লাইফ স্টাইল

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কী খাবেন কী খাবেন না জেনে রাখুন

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি বিরক্তিকর ও যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা। একদিনে বা হঠাৎ করে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না। অনেকের টয়লেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায়, কিন্তু পেট পরিষ্কার হয় না। অস্বাস্থ্যকর ও বাজে খাদ্যাভ্যাস, অপুষ্টিকর খাবার ইত্যাদির কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো অস্বস্তিকর সমস্যায় পড়ে থাকেন অনেকেই। এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রোকনুজ্জামান ভূঞা।

কোষ্ঠকাঠিন্য কী?
এ ব্যাপারে ডা. রোকনুজ্জামান ভূঞা বলেন, কোষ্ঠ একটি বাংলা শব্দ। যার অর্থ মল। আর কাঠিন্য মানে হলো— কঠিন আকারে যখন মলত্যাগ করা। যদি সপ্তাহে ২-৩ বার বা তার কম বার মলত্যাগ হয় অথবা মল যদি অতিরিক্ত কঠিন বা শুষ্ক হয় এবং সন্তোষজনক মলত্যাগ যদি না হয় তা হলে আমরা তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলব। আর যখন এটা প্রায় ৩ মাস পর্যন্ত দীর্ঘ হয় তা হলে সেটাকে আমরা বলব দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য।

কারা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগে থাকেন?
জীবনের যে কোনো সময় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাৎক্ষণিক বিচলিত না হয়ে রোগীকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কোনো রোগীর যদি রক্তশূন্যতা দেখা দেয় অথবা মল যদি কালো হয়, তা হলে বুঝতে হবে তার জটিল কোনো সমস্যা আছে। সে সময় উচিত হবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।এ ব্যাপারে ডা. রোকনুজ্জামান ভূঞা বলেন, কোষ্ঠকাঠিন্য যে কোনো বয়সে যে কোনো সময় হতে পারে।

তবে গবেষণায় দেখা গেছে বয়স্ক লোক বেশি থাকে। পুরুষ এবং মহিলাদের ভেতর মহিলদের কোষ্ঠকাঠিন্যটি বেশি দেখা যায়। আর বাচ্চাদের মধ্য যারা মায়ের দুধ ছেড়ে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক খাবারের দিকে যায়, সেসব বাচ্চা বেশি এ রোগে ভোগেন। এ ছাড়া যেসব রোগী অন্য রোগের ফলে চলাফেরা করতে পারেন না (যাদের শুয়েবসে থাকতে হয়), তারাও অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য ভুগে থাকেন।

এ ছাড়া যদি পেটে ব্যথা থাকে তা হলে তার পেছনের কারণ খুঁজে বের করতে কিছু পরীক্ষা করা লাগতে পারে। সে সময় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবস্থা করা উচিত। তা না হলে জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

জটিল রোগীকে কী কী ধরনের পরীক্ষা করা হয়?
এ ব্যাপারে ডা. রোকনুজ্জামান ভূঞা বলেন, এ সময় আমরা কিছু পরীক্ষা দিয়ে থাকি। প্রথমত আমরা রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ দেখি, এ জন্য রক্ত পরীক্ষা দেওয়া হয়। আমরা মলের একটা পরীক্ষা করি, মলের সঙ্গে রক্ত যায় কিনা সেটা দেখি। রক্তের কিছু হরমোন পরীক্ষা করি, ডায়াবেটিস পরীক্ষা করি এবং মলদ্বারে কোনো টিউমার, আলসার, পলি আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখি।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কী খাবেন, কী খাবেন না
এ ব্যাপারে ডা. রোকনুজ্জামান ভূঞা বলেন, আমি বলব, আমাদের প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি এবং ফল খেতে হবে। যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে। বিশেষ করে আমরা যদি মৌসুমি ফলের সময় ফল খাই তাহলে শরীরের আঁশের অভাব বেশি কমাবে।আর সবজির ভেতরে ঢেঁড়স, পালং শাক, পুঁই শাক, কচুমুখিতে প্রচুর আঁশ থাকে। এগুলো যদি প্রচুর পরিমাণে খাই তা হলে তার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের কিছু খাবার কম খেতে হবে। যেমন: গরু- খাসির মাংস, ফাস্টফুড (কেক, বার্গার), চিকেন ফ্রাই, আলু ফ্রাই, চিপস ইত্যাদি এগুলা সব সময়ই কম খেতে হবে।এ ক্ষেত্রে রোগী যদি খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন করতে পারেন তাহলে অনেক ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা সম্ভাব। এ ছাড়া আমাদের কায়িক পরিশ্রম করার চেষ্টা করতে হবে।

%d bloggers like this: