বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

মহাবিশ্ব

আমরা বসবাস করি সৌরজগতের তৃতীয় গ্রহ পৃথিবীতে। গ্রহটি সাইজে তেমন আহামরি বড় কিছু নয়। সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতি আয়তনে পৃথিবীর চেয়ে ১৩শ’ গুণ বড়। পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব ১৪৮ মিলিয়ন কিলোমিটার। এই দূরত্ব থেকে পৃথিবীতে সূর্যের আলো আসতে সময় নেয় প্রায় সাড়ে আট মিনিট। সূর্য একটি মাঝারি সাইজের সাধারণ নক্ষত্র।

এর অবস্থান একটি স্পাইরাল গ্যালাক্সির অভ্যন্তরে। স্পাইরাল গ্যালাক্সিটির নাম মিল্কিওয়ে। এই গ্যালাক্সির ছোট একটি সর্পিল বাহুর ভেতর সূর্যের বসবাস। মিল্কিওয়ের এই বাহুটির নাম অরায়েন-সিগনাস আর্ম। এই বাহু থেকে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ২৬ হাজার আলোকবর্ষ। এই দূরত্ব থেকে সূর্য মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে।

মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে সূর্যের মতো ১০০ বিলিয়ন নক্ষত্র রয়েছে। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কাছাকাছি অবস্থানে আরো ৫৪ টি গ্যালাক্সি রয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এদের নাম দিয়েছেন লোকাল গ্রুপ। এর মধ্যে রয়েছে- অ্যান্ড্রোমিডা, ছোট এবং বড় ম্যাগেলেনিক ক্লাউড, ট্রাইঅ্যাঙ্গুলাম ইত্যাদি ছোট বড় নানা গ্যালাক্সি। এই লোকাল গ্রুপে মিল্কিওয়ের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী গ্যালাক্সি হলো অ্যান্ড্রোমিডা।

মিল্কিওয়ে থেকে অ্যান্ড্রোমিডার দূরত্ব ২.৫ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। লোকাল গ্রুপের অবস্থান হলো আরেকটি বড় গ্যালাক্সি গ্রুপের ভেতরে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন ভার্গো সুপার ক্লাস্টার। এই সুপার ক্লাস্টারে নিদেনপক্ষে ১০০ গ্যালাক্সি রয়েছে। মহাবিশ্বে এরকম অসংখ্য সুপার ক্লাস্টার গ্যালাক্সি আছে। দৃশ্যমান মহাবিশ্বে কতগুলো গ্যালাক্সি রয়েছে সেটি এখনো নিশ্চিত করে বলা যায় না।

বর্তমান সময়ে টেলিস্কোপ প্রযুক্তিতে অভাবনীয় উন্নতির ফলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্রতিবছরই নতুন নতুন গ্যালাক্সির সন্ধান পাচ্ছেন। আগে ধারণা করা হতো মহাবিশ্বে ১০০ থেকে ২০০ বিলিয়ন গ্যালাক্সি রয়েছে। বর্তমান যুগের বিজ্ঞানীরা হিসেব করে বের করেছেন আমাদের চেনা মহাবিশ্বের বিস্তৃতি ৯৩ বিলিয়ন আলোকবর্ষ। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, বিশাল এই মহাবিশ্বে দুই ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সির অস্তিত্ব রয়েছে।

%d bloggers like this: