11 February 2025 , 7:15:34 প্রিন্ট সংস্করণ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সাথি খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার (১০ ফেব্র“য়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সদকী ইউনিয়নের করাতকান্দি গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার হয়। তিনি ওই গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক মো. সিমান্ত’র (৩০) স্ত্রী। এছাড়াও একই ইউনিয়নের মালিয়াট গ্রামের মনছুর শেখের মেয়ে। স্বজনদের অভিযোগ, পরকীয়া প্রেমের জেরে ঘাতক স্বামী সিমান্ত তাঁর স্ত্রী সাথি খাতুনকে রাতভর পিটিয়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্লেড দিয়ে কেটে হত্যা করেছে। পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়েছে। পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, প্রায় আট বছর আগে করাতকান্দি গ্রামের মতিয়ার শেখের ছেলে সিমান্তর সঙ্গে সাথি খাতুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। দাম্পত্ত জীবনে তাঁদের নাহিদ (৬) ও আফসানা (৪ মাস) নামের দুই সন্তান রয়েছে। তবুও প্রায় এক বছর পূর্বে সিমান্ত তাঁর খালাতো বোনের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। সমস্যার সমাধানে পারিবারিকভাবে একাধিকবার সালিসি বৈঠকও হয়েছে। প্রায় সাতদিন আগে পরকীয়া প্রেমিকাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্যে সিমান্তকে ৯০ হাজার টাকা দেন শ্বশুর মনছুর। তারপরও রোববার পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে সারাদিন ঘুরাফেরা করেন সিমান্ত। রাতে সাথি খাতুন তার স্বামী সিমান্তকে ঘুরাঘুরির বিষয় জানতে চান। তখন সিমান্ত তার স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থান কেটে হত্যা করেন। ঘটনা চাপা দিতে পরে সাথির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়েছে সিমান্তসহ শ^শুর বাড়ির লোকজন। সকাল ১১টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কুমারখালী থানা চত্বরে ভ্যানের ওপর রাখা হয়েছে সাথির প্যাকেট করা মরদেহ। ভ্যান ঘিরে স্বজনরা আহাজারি করছেন। এসময় সাথির শিশু ছেলে নাহিদ বলে, মাকে আমার বাবা রাত্রি লাঠি দিয়ে মারেছে। ব্লেড দিয়ে হাত-পাঁ কাটেছে। সাথির বড় ভাই সবুজ বলেন, খালাতো বোনের সঙ্গে সিমান্তর পরকীয়া প্রেম আছে। একাধিকবার সালিস হয়েছে এনিয়ে। গত সপ্তাহে ৯০ হাজার টাকাও দিছি মিটমাটের জন্য। তবুও রোববার পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে গিছিল। সে খবর জানতে গেলে সিমান্ত আমার বোনকে পিটিয়ে ও ব্লেড দিয়ে কেটে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়েছে। আমি অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। থানায় মামলা করব। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সিমান্তেরর বাড়িতে স্বজন ও উৎসুক জনতার ভিড়। ঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। তবে পালিয়েছেন সিমান্তসহ তার বাবা-মা। সেজন্য তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এ সময় সিমান্তর চাচি ডলি খাতুন বলেন, খালাতো বোনের সাথে প্রেম নিয়ে ঝামেলা চলছিল। তবে কিভাবে মারা গেছে জানিনা। ঘটনার পর সিমান্ত মা-বাবাসহ পালিয়ে গেছে। নিহত ব্যক্তির শরীরে একাধিক স্থানে আঘাতের ক্ষত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার উপ-পরিদর্শক বিপ্লব বিশ্বাস। তিনি জানান, খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে প্রকৃত ঘটনা পরে জানাবো যাবে।