22 February 2024 , 1:22:27 প্রিন্ট সংস্করণ
এটা শুরু হয়েছিল করোনা মহামারির পর থেকে। নাক ডাকার শব্দ এতটা অসহ্য লাগতো যে সিসিলিয়া কিছুতেই ঘুমাতে পারতেন না। তিনি তার সঙ্গীকে বারবার ধাক্কা দিয়ে জাগানোর চেষ্টা করতেন, যেন সঙ্গী নাক ডাকা বন্ধ করে। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হতো না।৩৫ বছর বয়সী সিসিলিয়া কিছুতেই এটা আর সহ্য করতে পারছিলেন না এবং তখন তারা যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেন যে তারা আর একসাথে ঘুমাবে না, এমনকি এক রুমেও না।
‘আমি আমার কাজে মনোযোগ দিতে পারতাম না।
সারাদিন ক্লান্ত বোধ করতাম। বড়জোর কয়েক রাতের জন্য এটা সহ্য করতে পারবেন। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে সহ্য করতে পারবেন না’, সিসিলিয়া তার লন্ডনের বাড়িতে বসে এ কথা বলেন। গত কয়েক বছর ধরে এই বাড়িতেই তার বসবাস।তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুব সহজ কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। এই সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে আমাদের হৃদয় চুরমার হয়ে গিয়েছিলো।
কিন্তু যখন আমরা অনুধাবন করলাম যে রাতে ঘুমাতে পারছি, তখন খুশি হয়েছি।সেই থেকে সিসিলিয়া এবং তার ৪৩ বছর বয়সী সঙ্গী ‘স্লিপ ডিভোর্স’ নামে ট্রেন্ডকে অনুসরণ করা শুরু করেন।যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকলিন হাসপাতালের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ স্টেফানি কলিয়ার জানান, স্লিপ ডিভোর্স হলো এমন একটা বিষয়, যেটি প্রাথমিকভাবে সাময়িক সময়ের জন্য করা হয়। কিন্তু যখন দম্পতিরা বুঝতে পারেন একা ঘুমালে তাদের ভালো ঘুম হয় তখন বিষয়টি আর সাময়িক থাকে না।তিনি বলেন, যে স্লিপ ডিভোর্সের সঙ্গে স্বাস্থ্যগত কারণ জড়িত।
‘এটি ঘটার কারণ—যারা নাক ডাকেন, ঘুমের মাঝে তারা পা নাড়ান। তাদের স্লিপ ওয়াকিং, অর্থাৎ ঘুমের ঘোরে হাঁটার অভ্যাস থাকতে পারে। অথবা, শারীরিক সমস্যার কারণে তারা ঘনঘন বাথরুমেও যেতে পারে। সুতরাং, তারা অনেক বেশি নড়াচড়া করে, গড়াগড়ি খায় এবং এটি তাদের সঙ্গীকে বিরক্ত করে।‘এটি এখন এমন একটি ট্রেন্ড যেটি নিশ্চিতভাবেই অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে’, তিনি যোগ করেন।
ওয়াই জেনারেশনের মধ্যে বাড়ছে স্লিপ ডিভোর্স
গত বছরের শেষের দিকে জনপ্রিয় মার্কিন অভিনেত্রী ক্যামেরন ডিয়াজ ‘লিপ্সটিক অন দ্য রিম পডকাস্ট’কে বলেন যে তিনি এবং তার স্বামী একই ঘরে ঘুমান না। ‘আমি মনে করি, আলাদা শয়নকক্ষে ঘুমানোর বিষয়টিকে আমাদের স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা উচিত’, যোগ করেন তিনি।
যদিও এই বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়ার ঝড় ওঠে এবং গণমাধ্যমেও নানা ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তবে হলিউড তারকার এই বিষয়টি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আমেরিকান একাডেমি অব স্লিপ মেডিসিনের ২০২৩ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি উত্তরদাতা জানিয়েছেন যে ভালোভাবে ঘুমানোর জন্য তারা মাঝেমধ্যে বা প্রায় প্রতিদিনিই সঙ্গী থেকে আলাদা রুমে ঘুমায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২৮ থেকে ৪২ বছর বয়সী (এরা মিলেনিয়াল বা ওয়াই জেনারেশন, এদের জন্ম ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সালের মাঝে) উত্তরদাতাদের ৪৩ শতাংশ জানিয়েছে যে তারা তাদের সঙ্গীর সঙ্গে ঘুমায় না।যাদের জন্ম ১৯৬৫ থেকে ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি, অর্থাৎ যারা জেনারেশন এক্সের মানুষ, তাদের ৩৩ শতাংশ; জেনারেশন জেড (১৯৯৭ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে যাদের জন্ম)-এর ২৮ শতাংশ এবং বেবি বুমার্সদের (১৯৪৬ এবং ১৯৬৪ সালের মাঝে যারা জন্মগ্রহণ করেছে) ২২ শতাংশও একই কথা জানান।
‘তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্লিপ ডিভোর্সের প্রবণতা বেশি কেনো এর কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে ধারণা করা যেতে পারে যে আলাদা ঘুমানোর বিষয়টিকে তারা ততটা অসম্মানজনক মনে করে না। এটি একটি সাংস্কৃতিক পরিবর্তন। তারা ভাবে: যদি আমি ভালো ঘুমাই, ভালো বোধ করি, তবে কেন নয়?’
