ভিন্ন স্বাদের খবর

প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে স্বর্ণের ডিম বিস্মিত বিজ্ঞানীরা

রুপকথার স্বর্ণের ডিম যেন বাস্তবে ধরা দিল। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে দেখা মিললো ‘সোনার ডিম’র! প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে বিজ্ঞানীরা এমন এক বস্তু আবিষ্কার করেছেন, যা দেখতে অনেকটাই স্বর্ণের ডিমের মতো। গত সপ্তাহে মহাসহারেরর আলাস্কান তলদেশে এই বস্তুর সন্ধান পান গবেষকরা। কিন্তু সাগরের অতলে কোথা থেকে এল ওই বস্তু? সোনালি রঙের অদ্ভূত দর্শন জিনিসটা আসলে কী? এই নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, প্রশান্ত মহাসাগরের ব্যাপ্তি, গভীরতা, বিজ্ঞানীদের বার বার আকৃষ্ট করে। অন্য চার মহাসাগরের চেয়ে এর আকারই সবচেয়ে বড়। তাই বারবার এর বুকেই লুকিয়ে থাকা রহস্যের সন্ধানে ঝাঁপ দেন দুঃসাহসিক অভিযাত্রীরা। গত মাসে তেমনই এক দল অভিযাত্রী গভীর সমুদ্রে অজানার অণ্বেষণের জন্য প্রশান্ত মহাসাগরকে বেছে নিয়েছিলেন। তারা এমন এক বস্তু আবিষ্কার করেছেন, যা এর আগে কেউ কখনও দেখেননি।

জানা গেছে, আমেরিকার ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নোয়া)-এর একদল অভিযাত্রীকে প্রশান্ত মহাসাগরে অনুসন্ধানের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল, আলাস্কা উপসাগরের গভীরতা সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া এবং সেখানে লুকিয়ে থাকা রহস্যের সন্ধান। সমুদ্রে কোরাল এবং স্পঞ্জের বসবাস এবং আগ্নেয়গিরির উপস্থিতি নিয়েও কাজ করছেন ওই বিজ্ঞানীরা।

আলাস্কা উপকূল থেকে তাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ২৪ দিনের এই অভিযানে সমুদ্রের চার মাইল পর্যন্ত গভীরে পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। গত ৩০ অগস্ট, আলাস্কার দক্ষিণ উপকূল থেকে প্রায় ৪০০ কিমি দূরে সমুদ্রের নীচে ওই রহস্যময় সোনালি ‘ডিম’ খুঁজে পান অভিযাত্রীরা। এই অভিযানের সরাসরি সম্প্রচার চলছিল। অভিযাত্রীরা জানিয়েছেন, ডিম্বাকার ওই বস্তুর একটি অংশে একটি মাত্র ফুটো দেখা গিয়েছে। তা থেকেই তাদের ধারণা হয়েছে, এটি অচেনা কোনও সামুদ্রিক প্রাণী হতে পারে। বাইরে থেকে যার শক্ত খোলস দেখা যাচ্ছে।

এদিকে সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের রিপোর্ট অনুযায়ী, সমুদ্রের এই রহস্যময় বস্তুটি কী, তা জানার জন্য ইতিমধ্যে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। ‘ডিম’টির বিশ্লেষণও করে দেখা হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, অভিযাত্রীদের ডুবোযানের আলো প্রতিফলিত হওয়ার কারণে বস্তুটিকে সোনালি রঙের দেখাচ্ছিল। অন্য বিভিন্ন ছবি খুঁটিয়ে দেখে বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত, বস্তুর আসলে হলদে-বাদামি রঙের।

তবে প্রাথমিক ভাবে পর্যবেক্ষণের পর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ডিম্বাকার বস্তুটি কোনও ত্বকের টিস্যুর মতো পদার্থ দিয়ে তৈরি। অন্তত বাইরে থেকে দেখে তা-ই মনে হচ্ছে। ডিম্বাকার বস্তুটির ব্যাস চার ইঞ্চি। চেনা কোনও প্রাণীর শ্রেণিগত বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে তার মিল পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে বলছেন, নতুন প্রাণী আবিষ্কৃত হয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরে।

ইতোমধ্যে বস্তুটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় উঠেছে। কেউ কেউ একে ‘এলিয়েন’ বলেও আখ্যা দিচ্ছেন। তবে এখনও এর প্রকৃত পরিচয় জানাতে পারেনি বিজ্ঞানীরা। প্রশান্ত মহাসাগরে সোনালি ‘ডিম’-এর রহস্যের সমাধান করতে নোয়ার পক্ষ থেকে নানা মহলের বিজ্ঞানী এবং সামুদ্রিক প্রাণী বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। শীঘ্রই রহস্যের সমাধান হবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।