বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

স্মার্টফোন কিনতে গিয়ে ঘটে গেছে যত অদ্ভুত ঘটনা

ইনস্টাগ্রামে রিলস বানাতে দরকার আইফোন, আর সেই আইফোনের টাকা জোগাড় করতে নিজের ৮ মাসের শিশুকে বিক্রি করে দিল ভারতের এক দম্পতি। এই ঘটনায় শিশুটির মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ এবং বাবা পলাতক রয়েছেন। এমনই এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে ভারতে। ফোন কেনা নিয়ে পৃথিবীতে আরও বহু ধরনের পাগলামি রয়েছে। এমন সব অদ্ভুত ঘটনা নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন। ইন্টারনেট থেকে খবর সংগ্রহ করে বিস্তারিত জানাচ্ছেন আজহারুল ইসলাম অভি

প্রেমিকাকে মোবাইল উপহার দিতে দুঃসাহসিক চুরি করেও শেষ রক্ষা হলো না ২৭ বছর বয়সী যুবক আবদুল মুনাফের। উপহার হিসেবে প্রেমিকাকে মোবাইল ফোন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরই শোরুম থেকে দামি মোবাইল হাতানোর ছক কষতে থাকে বিহারের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, কীভাবে শোরুম থেকে মোবাইল ফোন হাতাতে হয় সে বিষয়ে ইন্টারনেট সার্ফও করে সে। এবং সেই অনুযায়ী পরিকল্পনাও তৈরি করে। পরিকল্পনামাফিক একদিন বেঙ্গালুরুর জেপি নগরের একটি মোবাইল শোরুমে ঢোকে সে। আর তার পরই শোরুমের সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে ঢুকে পড়ে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ওয়াশ রুমে।

মুনাফ যে সেখানে লুকিয়ে রয়েছে, খেয়ালই করেননি মোবাইল শোরুমের কর্মচারীরা। রাতে শোরুম বন্ধ করে কর্মীরা বাড়িতে চলে যায়। শোরুমের দরজা বন্ধ হতেই মুনাফের মোবাইল অপারেশন চালু হয়। সাতটি দামি মোবাইল ফোন নিয়ে ফের ওয়াশরুমে ফিরে আসে এবং পরের দিন শোরুমের দরজা খোলার অপেক্ষায় থাকে সে। পরের দিন যথাসময়ে শোরুম খোলা হলে কর্মীরা যখন কাজে ব্যস্ত ছিলেন, তখন সেই ফাঁকে শোরুম থেকে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্ত। পরে সিসিটভির ফুটেজ দেখে পুলিশ তারে ধরে।

ফোনের মডেল পছন্দ না হওয়ায় একের পর এক চুরি!
হাবরায় একবার কাপড়ের দোকান, মোবাইলের দোকান থেকে কয়েকটি মোবাইল চুরি হয়েছিল। এরপর হাবরা শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকার একটি মোবাইলের দোকানেও একটি মোবাইল চুরি হয়েছিল। জানা গেছে, যে পর পর মোবাইল চুরি করছিল, সে অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়া। দোকানের মালিক আগে থেকে চিনতেন ছেলেটিকে। বছর দেড়েক আগেও সে একই দোকানে মোবাইল চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে। সে যাত্রায় অবশ্য দোকান মালিক থানা-পুলিশ করেননি। বাচ্চা ছেলে দেখে উল্টো তাকে ভালো খাইয়ে-দাইয়ে বাড়ি পাঠিয়েছিলেন। ছেলেটির এখনো গোঁফের রেখাও ওঠেনি। বয়স মেরেকেটে পনেরো।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, এখন পর্যন্ত ২৫টি মোবাইল সে চুরি করেছে। মোবাইলের দিকেই নজর কেন তার, জানতে চেয়েছিল পুলিশ। ছেলেটির উত্তর বিস্মিত করেছে তদন্তকারীদের। ওই নাবালকের কথায়, ‘বাবার কাছে একটি ভালো মোবাইল চেয়েছিলাম। বাবা বলেছিল, টাকা নেই। তাই দামি মোবাইলের খোঁজে চুরি করা শুরু করি।’ কিন্তু তা হলে একটা মোবাইল হাতিয়েই থামতে পারত শখ পূরণের বিপজ্জনক এই অভ্যাস। ২৫টা মোবাইল চুরির দরকার কী ছিল? ছেলেটি জানিয়েছে, কোনো মডেলই পছন্দ হচ্ছিল না তার। সেগুলো বিক্রি করে দিত। ফের আরও দামি মোবাইলের খোঁজ শুরু করত।

আইফোনের জন্য কিডনি বেচেছিলেন ওয়াং
বাজারে নতুন আইফোন এলেই ইন্টারনেটে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সেটি হলো ট্রল আর মিম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় কিডনি বিক্রি করে আইফোন কেনার ট্রল। তবে কিডনি বেচা কৌতুক মোটেই নতুন নয়। তবে ২০১১ সালে এক চীনা কিশোর আইফোন কেনার জন্য সত্যি সত্যি নিজের কিডনি বেচে দিয়েছিলেন। ওয়াং সাংকুন নামের সে কিশোরের বয়স এখন ২৫ কী ২৬ বছর। ভাইস সাময়িকীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে ওয়াংয়ের বয়স ছিল ১৭। বাড়ি চীনের আনহুই প্রদেশে। একদিন তার কী মনে হলো, প্রায় ৩ হাজার ২৭৩ ডলারের বিনিময়ে ডানপাশের কিডনিটি বিক্রি করে দিলেন।

সে টাকা দিয়ে একটি ‘আইপ্যাড ২’ মডেলের ট্যাব এবং একটি ‘আইফোন ৪’ মডেলের স্মার্টফোন কিনেছিলেন তিনি। ওই সময় ওয়াং বলেছিলেন, ‘দুটি কিডনি দিয়ে কী হবে? একটিই যথেষ্ট।’ একটি কিডনি নিয়ে এখন বেশ বিপদেই আছেন ওয়াং সাংকুন। অ্যাপলের তৈরি ডিভাইসের প্রতি তীব্র আকর্ষণ ছিল ওয়াংয়ের। এক অনলাইন চ্যাটরুমে মানব-অঙ্গ কালোবাজারিদের কাছ থেকে একটি বার্তা পান তিনি। বার্তায় বলা হয়েছিল, তিনি চাইলে শরীরের অঙ্গ বেচে তিন হাজার ডলারেরও বেশি আয় করতে পারেন। সে সময় আইফোন হাতে তোলার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন ওয়াং। অফারটি পছন্দ হয়েছিল তার। আইপ্যাড ২ ও আইফোন ৪ মডেলের এই দুই গ্যাজেটের জন্যই কিডনি বেচেছিলেন ওয়াং।

প্রেমিকাকে আইফোন দিতে সোনু সুদের সাহায্য কামনা
করোনা ভাইরাস চলাকালীন ভারতের মানুষের কাছে দেবতার মতো ধরা দিয়েছেন অভিনেতা সোনু সুদ। কারও খাবার সংস্থান, কাউকে বাড়ি করে দেওয়া, কাউকে বিদেশ থেকে দেশে এনে দেওয়া, বেকার অসহায়দের কর্মসংস্থান, দরিদ্রদের চিকিৎসার খরচ সামলানো, দরিদ্র শিক্ষার্থীর পড়াশোনার খরচ সামলানো। একসঙ্গে কত কিছুই না করেছেন। আর এর ফলেই তিনি হয়ে উঠেছেন সবার কাছে সত্যিকারের নায়ক। ভারতবাসীও সোনু সুদকে সম্মান জানাতে একদম ভুল করেনি। তার নামে মন্দির হয়েছে। তাকে সেই মন্দিরে দেবতার আসনে বসিয়ে পূজাও দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, লকডাউনের পর থেকে তাকে ‘মসীহ’ বা মর্যাদাবান বলেও ডাকা হচ্ছে।

অনেকেই তার কাছে প্রতিনিয়ত নানা রকম সাহায্য চান। মাঝে মাঝে অদ্ভুত কিছু দাবি-দাওয়াও আসে। যেমন একবার একজন বলে বসলেন, তাকে বিয়ে করিয়ে দিতে। তেমনি এবার একজন এ অভিনেতার কাছে আবদার করে বসেছেন, তার প্রেমিকার জন্য আইফোন কিনে দিতে। প্রমিকাকে আইফোন গিফ্ট করতে তিনি চাইলেন সোনুর সাহায্য। তাকে অবশ্য নিরাশ করেননি সোনু। উত্তর দিয়েছেন। সোনু সুদ বলেন, ‘যদি আইফোন দেওয়া হয়, তাহলে আপনার আর কিছু থাকবে না।’ এই উত্তরে বেশ মজা পয়েছেন ভক্তরা।

ডাকাতির টাকায় প্রেমিকাকে নতুন আইফোন
ডাকাতি করে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে প্রেমিকাকে আইফোন প্রো ম্যাক্স কিনে দেন এক যুবক। শুধু তাই নয়, শাশুড়িকে ফ্ল্যাট কিনতেও পাঠিয়েছেন অর্থ। কলকাতার হাওড়ায় দিনদুপুরে কোটি টাকা ডাকাতির ঘটনার তদন্তে নেমে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্যের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকের বাবা কাঁটাপুকুর মর্গের ইনচার্জ বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আরও কয়েকজনকে খুঁজছে পুলিশ। জানা গেছে, হাওড়ার বেলিলিয়াস রোডে ডাকাতি করে ১ কোটি টাকা নিয়ে পালায় ৩ ডাকাত। টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদের একজনকে প্রকাশ্যে বন্দুক দেখাতেও দেখা যায়। এই ঘটনার তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ডাকাতি করা হয়েছে রীতিমতো বরাত দিয়ে।