আলাদা ঘুমানোর ট্রেন্ডটিকে এভাবেই ব্যাখ্যা করছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. কলিয়ার।তবে ঐতিহাসিকদের মতে, অতীতে দম্পতিদের কাছে আলাদা রুমে ঘুমানোটা খুব সাধারণ একটি বিষয় ছিল। কিন্তু ইতিহাসের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেই ধারণাতেও পরিবর্তন এসেছে।
কিছু কিছু ঐতিহাসিক বলেন যে ডাবল বিছানা (বৈবাহিক বিছানা) হলো একটি আধুনিক ধারণা এবং শিল্প যুগের বিকাশের সময় এই ধারণা বিস্তার লাভ করেছিলো। তখন মানুষকে জনবহুল এলাকায় বসবাস করতো।
এটা শুরু হয়েছিল করোনা মহামারির পর থেকে। নাক ডাকার শব্দ এতটা অসহ্য লাগতো যে সিসিলিয়া কিছুতেই ঘুমাতে পারতেন না।তিনি তার সঙ্গীকে বারবার ধাক্কা দিয়ে জাগানোর চেষ্টা করতেন, যেন সঙ্গী নাক ডাকা বন্ধ করে। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হতো না।৩৫ বছর বয়সী সিসিলিয়া কিছুতেই এটা আর সহ্য করতে পারছিলেন না এবং তখন তারা যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেন যে তারা আর একসাথে ঘুমাবে না, এমনকি এক রুমেও না।
‘আমি আমার কাজে মনোযোগ দিতে পারতাম না।
সারাদিন ক্লান্ত বোধ করতাম। বড়জোর কয়েক রাতের জন্য এটা সহ্য করতে পারবেন। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে সহ্য করতে পারবেন না’, সিসিলিয়া তার লন্ডনের বাড়িতে বসে এ কথা বলেন। গত কয়েক বছর ধরে এই বাড়িতেই তার বসবাস।
তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুব সহজ কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। এই সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে আমাদের হৃদয় চুরমার হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু যখন আমরা অনুধাবন করলাম যে রাতে ঘুমাতে পারছি, তখন খুশি হয়েছি।সেই থেকে সিসিলিয়া এবং তার ৪৩ বছর বয়সী সঙ্গী ‘স্লিপ ডিভোর্স’ নামে ট্রেন্ডকে অনুসরণ করা শুরু করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকলিন হাসপাতালের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ স্টেফানি কলিয়ার জানান, স্লিপ ডিভোর্স হলো এমন একটা বিষয়, যেটি প্রাথমিকভাবে সাময়িক সময়ের জন্য করা হয়। কিন্তু যখন দম্পতিরা বুঝতে পারেন একা ঘুমালে তাদের ভালো ঘুম হয় তখন বিষয়টি আর সাময়িক থাকে না।
তিনি বলেন, যে স্লিপ ডিভোর্সের সঙ্গে স্বাস্থ্যগত কারণ জড়িত।
‘এটি ঘটার কারণ—যারা নাক ডাকেন, ঘুমের মাঝে তারা পা নাড়ান। তাদের স্লিপ ওয়াকিং, অর্থাৎ ঘুমের ঘোরে হাঁটার অভ্যাস থাকতে পারে। অথবা, শারীরিক সমস্যার কারণে তারা ঘনঘন বাথরুমেও যেতে পারে। সুতরাং, তারা অনেক বেশি নড়াচড়া করে, গড়াগড়ি খায় এবং এটি তাদের সঙ্গীকে বিরক্ত করে।‘এটি এখন এমন একটি ট্রেন্ড যেটি নিশ্চিতভাবেই অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে’, তিনি যোগ করেন।
ওয়াই জেনারেশনের মধ্যে বাড়ছে স্লিপ ডিভোর্স
