ে রাতেই মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মাসুদুল মাহমুদ রুহান ‘রেডরাম’ চলচ্চিত্র, ‘দ্যা সাইলেন্স’ ওয়েব সিরিজ, ‘আমি কি তুমি’সহ আরও বহু নাটক ও ওয়েব সিরিজের প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন। নির্মাতা ভিকি জাহেদের সঙ্গে অধিকাংশ প্রজেক্টে কাজ করেছেন।
লাশ উদ্ধারের পর হাজারীবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাওন কুমার বিশ্বাস জানান, এক মাস আগে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় রুহানের। গত দুই মাস ধরে পূর্ব রায়েরবাজারের ওই মেসে থাকতে শুরু করেন তিনি। চলচ্চিত্রের বিভিন্ন শুটিংয়ের কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার আসা যাওয়া বেশি ছিল। যখন ঢাকায় ফিরতেন তখন ওই মেসে গিয়ে থাকতেন। তার রুমমেট বুধবার রাত ১১টার দিকে মেসে ফিরে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখেন, ফ্যানের সাথে বিছানার চাদর পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন রুহান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আশপাশের লোকজনকে ডেকে আনেন। পরবর্তীতে তাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে মধ্যরাতে সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ এবং পারিবারিক বিভিন্ন কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। তবুও বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, মাসুদুল মাহমুদ রুহানের বাড়ি রংপুরে। পড়াশোনা করেছেন সেখানকার পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে। প্রযোজনার পাশাপাশি পরিচালনাতেও যুক্ত ছিলেন তিনি। বানিয়েছেন ‘উস্কানি’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এছাড়া একাধিক জনপ্রিয় নাটক, ওয়েব সিরিজ প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন তিনি।