সারা দেশ

প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শিক্ষিকা অভিযোগ প্রবাসীর

প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শিক্ষিকা অভিযোগ প্রবাসীর

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তাহেরা আক্তার (৩০)। তার বিরুদ্ধে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘ সাত বছরে আইফোন, মূল্যবান জিনিসপত্রসহ ৩০ লাখের বেশি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন নজরুল ইসলাম নামের এক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।

শুধু তাই নয়, সরকারি চাকরি থাকা অবস্থায় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে সিলেটের একটি কলেজে লেখাপড়া ও নিয়মবহির্ভূতভাবে দুটি পাসপোর্টও করেছেন তিনি।তাহেরা আক্তার তাহিরপুর উপজেলার রাছিনগর মাহমুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তিনি উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের পুরান বারুংকা গ্রামের বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নজরুল ইসলামের এক বন্ধুর মাধ্যমে পরিচয় হয় তাহেরা আক্তারের। সেই পরিচয় থেকে দুজনের সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। পরে বিয়ের প্রলোভনে দেখিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে মূল্যবান জিনিসপত্র ছাড়াও নজরুলের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়ে গড়ে তোলেন বিলাসবহুল বাড়ি। এ ছাড়া বড় দুই বোনের চাকরি ও বিয়ের জন্য আনেন আরও ১০ লাখ টাকা।

প্রবাসী নজরুলের কাছে যাওয়ার জন্য তার টাকায় আইইএলটিএস সম্পন্ন করেন তিনি।সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে পরিচয় দিয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই মেশিন রিডেবল (এমআরপি) পাসপোর্ট করেন তাহেরা আক্তার। যদি কারও মাধ্যমে সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থী কোটায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য তিনি নিজেকে শিক্ষার্থী পরিচয়ে ই-পাসপোর্টও করেন। তবে ওই প্রবাসীকে বিয়ে না করে সম্প্রতি সিলেটে আরেক যুবককে বিয়ে করেন তিনি।

এই যুবকের সঙ্গেও প্রেম ছিল তাহেরার।যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তাহেরা আমাকে ভালোবাসার অভিনয় করে বিয়ের প্রলোভন দিলে আমিও তাকে ভালোবেসে বিশ্বাস করে আইফোন, মূল্যবান জিনিসপত্রসহ ৩০ লক্ষাধিক টাকা দিয়েছি। সে তার মোবাইল ফোন থেকে আমাকে তার আপত্তিকর ছবি, ভিডিও দিয়েছে। অন্যদিকে একাধিক ছেলের সঙ্গেও সম্পর্ক গড়ে তোলে। সে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। যার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আমার কাছে আছে।’

তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে সে (তাহেরা) গোপনে বিয়েও করে। তার এমন আচরণে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। সে আমাকে এই বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে নারী নির্যাতনের মামলা দেবে বলে হুমকি দিচ্ছে।অভিযোগের বিষয়ে তাহেরা আক্তার বলেন, ‘নজরুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক যখন ছিল তখন আমাকে সে না চাইতেই হাতখরচ বাবদ টাকা পাঠাত। আমি তার কথা মতো আইইএলটিএস করতে চেষ্টা করেছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান শেখ বলেন, ‘সহকারী শিক্ষক তাহেরা আক্তার তথ্য গোপন করে দুটি পাসপোর্ট করার বিষয়টি বেআইনি। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর বিভিন্ন অভিযোগ জানতে পেরেছি। একটি অভিযোগ আমাদের শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারের কাছে আছে।

এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।তথ্য গোপন করে একাধিক পাসপোর্ট করার বিষয়ে জানতে সুনামগঞ্জ জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের অফিসিয়াল ফোন নম্বরে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।