গত বছরের শেষের দিকে জনপ্রিয় মার্কিন অভিনেত্রী ক্যামেরন ডিয়াজ ‘লিপ্সটিক অন দ্য রিম পডকাস্ট’কে বলেন যে তিনি এবং তার স্বামী একই ঘরে ঘুমান না।‘আমি মনে করি, আলাদা শয়নকক্ষে ঘুমানোর বিষয়টিকে আমাদের স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা উচিত’, যোগ করেন তিনি।
যদিও এই বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়ার ঝড় ওঠে এবং গণমাধ্যমেও নানা ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তবে হলিউড তারকার এই বিষয়টি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।আমেরিকান একাডেমি অব স্লিপ মেডিসিনের ২০২৩ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি উত্তরদাতা জানিয়েছেন যে ভালোভাবে ঘুমানোর জন্য তারা মাঝেমধ্যে বা প্রায় প্রতিদিনিই সঙ্গী থেকে আলাদা রুমে ঘুমায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২৮ থেকে ৪২ বছর বয়সী (এরা মিলেনিয়াল বা ওয়াই জেনারেশন, এদের জন্ম ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সালের মাঝে) উত্তরদাতাদের ৪৩ শতাংশ জানিয়েছে যে তারা তাদের সঙ্গীর সঙ্গে ঘুমায় না।যাদের জন্ম ১৯৬৫ থেকে ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি, অর্থাৎ যারা জেনারেশন এক্সের মানুষ, তাদের ৩৩ শতাংশ; জেনারেশন জেড (১৯৯৭ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে যাদের জন্ম)-এর ২৮ শতাংশ এবং বেবি বুমার্সদের (১৯৪৬ এবং ১৯৬৪ সালের মাঝে যারা জন্মগ্রহণ করেছে) ২২ শতাংশও একই কথা জানান।
‘তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্লিপ ডিভোর্সের প্রবণতা বেশি কেনো এর কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে ধারণা করা যেতে পারে যে আলাদা ঘুমানোর বিষয়টিকে তারা ততটা অসম্মানজনক মনে করে না। এটি একটি সাংস্কৃতিক পরিবর্তন। তারা ভাবে: যদি আমি ভালো ঘুমাই, ভালো বোধ করি, তবে কেন নয়?’ আলাদা ঘুমানোর ট্রেন্ডটিকে এভাবেই ব্যাখ্যা করছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. কলিয়ার।
তবে ঐতিহাসিকদের মতে, অতীতে দম্পতিদের কাছে আলাদা রুমে ঘুমানোটা খুব সাধারণ একটি বিষয় ছিল। কিন্তু ইতিহাসের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেই ধারণাতেও পরিবর্তন এসেছে।কিছু কিছু ঐতিহাসিক বলেন যে ডাবল বিছানা (বৈবাহিক বিছানা) হলো একটি আধুনিক ধারণা এবং শিল্প যুগের বিকাশের সময় এই ধারণা বিস্তার লাভ করেছিলো। তখন মানুষকে জনবহুল এলাকায় বসবাস করতো।
উনিশ শতকের আগে বিবাহিত দম্পতিদের আলাদা ঘুমানোটা একটি সাধারণ বিষয় ছিল। ‘এবং আর্থসামাজিক অবস্থা যাদের বেশি ভালো ছিল, তাদের মাঝে এটি তত বেশি সাধারণ বিষয় ছিল। রাজপরিবারের সদস্যরা কীভাবে ঘুমাতো, সেটি লক্ষ্য করলেই এটা বোঝা যাবে’, চিলির ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল স্কুলের সোমনোলজিস্ট (ঘুম বিশেষজ্ঞ) পাবলো ব্রকম্যান বলেন।
আলাদা ঘুমানোর সুবিধা কী কী
বিশেষজ্ঞরা একটা বিষয়ে একমত যে যেসব দম্পতি আলাদা রুমে ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নেন, তাদের জন্য কিছু সুবিধা আছে।ড. কলিয়ার বলেন, ‘সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো যে এতে করে তারা একটা নিয়মিত এবং গভীর ঘুমের অভ্যাস গড়তে পারে। ভালো ঘুম সামগ্রিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।