বরাত দিয়েছেন লোহার কারখানার মালিক সুনীল শর্মার পূর্বপরিচিতরাই। দেশটির রাজ্য পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, ননীগোপাল দাস, শিবরাম চট্টোপাধ্যায় ও বিশ্বজিত দাস নামে ৩ ব্যক্তি এই ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী। কিন্তু নিজেরা ডাকাতি করলে ধরা পড়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় কয়েকজন যুবককে ডাকাতির কাজ দেয় তারা। এর পর তিন ডাকাত কার্তিক, হেমন্ত ও ভিকিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদের মধ্যে ২ জন টাকার সন্ধান দিতে পারলেও ভিকি একটা বড় টাকার হিসাব দিতে পারেনি। জেরার মুখে সে স্বীকার করে, ডাকাতির টাকায় বার ডান্সার প্রেমিকাকে আইফোন প্রো ম্যাক্স কিনে দিয়েছে সে। সঙ্গে ফ্ল্যাট কেনার জন্য শাশুড়িকে উত্তরপ্রদেশে ৪ লাখ টাকা পাঠিয়েছে ওই যুবক।

স্মার্টফোন কিনতে রক্ত বিক্রি!
এমনটাই ভেবেছিল দুস্থ ঘরের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তার কথা শুনে সোমবার হইচই পড়ে যায় বালুরঘাট রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্রে। অনলাইনে এক ক্লিকে স্মার্টফোন অর্ডার করা হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু টাকা জোগাড় হবে কীভাবে! তখনই মাথায় আসে রক্ত বিক্রি করার কথা। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। সোজা রক্ত বিক্রি করতে চলে যায় সে! তার প্রস্তাব শুনে সোমবার হইচই পড়ে যায় বালুরঘাট রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্রে। কারণ ভারতে বহু আগেই রক্ত বিক্রি আইনত নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। কিশোরীর রক্ত বিক্রি করতে আসার কারণ শোনার পর চোখ আরও কপালে ওঠে উপস্থিত সবার। খবর পেয়ে নাবালিকাকে এসে নিয়ে যান চাইল্ডলাইনের কর্মীরা। তার বাড়িতে খবর দেওয়া হলে ছুটে আসেন বাবা। চাইল্ডলাইনের কর্মী ওই নাবালিকার কাউন্সেলিং করার পর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে তাকে অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন এলাকার বাসিন্দা সতেরো বছরের ওই ছাত্রী।

একটি সাধারণ মোবাইল ছিল তার। তা কিছুদিন আগে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় স্মার্টফোন কেনার ইচ্ছে হয়। রবিবার এক আত্মীয়ের মোবাইল থেকে অনলাইনে নিজের জন্য একটি স্মার্টফোন অর্ডার করে কিশোরী। দাম ৯ হাজার টাকা। ক্যাশ অন ডেলিভারি, অর্থাৎ পার্সেল পৌঁছলে হাতে হাতে দিতে হবে টাকা। এই সপ্তাহের মধ্যেই বাড়িতে পৌঁছে যাওয়ার কথা তার কাক্সিক্ষত জিনিসটি। কিন্তু নগদ টাকা আসবে কোথা থেকে! মা মানসিক রোগগ্রস্ত, তাই মাকে বলে লাভ নেই। বাবা সবজি বিক্রি করতে সকালে বেরিয়ে বিকালে বাড়িতে ফিরে আসেন। বাবাকেও এ নিয়ে কিছু বলতে পারেনি সে। টাকা জোগাড়ের উপায় ভাবতে বসে তার মনে হয়, রক্ত ‘দান’ নয়, বিক্রি করবে সে। নিজের শরীরের রক্তের বিনিময়ে মিলবে টাকা। দেরি না করে তাই সে সাতসকালে বাস ধরে বালুরঘাট রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্রে হাজির হয়। সরাসরি কেন্দ্রে ঢুকে বলে, ‘টাকার বিনিময়ে রক্ত দিতে এসেছি।’

স্মার্টফোন কিনতে গিয়ে ঘটে গেছে যত অদ্ভুত ঘটনা

একেই বলে আইফোন ম্যানিয়া। শুধু একটি আইফোনের জন্য কত কিছু ঘটে যাচ্ছে। এর আগে একজন আইফোন কেনার টাকা জোগাতে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন নিজের কিডনি। এবার প্রেমিকের কাছে আইফোন চেয়ে তা কিনে না দেওয়ায় ভরা বাজারে ন.গ্ন হলেন এক প্রেমিকা। ঘটনাটি ঘটেছে চীনে। প্রেমিকের কাছে প্রেমিকার আবদার ছিল সদ্য বাজারে আসা আইফোন কিনে দিতে হবে। কোনো কারণে না কিনে দেওয়ায় প্রকাশ্য রাস্তায় ন.গ্ন হলেন সেই প্রেমিকা। ঘটনাটি যখন ঘটছে সে সময় উপস্থিত অনেকেই মোবাইলে সে দৃশ্যে তুলে রাখেন। যথারীতি তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

আরও খবর

Sponsered content