জাতীয়

বাংলাদেশ থেকে আরও শ্রমিক নিতে আগ্রহী ইউরোপ

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, হাঙ্গেরিসহ আরও কয়েকটি দেশের জাতীয় নির্বাচনে দক্ষিণপন্থিরা জয়লাভ করেছে। ফলে ইইউর অভিবাসননীতি আরও বেশি রক্ষণশীল হবে এবং অবৈধ পথে অভিবাসন আরও কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বৈধ পথে শ্রমিক পাঠানোর পাশাপাশি অপ্রথাগত শ্রমিক বাজার যেমন পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতেও সম্ভাবনা খুঁজে দেখা দরকার।

ইউরোপ শ্রমিক নিতে আগ্রহী জানিয়ে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘ইউরোপে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বাড়ার কারণে শ্রমিক সংকট রয়েছে। তারা বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে শ্রমিক নিতে আগ্রহী। কিন্তু এর বিনিময়ে ওই দেশে যারা অবৈধ রয়েছেন, তাদের ফেরত নিতে হবে।অবৈধভাবে অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের ফেরত আনার জন্য ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের যে ব্যবস্থা রয়েছে (এসওপি), সেটি ভালো কাজ করছে।

এ কারণে বৈধ পথে শ্রমিক নেওয়ার যে মেকানিজম, ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রোগ্রাম, সেটিতে তারা বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে বলে তিনি জানান।সাবেক এই আমলা জানান, এসওপি ভালো কাজ করার ফলে নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য (দেশগুলো ইইউর সদস্য নয়) সঙ্গে বাংলাদেশ নতুন করে এসওপি সই করেছে। এখন সার্বিয়ার সঙ্গে বড় আকারে শ্রমিক অভিবাসন নিয়ে আলোচনা চলছে।

নতুন বাজার : অভিবাসন একটি রাজনৈতিক স্পর্শকাতর ইস্যু এবং রক্ষণশীলরা বিষয়টি আদৌ পছন্দ করে না। ইউরোপে নার্স, কেয়ারগিভার, ট্রাক ড্রাইভারসহ বিভিন্ন পেশায় প্রচুর লোকের ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে বিদেশিদের এসব চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মনমানসিকতা কিছুটা নেতিবাচক।মো. শহীদুল হক বলেন, ‘পূর্ব ইউরোপের প্রচুর লোক এখন পশ্চিম ইউরোপের ধনী দেশগুলোয় চাকরি করছে।

এ কারণে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোয় আমাদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে।’পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোয় শ্রমিক ঘাটতি আছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশ থেকে সেখানে লোক যাচ্ছে জানিয়ে সাবেক এই সচিব বলেন, ‘সেখানে ঠিকমতো যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশি শ্রমিকদের পাঠানো সহজ হতে পারে।

শ্রমিক পাঠানোর চ্যালেঞ্জ : বাংলাদেশি শ্রমিকরা কর্মঠ, এমন সুনাম থাকলেও তারা খুব দ্রুত পেশা ও অবস্থান পরিবর্তন করেন বলে কিছুটা অভিযোগ আছে।এ বিষয়ে শহীদুল হক বলেন, ‘মোটাদাগে বাংলাদেশি শ্রমিকদের একটি প্রবণতা হচ্ছে ইউরোপের কম ধনী দেশগুলোতে তারা চাকরি নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছানোর কিছুদিন পর তারা ধনী দেশগুলোতে পালিয়ে যায়।

ফলে সুনামের ঘাটতি তৈরি হয়।নিজের অভিজ্ঞতা ও ইউরোপের দেশগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার আলোকে শহীদুল হক বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে ইউরোপে নেপালের শ্রমিকদের সুনাম আছে। এ কারণে ইউরোপের দেশগুলো এখন নেপাল থেকে অধিক সংখ্যক শ্রমিক নিচ্ছে।’