‘যদি কোনো ব্যক্তি ঘুমাতে না পারে, এটা তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা থেকে শুরু করে শরীরের অন্যান্য কার্যকারিতাকে ব্যহত করতে পারে। ঘুম না হলে আপনি দ্রুত রেগে যেতে পারেন এবং সেই সঙ্গে অধৈর্যও হয়ে পড়তে পারেন।
এমনকি, আপনার মাঝে এক ধরনের হতাশাও জন্ম নিতে পারে।’ তিনি যোগ করেন।এই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন যে স্লিপ ডিভোর্স একটি সুস্থ সম্পর্ক রক্ষায় সহায়ক হতে পারে।‘আমরা জানি, যে দম্পতিরা যখন পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে পারেন না, তখন তারা তর্কে জড়িয়ে পড়তে পারেন, খিটখিটে হয়ে যেতে পারেন এবং সহানুভূতি হারাতে পারেন’, তিনি বলেন।
কিছু মানুষ আছে, যাদের একাকী ঘুমালে নিয়মিত এবং গভীর ঘুম হয়।পালমোনোলজিস্ট এবং এএএসএমের মুখপাত্র সীমা খোসলা এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন।‘আমরা জানি, ঘুম না হলে আপনার মেজাজ খারাপ হতে পারে। যারা ভালোভাবে ঘুমাতে পারে না, সঙ্গীর সঙ্গে সাথে তর্কে জড়ানোর সম্ভাবনা তাদের বেশি থাকে। কেউ আপনার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, তার প্রতি আপনার বিরক্তি জন্মাতে পারে এবং এটি সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’
‘রাতে ভালো ঘুম হওয়া শরীরের সুস্থতা ও খুশি থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই, কিছু দম্পতি নিজেদের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য আলাদা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই’, তিনি যোগ করেন।সিসিলিয়ার মনে করেন, তার বর্তমান সঙ্গী থেকে আলদা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত তার জীবনকে বদলে দিয়েছে।
‘ভালোভাবে ঘুমাতে পারা, বা বিছানায় অনেকখানি জায়গা পাওয়া, অন্যকে বিরক্ত না করে বিছানায় পাশ বদল করা; এগুলো অনেক বেশি আরামদায়ক’, তিনি বলেন।‘সেই সঙ্গে আপনার সঙ্গীর সাথে সাথে আপনাকেও জেগে উঠতে হবে না। আপনি যখন চান, বা যখন আপনার প্রয়োজন, আপনি ঠিক তখনই ঘুম থেকে উঠতে পারবেন।’
স্লিপ ডিভোর্সের অসুবিধাসমূহ
এর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো, আলাদা ঘুমাতে হলে একটি অতিরিক্ত বিছানা এবং রুম দরকার। কিন্তু অনেক দম্পতির জন্য এটার বন্দোবস্ত করা সম্ভব না।এমনকি, এমন সিদ্ধান্তের কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অনেক দম্পতিই তাদের মধ্যকার ইন্টিমেসি, অর্থাৎ পারস্পরিক সংস্পর্শ হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা করেন।
‘কোথাও একটা গিয়ে আমার মনে হচ্ছে যে আমার সাথে আমার সঙ্গীর যে সম্পর্ক বা সংযোগ, সেখানে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে’, সিসিলিয়া স্বীকার করেন।‘এতে সম্পর্ক, সান্নিধ্য বা পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু এটা ততটা গুরুতর কোনও সমস্যা না। আমার মনে হয়, অসুবিধার চেয়ে সুবিধার পরিমাণ অনেক বেশি’, তিনি যোগ করেন।
