ধর্ম

যে দোয়া পড়বেন সন্তানের সংশোধনের জন্য

সন্তানদের জন্য মা-বাবারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করে থাকেন। তারা আমাদের জীবনে অনেক মূল্যবান। আমাদের জন্য মা-বাবারা অনেক কষ্ট সহ্য করে থাকেন। আমরা অনেক সময় তাদের সঙ্গে বেয়াদবি করে থাকি। যা কিনা অন্যায়। প্রায় সব মা-বাবাই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন যখন তাদের সন্তান কথা শুনতে চায় না।

এমন পরিস্থিতিতে পিতামাতা তাদের মেজাজ হারাতে পারে। সন্তান অবাধ্য এই অভিযোগ অনেক বাবা-মা করে থাকেন। অবাধ্য ছেলে বা মেয়ের দৌরাত্ম্য নিয়ে আত্মীয় বা বন্ধু মহলে আলোচনাও কম হয় না। ইসলামে মা-বাবার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মা-বাবার অবাধ্য হলে ইহকাল ও পরকালে বহু ক্ষতি হয়।

মা-বাবার অবাধ্য ব্যক্তির রিজিকে সংকট দেখা দেয় এবং তার জীবনে কোনো বরকত হয় না। আবু হুরায়রা ও আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি রিজিকে প্রশস্ততা কামনা করে ও বয়সে বরকত চায়, তার উচিত সে যেন নিজ আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করে। (বুখারি, হাদিস : ২০৬৭; মুসলিম, হাদিস : ২৫৫৭)

কোনো সন্তান তার মা-বাবার অবাধ্য হওয়ার কারণে মা-বাবা তাকে কোনো বদদোয়া বা অভিশাপ দিলে তা তার সমূহ অকল্যাণ বয়ে আনবে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তিনটি দোয়া কখনো নামঞ্জুর করা হয় না—মা-বাবার দোয়া সন্তানের জন্য, রোজাদারের দোয়া ও মুসাফিরের দোয়া।’ (সাহিহুল জামি : ৩/৬৩)

সন্তান অবাধ্য কিংবা উচ্ছৃঙ্খল হলেও সেটা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়েই অভিভাবকদের উচিত তাদের বাচ্চাদের সামলানো। মনে রাখতে হবে, শিশুরা দুষ্টুমি করবে এটাই স্বাভাবিক। এ জন্য সন্তান কথা না শুনলে বুঝিয়ে-শুনিয়ে তাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি একজন মুমিন হিসেবে সবসময় আল্লাহতায়ালার কাছে দোয়াও করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত পরীক্ষিত। সেটি হলো-

رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَىٰ وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَ اَصْـلِـحْ لِـىْ فِـي ذُرِّيَّـتِـىْ ج اِنِّـىْ تُـبْـتُ اِلَـيْـكَ وَاِنِّـىْ مِـنَ الْـمُـسْـلِـمِـيْـنَ

উচ্চারণ: রাব্বি আওঝি‘নীআন আশকুরা নি‘মাতাকাল্লাতীআন‘আমতা ‘আলাইইয়া ওয়া ‘আলা-ওয়া-লিদাইইয়া ওয়া আন আ‘মালা সা-লিহান তারদা-হু ওয়া আছলিহ্ লী ফী যুররিয়্যাতি; ইন্নী তুব্‌তু ইলাইকা ওয়া ইন্নী মিনাল্ মুসলিমীন।

অর্থ: হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এরূপ ভাগ্য দান কর, যাতে আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকাজ করি। আমার জন্য আমার সন্তানদের সৎকর্মপরায়ণ করে দিন; আমি অবশ্যই আপনার নিকট তওবা করছি এবং নিশ্চয়ই আমি অনুগত বান্দাদের একজন।

আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম সমূহের মধ্যে (اَلشَّهِيْدُ) ‘আশ-শাহিদু’ একটি। এ পবিত্র নামের আমলে অবাধ্য সন্তান অনুগত হয়ে যায়। যদি কোনো ব্যক্তির সন্তান ছেলে হোক আর মেয়ে হোক পিতামাতার অবাধ্য বা অসৎ হয়ে যায়; তবে সে (পিতামাতা) যেন নিজের হাত সন্তানের কপালে রেখে এবং সন্তানের মুখমণ্ডলকে আসমানের দিকে ফিরিয়ে আল্লাহ তাআলার পবিত্র গুণবাচক নাম (اَلشَّهِيْدُ) ‘আশ-শাহিদু’ ২১ বার পাঠ করে।

আল্লাহর ইচ্ছায় ওই অবাধ্য বা অসৎ সন্তান (ছেলে হোক আর মেয়ে) সে সৎ ও আনুগত্যশীল হয়ে যাবে।