এক্সক্লুসিভ

কুষ্টিয়া ষ্টেডিয়ামের নাম এখন ‘শহীদ আবরার ফাহাদ ষ্টেডিয়াম‘

মাহমুদ শরীফ/ কুষ্টিয়া ষ্টেডিয়ামের নাম এখন ‘শহীদ আবরার ফাহাদ ষ্টেডিয়াম‘। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ প্রকৌশলী বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী কুষ্টিয়ার কৃতিসন্তান শহীদ আবরার ফাহাদের নামে কুষ্টিয়া ষ্টেডিয়ামের নামকরন করা হলো। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের একটি সূত্র জানায়-কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল ও জাতীয় সংসদ ভবনের মাঠের নতুন নামকরণ করা হয়েছে। তবে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান জানান, এখন অফিসিয়ালি কিছু জানতে পারেনি।
কুষ্টিয়া ষ্টেডিয়াম আবরার ফাহাদের নামকরনে তাঁর পরিবারের সকলে খুশি। আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ জানান, আমরা আনুষ্ঠানিক কিছু জানতে পারেনি তবে ফেইসবুকের সুবাদে জানতে পেরেছি। অবশ্যই আমরা খুশি। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ক্রীড়া উপদেষ্টা ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আবরারের মা রোকেয়া খাতুন জানান, আমার সন্তানের নামে কুষ্টিয়া ষ্টেডিয়ামের নামকরনে আমরা খুশি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারত বিরোধী পোষ্ট করায় ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার প্রায় ৫ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয় ৫ আগষ্ট। ছাত্র-জনতার বিজয়ে কুষ্টিয়ার ১৬ জন শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো কয়েকশত। পরিবর্তনের এই সময়ে কুষ্টিয়াবাসীর দাবী ছিল কুষ্টিয়া জেলা ষ্টেডিয়ামের নাম শহীদ আবরার ফাহাদের নামে নামকরণ করা হোক। কুষ্টিয়াবাসীর এই দাবীর সমর্থনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফাহাদের নামে তার জেলার স্টেডিয়ামের নামকরণ করেছে এতে জেলার ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া সংগঠকসহ সর্বস্তরের মানুষ দারুন খুশি।


কুষ্টিয়া ষ্টেডিয়ামের নাম ছিল শেখ কামাল স্টেডিয়াম। এখন থেকে কুষ্টিয়া ষ্টেডিয়াম পরিচিতি পাবে ‘শহীদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম’ নামে। ১৪ নভেম্বর এই তথ্য নিশ্চিত করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তপক্ষ। কুষ্টিয়া ষ্টেডিয়াম বর্তমান নির্মানাধীন। খুলনা বিভাগের সর্ববৃহত ও আধুনিক সুবিধাদি নিয়ে এই ষ্টেডিয়ামের নির্মান কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। নির্মাণ কাজের শেষে আগামী বছরের প্রথম দিকেই ষ্টেডিয়ামটি খেলাধুলার জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নিকট সংশ্লিষ্ট ঠিকেদার প্রতিষ্ঠানটি বুঝিয়ে দেবেন বলে জানা যায়। ইতিমধ্যে ৮৫% নির্মাণ কাজের অগ্রগতি হয়েছে বলে জেলা ক্রীড়া অফিসার তানভীর রহমান জানান।
আবরার ফাহাদ ১৯৯৮ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে। আবরার কুষ্টিয়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং পরে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। নটরডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা শেষে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ আবরার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। পড়াশোনা চলাকালীন সময়েই তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।