ডা. কলিয়ার ব্যাখ্যা করেন যে যারা পূর্ণ সময় ধরে কাজ করে, তারা শুধুমাত্র ঘুমানোর সময়ই তাদের সঙ্গীদের সংস্পর্শে আসেন।‘সুতরাং, এর অন্যতম সমাধান হলো নিজেদের সংস্পর্শে আসার সময়টাকে আলোচনা করে নেয়া।
একসঙ্গে ঘুমানো অনেকের কাছে ‘ড্রিম বন্ড’
ঘুম বিশেষজ্ঞ ড. ব্রকম্যান যদিও বলেন, ‘স্লিপ ডিভোর্স’ সব দম্পতির জন্য কার্যকর না।“একসঙ্গে ঘুমানোর বেশ কিছু জৈবিক উপকারিতা রয়েছে। অনেকের কাছে এই বন্ধন স্বপ্নে তৈরি হয়। উদাহরণস্বরূপ, একজন মা এবং তার সন্তানের মাঝে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় এই বন্ধন তৈরি হয়। মা এবং শিশুর ঘুমের সময়ও একই থাকে, তখন তারা দু’জনেই বিশ্রাম নেয়।
‘গবেষণায় দেখা গেছে, এমন অনেক দম্পতি আছেন, যারা বছরের পর বছর একসাথে ঘুমাচ্ছেন এবং তারা পারস্পরিক সংস্পর্শে আসার পর গভীরভাবে ঘুমাতে পারেন’, বলেন তিনি।কোনো দম্পতি স্লিপ ডিভোর্স থেকে বিরত থাকতে চাইলে তাদেরকে কিছু বিষয় অনুসরণ করার সুপারিশ করেন বিশেষজ্ঞরা।. কলিয়ার বলেন, ‘যদি একজন চায় এবং অপরজন না চায়, তখন এটি বিরক্তির কারণ হতে পারে।’
‘অনেক মানুষ আছেন, যারা একা ঘুমাতে চান না। একাকী ঘুমালে তাদের খারাপ লাগে। তাই, দম্পতিদের নিজেদের বিষয়ে সমানভাবে ভাবতে হবে। এমন একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যেটিতে দু’জনেই রাজি।ড. ব্রকম্যানও বিষয়টিতে একমত পোষণ করেন। ‘নাক ডাকার সমস্যা, ঘুমের মাঝে হাঁটা বা পা নাচানোর অভ্যাস থাকলেও এটা তাদের জন্য কঠিন হতে পারে। কারণ কিছু মানুষ আছে, যারা ভিন্ন বিছানায় ঘুমাতে পছন্দ করে না। সাধারণত, পুরুষরা এটি করতে অনিচ্ছুক’, তিনি বলেন।
কিন্তু গবেষণা এটাই নির্দেশ করছে যে স্লিপ ডিভোর্সের হার ঊর্ধ্বগতিতে। বিশেষ করে, কিছু দেশে।ক্তরাজ্যের ন্যাশনাল বেড ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালেও যেসব ব্রিটিশ দম্পতি একসাথে ঘুমাতো, তাদের প্রতি ছয়জনের মধ্যে একজন, অর্থাৎ ১৫ শতাংশ দম্পতি এখন আলাদা ঘুমায়। শুধু তাই নয়, তাদের প্রতি ১০ জনের নয় জন, অর্থাৎ ৮৯ শতাংশ মানুষ পৃথক রুমে ঘুমায়।
অথচ ২০০৯ সালে দ্য স্লিপ কাউন্সিলের একটি জরিপে দেখা গেছে যে ১০ জনের মধ্যে একজনেরও (সাত শতাংশ) কম দম্পতির আলাদা বিছানা রয়েছে। ন্যাশনাল বেড ফেডারেশন বলছে, গত এক দশকে আলাদা ঘুমানোর হার বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।সুতরাং, কে কোথায় ঘুমায় এমন প্রশ্ন সামনে আসলে দেখা যায় সম্পর্কে থাকা অনেক মানুষই তাদের রাতের ভালো ঘুমকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন।
‘এবং আর্থসামাজিক অবস্থা যাদের বেশি ভালো ছিল, তাদের মাঝে এটি তত বেশি সাধারণ বিষয় ছিল। রাজপরিবারের সদস্যরা কীভাবে ঘুমাতো, সেটি লক্ষ্য করলেই এটা বোঝা যাবে’, চিলির ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল স্কুলের সোমনোলজিস্ট (ঘুম বিশেষজ্ঞ) পাবলো ব্রকম্যান বলেন।
