সারা দেশ

শখের কবুতরে মিটছে পরিবারের চাহিদা হচ্ছে বাড়তি আয়

শখের কবুতরে মিটছে পরিবারের চাহিদা হচ্ছে বাড়তি আয়

বাংলাদেশসহ বিশ্বে শান্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয় কবুতর। বাংলাদেশের গ্রাম থেকে শহর, সবখানের মানুষের কাছেই ব্যাপক জনপ্রিয় এই কবুতর। এসব কবুতরের রয়েছে বিভিন্ন জাত। তবে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির কবুতরই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে কেউ শখ করে, আবার কেউ বানিজ্যিক ভাবেও পালেন কবুতর।

এরকমই এক স্কুল শিক্ষক ভোলার লালমোহন উপজেলার মো. ফারুক। তিনি লালমোহন পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাওলাদার পাড়ার বাসিন্দা। এছাড়া উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম চর কচ্ছপিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক। ১০ বছর আগে শখের বশে কবুতর পালন শুরু করে এখন পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে করছেন বাড়তি আয়।

শিক্ষক মো. ফারুকের সংসারে স্ত্রীসহ দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে রয়েছে।স্কুল শিক্ষক মো. ফারুক বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে শখের বশে পালতে ৫ জোড়া কবুতর কিনে আনি। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে কবুতরের সংখ্যা। বর্তমানে আমার ৮০ জোড়ার মতো কবুতর রয়েছে। এসব কবুতরের জন্য একটি ঘর তৈরি করেছি। সেখানেই থাকে কবুতরগুলো।

এসব কবুতর ডিম পাড়ে, সেখান থেকে বাচ্চা ফোঁটে। ওইসব বাচ্চা দিয়ে নিজের পরিবারের আমিষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। নিজেদের খাওয়ার পর যেসব বাচ্চা থাকে তা বিক্রি করি। বাজারে নেওয়া লাগে না এসব বাচ্চা। বাসা থেকে এসেই নিয়ে যান লোকজন। এর মাধ্যমে বাড়তি আয়ও হচ্ছে।তিনি আরো বলেন, দিনে দুইবার কবুতরগুলোকে খাবার দেই। সকালে খাবার দিয়ে স্কুলে যাই এবং স্কুল থেকে ফিরে আবার খাবার দেই। প্রতিমাসে কবুতরের খাবারের জন্য প্রায় তিন হাজার টাকার মতো খরচ হয়।

এসব খরচ বাদে মাস শেষে কবুতর বিক্রি করে পাঁচ হাজার টাকার মতো লাভ হয়। প্রতি জোড়া কবুতর আড়াইশত টাকা করে বিক্রি করি। বাড়ি থেকে লোকজন এসে নেওয়ায় দাম একটু কম। বাজারে নিয়ে বিক্রি করলে হয়তো দাম আরেকটু বেশি পাওয়া যেতো। তবে বাড়ি থেকে বিক্রি করে যা আয় হয় তাতেই আমি সন্তুষ্ট। কারণ এই কবুতর পালন আমার কেবল শখ।

শিক্ষক মো. ফারুকের প্রতিবেশী ও মাদরাসার শিক্ষক আব্দুল মান্নান লিটন জানান, তিনি নিজ বাড়ির আঙিনায় দীর্ঘ দিন পর্যন্ত দেশীয় জাতের কবুতর পালন করছেন। এই এলাকার সকলেই তার থেকে কবুতরের বাচ্চা কিনেন। মাঝে মধ্যে আমি নিজেও তার থেকে বাচ্চা কিনি।তার আরেক প্রতিবেশী ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মাসুদ তালুকদার বলেন, শিক্ষকতার পাশাপাশি কবুতর পালন একটি দৃষ্টান্ত।

এর মাধ্যমে তিনি পরিবারের আমিষের চাহিদা পূরণ করতে পারছেন। একইসঙ্গে কবুতরের বাচ্চা বিক্রি করে বাড়তি উপার্জনও করতে পারছেন। সকলের উচিত কোনো জমি পরিত্যক্ত না রেখে যেকোনো কাজে ব্যবহার করা।এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. বিল্লাল উদ্দিন জানান, উপজেলার সব ধরনের খামারিদের আমরা নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছি। একইসঙ্গে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিচ্ছি। যার ফলে খামারিরা উপকৃত হচ্ছেন, লাভবানও হচ্ছেন তারা।