11 February 2024 , 6:16:32 প্রিন্ট সংস্করণ
আপনার কথা আপনার একটি পরিচয়। ব্যক্তিগত বা সামাজিক সম্পর্ক তো বটেই, পেশাগত সম্পর্কের ক্ষেত্রেও কথোপকথন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তাই কথা বলার ক্ষেত্রে এসব বিষয় খেয়াল রাখুন অবশ্যই।
অপরিচিত কিংবা স্বল্পপরিচিত মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় অনেকেই অস্বস্তিবোধ করেন। কিন্তু নানা প্রয়োজনেই মানুষের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যেতে হয়। কেউ কেউ আবার পরিচিত মানুষের সঙ্গে কথা বলতেও স্বচ্ছন্দ নন।
আবার একেবারে উল্টোটাও কিন্তু দেখা যায়। কম সময়ের আলাপেই কেউ কেউ সংবেদনশীল বিষয়ে কথা বলে বসেন কিংবা ‘উপদেশ’-এর বোঝা চাপিয়ে দেন। যাকে বলা হচ্ছে, তিনি যে বিব্রত কিংবা বিরক্তও হতে পারেন, তার তোয়াক্কাই করেন না তারা।
১. মযেমন কথা, তেমনই থাক
আপনি কার সঙ্গে কথা বলছেন এবং কথোপকথনের ধরনটা কেমন, তা খেয়াল রাখুন। কেউ যখন নিজের আবেগ প্রকাশ করছেন, তখন আপনার প্রতিক্রিয়া হতে হবে তাঁর অনুভূতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আবার, পেশাগত আলাপের সময় ব্যক্তিগত আবেগ-অনুভূতিকে দূরে সরিয়ে পরিস্থিতি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী কথা বলাটা জরুরি।
২. কী বলবেন, ভেবে নিন
কী বিষয়ে কথা বলবেন, আপনি কী জানতে চাচ্ছেন এবং কী জানাতে চাচ্ছেন, তা আগে ঠিক করে নিন। আলাপচারিতা শুরুর আগের এই ভাবনার সঙ্গে আপনার কথোপকথন একেবারে খাপে খাপে মিলবে না ঠিকই, কিন্তু আপনার কথার একটা গতিশীলতা থাকবে। আর আপনি আত্মবিশ্বাসী অনুভব করবেন।
৩. মন দিয়ে শুনুন
অপরজন যখন কিছু বলছেন, তখন আপনাকে অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। তিনি কী বলছেন, কীভাবে বলছেন, খেয়াল করুন; মাঝেমধ্যে সম্পূরক প্রশ্নও করুন। তাঁর কথার খানিকটা প্রতিফলনও ঘটান নিজের কথায়। কেউ হয়তো আপনাকে তাঁর সাম্প্রতিক ভ্রমণকাহিনি বলছেন। আপনি তাঁকে বলতে পারেন, ‘বাহ! আপনি তো তাহলে ঘুরতে গিয়ে দারুণ মজা করেছেন!’ এরপর আপনি নিজেও মজার কোনো ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারেন তাঁর সঙ্গে।
৪. চোখ, হাসি, দেহভঙ্গি
মুঠোফোনের দিকে তো নয়ই, এদিক-সেদিকও নয়-যার সঙ্গে কথা বলছেন, তার চোখের দিকে তাকান। আলাপচারিতার সময় হাসিখুশি থাকুন। দেহভঙ্গি রাখুন ইতিবাচক। কেবল কথা বললেই হবে না, সঙ্গে মাথাও নাড়াতে হবে পরিস্থিতি বুঝে। অপরজনের চোখ, হাসি এবং দেহভঙ্গি খেয়াল করুন। তাতে আপনি এটাও বুঝতে পারবেন যে তিনি আপনার সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী কি না।
৫. প্রশংসা করুন
প্রশংসা শুনতে কার না ভালো লাগে, বলুন! তবে যার সঙ্গে কথা বলছেন, তার বাহ্যিক সৌন্দর্যের চাইতে তার রুচি কিংবা কাজের প্রশংসা করতে চেষ্টা করুন। প্রশংসাবাক্য দিয়ে আলাপ শুরুও করতে পারেন।
৬. অপরকে জানুন এবং সম্মান করুন
অপরের ভালো লাগা এবং মন্দ লাগাকে জানতে চেষ্টা করুন। তার ভাবনাকে সম্মান করুন। চট করে সমালোচনা করে বসবেন না। ভুল ধরবেন না। ব্যক্তিগত সীমার মধ্যে ঢুকে পড়তে চেষ্টা করবেন না। বিয়ে, সন্তান, চাকরির মতো বিষয়ে সংবেদনশীল প্রশ্ন করবেন না। কোনো বিষয়ে তার মতের সঙ্গে আপনার মতের মিল না হলেও তার পক্ষে কিছু অন্তত বলতে চেষ্টা করুন। তার বিপক্ষে কথা বলতে গেলে সেটিও বুঝেশুনে বলুন। বিপক্ষে একটি কথা বললে তার আগের এবং পরের কথাটি হোক ইতিবাচক বা প্রশংসাসূচক। কেউ যদি আপনার খুঁত ধরেন, তাহলে অবশ্য তা শান্তভাবে গ্রহণ করার চেষ্টা করাই ভালো। সবাই তো আর একরকম হবেন না। তা ছাড়া সবার কাছে সবকিছুর ব্যাখ্যা দেওয়ারও প্রয়োজন নেই। তর্ক বা ঝগড়া এড়িয়ে চলুন।
৭. সমতা ও নীরবতা
একনাগাড়ে কথা বলতে থাকবেন না। অপরজনকেও বলার সুযোগ দিন। আবার অপরজন কথা বলছেন বলে যে আপনি একেবারে চুপ মেরে থাকবেন, সেটাও নয়। কথা বলতে বলতে হঠাৎ দুজনেই চুপ হয়ে গেলে নিজের কোনো ভাবনাকে সামনে নিয়ে আসতে পারেন। ওই বিষয়ে তিনি কী ভাবছেন, তা জানতে চাইতে পারেন।