আলাদা ঘুমানোর সুবিধা কী কী
বিশেষজ্ঞরা একটা বিষয়ে একমত যে যেসব দম্পতি আলাদা রুমে ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নেন, তাদের জন্য কিছু সুবিধা আছে।
ড. কলিয়ার বলেন, ‘সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো যে এতে করে তারা একটা নিয়মিত এবং গভীর ঘুমের অভ্যাস গড়তে পারে। ভালো ঘুম সামগ্রিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।
‘যদি কোনো ব্যক্তি ঘুমাতে না পারে, এটা তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা থেকে শুরু করে শরীরের অন্যান্য কার্যকারিতাকে ব্যহত করতে পারে। ঘুম না হলে আপনি দ্রুত রেগে যেতে পারেন এবং সেই সঙ্গে অধৈর্যও হয়ে পড়তে পারেন। এমনকি, আপনার মাঝে এক ধরনের হতাশাও জন্ম নিতে পারে।’ তিনি যোগ করেন।
এই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন যে স্লিপ ডিভোর্স একটি সুস্থ সম্পর্ক রক্ষায় সহায়ক হতে পারে।‘আমরা জানি, যে দম্পতিরা যখন পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে পারেন না, তখন তারা তর্কে জড়িয়ে পড়তে পারেন, খিটখিটে হয়ে যেতে পারেন এবং সহানুভূতি হারাতে পারেন’, তিনি বলেন।
কিছু মানুষ আছে, যাদের একাকী ঘুমালে নিয়মিত এবং গভীর ঘুম হয়।পালমোনোলজিস্ট এবং এএএসএমের মুখপাত্র সীমা খোসলা এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন।আমরা জানি, ঘুম না হলে আপনার মেজাজ খারাপ হতে পারে। যারা ভালোভাবে ঘুমাতে পারে না, সঙ্গীর সঙ্গে সাথে তর্কে জড়ানোর সম্ভাবনা তাদের বেশি থাকে। কেউ আপনার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, তার প্রতি আপনার বিরক্তি জন্মাতে পারে এবং এটি সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
‘রাতে ভালো ঘুম হওয়া শরীরের সুস্থতা ও খুশি থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই, কিছু দম্পতি নিজেদের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য আলাদা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই’, তিনি যোগ করেন।সিসিলিয়ার মনে করেন, তার বর্তমান সঙ্গী থেকে আলদা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত তার জীবনকে বদলে দিয়েছে।
‘ভালোভাবে ঘুমাতে পারা, বা বিছানায় অনেকখানি জায়গা পাওয়া, অন্যকে বিরক্ত না করে বিছানায় পাশ বদল করা; এগুলো অনেক বেশি আরামদায়ক’, তিনি বলেন।‘সেই সঙ্গে আপনার সঙ্গীর সাথে সাথে আপনাকেও জেগে উঠতে হবে না। আপনি যখন চান, বা যখন আপনার প্রয়োজন, আপনি ঠিক তখনই ঘুম থেকে উঠতে পারবেন।
স্লিপ ডিভোর্সের অসুবিধাসমূহ
এর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো, আলাদা ঘুমাতে হলে একটি অতিরিক্ত বিছানা এবং রুম দরকার। কিন্তু অনেক দম্পতির জন্য এটার বন্দোবস্ত করা সম্ভব না।এমনকি, এমন সিদ্ধান্তের কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অনেক দম্পতিই তাদের মধ্যকার ইন্টিমেসি, অর্থাৎ পারস্পরিক সংস্পর্শ হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা করেন।
