জাতীয়

আরও পদোন্নতি চায় পুলিশ হতাশা দূর করতে

দেড় মাস আগে পুলিশের উচ্চপর্যায়ের দুটি পদে মোট ১৭৪টি অতিরিক্ত পদ (সুপারনিউমারারি) সৃষ্টির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছিল পুলিশ সদর দপ্তর। কিন্তু সরকার ৫২টি পদ সৃষ্টির অনুমোদন দিয়েছে। পুলিশ বলছে, এই পদ তাদের জন্য অপ্রতুল। তাই পুলিশের চাওয়া অনুযায়ী পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজি) ও উপ-মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) ইন-সিটু পদ বাড়ানোর অনুমোদনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ইন-সিটু পদে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা একই পদে অধিষ্ঠিত থাকে এবং পদোন্নতির পরেও একই দায়িত্ব পালন করে।সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত আইজিপি ও ডিআইজির ১৮৯টি পদের প্রস্তাবের বিপরীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৫২টি পদের অনুমোদন দেয়। বিষয়টি নিয়ে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের চলমান হতাশার মধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগ নিলো।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত পদগুলো হলো-অতিরিক্ত আইজিপির (গ্রেড ২) পদ দুটি এবং ডিআইজির পদ ৫০টি, যার মধ্যে অতিরিক্ত ডিআইজির পদ ১৪০টি ও এসপির পদ ১৫০টি। গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।পুলিশ সদর দপ্তরের একটি প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত জুলাইয়ে অতিরিক্ত আইজিপির ১৫টি গ্রেড-১ পদ, অতিরিক্ত আইজিপির ৩৪টি গ্রেড-২ পদ, ডিআইজির ১৪০টি পদ, অতিরিক্ত ডিআইজির ১৫০টি পদ ও এসপির ১৯০টি পদ এক বছরের জন্য সৃষ্টির প্রস্তাব পাঠায়।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত আইজিপি ও ডিআইজির কয়েকটি পদ অনুমোদনের পর তারা হতাশ হয়ে পড়েন। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা শীর্ষ পর্যায়ে পদোন্নতি পাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন তারা।তারা বলেন, ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে শূন্য পদের অভাবে পদোন্নতি না পাওয়া পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের হতাশা দূর করতেই পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত ডিআইজি ও এসপি পদে পদোন্নতি শিগগিরই আসতে পারে। কারণ পদগুলোর জন্য পর্যালোচনার কোনো অনুরোধ নেই।এদিকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নূর-এ-মাহবুবা জয়া আরও অতিরিক্ত আইজিপি ও ডিআইজি পদের অনুমোদন চেয়েছেন।চিঠিতে অভ্যন্তরীণ ও জননিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয় এবং নতুন চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে মোকাবিলায় নেতৃত্বের পদে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবলের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ৫২৯টি পদ সৃষ্টি এবং কর্মকর্তাদের ইন সিটু পদোন্নতি দিলে সরকারের প্রতি মাসে অতিরিক্ত দেড় কোটি টাকার প্রয়োজন হতো।বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশ ক্যাডারে উচ্চপদে পদোন্নতির সংখ্যা খুবই কম।

তাই দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।তিনি জানান, পরিস্থিতি বিবেচনায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। কিন্তু জনপ্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের হতাশ করেছে।