‘কোথাও একটা গিয়ে আমার মনে হচ্ছে যে আমার সাথে আমার সঙ্গীর যে সম্পর্ক বা সংযোগ, সেখানে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে’, সিসিলিয়া স্বীকার করেন।‘এতে সম্পর্ক, সান্নিধ্য বা পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু এটা ততটা গুরুতর কোনও সমস্যা না। আমার মনে হয়, অসুবিধার চেয়ে সুবিধার পরিমাণ অনেক বেশি’, তিনি যোগ করেন।
ডা. কলিয়ার ব্যাখ্যা করেন যে যারা পূর্ণ সময় ধরে কাজ করে, তারা শুধুমাত্র ঘুমানোর সময়ই তাদের সঙ্গীদের সংস্পর্শে আসেন।‘সুতরাং, এর অন্যতম সমাধান হলো নিজেদের সংস্পর্শে আসার সময়টাকে আলোচনা করে নেয়া।
একসঙ্গে ঘুমানো অনেকের কাছে ‘ড্রিম বন্ড’
ঘুম বিশেষজ্ঞ ড. ব্রকম্যান যদিও বলেন, ‘স্লিপ ডিভোর্স’ সব দম্পতির জন্য কার্যকর না।“একসঙ্গে ঘুমানোর বেশ কিছু জৈবিক উপকারিতা রয়েছে। অনেকের কাছে এই বন্ধন স্বপ্নে তৈরি হয়। উদাহরণস্বরূপ, একজন মা এবং তার সন্তানের মাঝে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় এই বন্ধন তৈরি হয়। মা এবং শিশুর ঘুমের সময়ও একই থাকে, তখন তারা দু’জনেই বিশ্রাম নেয়।
‘গবেষণায় দেখা গেছে, এমন অনেক দম্পতি আছেন, যারা বছরের পর বছর একসাথে ঘুমাচ্ছেন এবং তারা পারস্পরিক সংস্পর্শে আসার পর গভীরভাবে ঘুমাতে পারেন’, বলেন তিনি।কোনো দম্পতি স্লিপ ডিভোর্স থেকে বিরত থাকতে চাইলে তাদেরকে কিছু বিষয় অনুসরণ করার সুপারিশ করেন বিশেষজ্ঞরা।ড. কলিয়ার বলেন, ‘যদি একজন চায় এবং অপরজন না চায়, তখন এটি বিরক্তির কারণ হতে পারে।’
‘অনেক মানুষ আছেন, যারা একা ঘুমাতে চান না। একাকী ঘুমালে তাদের খারাপ লাগে। তাই, দম্পতিদের নিজেদের বিষয়ে সমানভাবে ভাবতে হবে। এমন একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যেটিতে দু’জনেই রাজি।ড. ব্রকম্যানও বিষয়টিতে একমত পোষণ করেন। ‘নাক ডাকার সমস্যা, ঘুমের মাঝে হাঁটা বা পা নাচানোর অভ্যাস থাকলেও এটা তাদের জন্য কঠিন হতে পারে। কারণ কিছু মানুষ আছে, যারা ভিন্ন বিছানায় ঘুমাতে পছন্দ করে না। সাধারণত, পুরুষরা এটি করতে অনিচ্ছুক’, তিনি বলেন।
কিন্তু গবেষণা এটাই নির্দেশ করছে যে স্লিপ ডিভোর্সের হার ঊর্ধ্বগতিতে। বিশেষ করে, কিছু দেশে।যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল বেড ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালেও যেসব ব্রিটিশ দম্পতি একসাথে ঘুমাতো, তাদের প্রতি ছয়জনের মধ্যে একজন, অর্থাৎ ১৫ শতাংশ দম্পতি এখন আলাদা ঘুমায়। শুধু তাই নয়, তাদের প্রতি ১০ জনের নয় জন, অর্থাৎ ৮৯ শতাংশ মানুষ পৃথক রুমে ঘুমায়।
অথচ ২০০৯ সালে দ্য স্লিপ কাউন্সিলের একটি জরিপে দেখা গেছে যে ১০ জনের মধ্যে একজনেরও (সাত শতাংশ) কম দম্পতির আলাদা বিছানা রয়েছে। ন্যাশনাল বেড ফেডারেশন বলছে, গত এক দশকে আলাদা ঘুমানোর হার বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।সুতরাং, কে কোথায় ঘুমায় এমন প্রশ্ন সামনে আসলে দেখা যায় সম্পর্কে থাকা অনেক মানুষই তাদের রাতের ভালো ঘুমকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন।