28 December 2024 , 6:27:54 প্রিন্ট সংস্করণ
কুষ্টিয়া চিনিকলের যন্ত্রাংশ অন্য চিনিকলে স্থানান্তরের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে কুষ্টিয়া শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতারাসহ স্থানীয় জনতা। গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে রাজশাহী চিনিকলের কতিপয় কর্মকর্তা কুষ্টিয়া চিনিকলের কিছু যন্ত্রাংশ তাদের মিলে নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কুষ্টিয়া শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতারাসহ স্থানীয়রা জানতে পারলে কুষ্টিয়া চিনিকলের প্রধান ফটক ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ট্রাকে ভর্তি যন্ত্রাংশ আটকে দেন। পরে এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন কুষ্টিয়া চিনিকলের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কুষ্টিয়া শাখার সভাপতি এসএম মহাসিন আলী বলেন, ২০২০ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে কুষ্টিয়া চিনিকলের উৎপাদন কার্যক্রম। বর্তমান সরকার মিলটি পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ হঠাৎ করেই আমরা জানতে পারি কুষ্টিয়া চিনিকলের যন্ত্রাংশ রাজশাহী চিনিকলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এমন সংবাদে আমরা বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কুষ্টিয়া জেলা শাখার নেতারাসহ স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে যাই। চিনিকলসহ বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলি। কুষ্টিয়া চিনিকলের কোনো যন্ত্রাংশ অন্য চিনিকলে যাবে না মর্মে অবহিত করলে তারা ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন জানান, কুষ্টিয়া চিনিকল একটি সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠান। উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের কয়েকটি ভারি শিল্পের মধ্যে অন্যতম। অথচ এই চিনিকলটি কোনো প্রকার যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আমরা আশা করব, দ্রুত এই চিনিকলটি চালু করবে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে কুষ্টিয়া চিনিকলের কোনো যন্ত্রাংশ অন্য কোনো চিনিকলে যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুল আলিম জানান, কুষ্টিয়া চিনিকলের মূল্যবান যন্ত্রাংশ রাজশাহী চিনিকলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তা আটকে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করব, এ ধরনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসবে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে উৎপাদন বন্ধ রাখা কুষ্টিয়া চিনিকল দ্রুত চালুর দাবি জানান তিনি। কুষ্টিয়া চিনিকলের ইনচার্জ হাবিবুর রহমান জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই কুষ্টিয়া চিনিকল থেকে যন্ত্রাংশ রাজশাহী চিনিকলে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু স্থানীয় এলাকাবাসী ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতারা তাতে বাধা দেন। তার পর থেকে ওই সিদ্ধান্ত থেকে আপাতত সরে আসা হয়েছে। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তমতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানা গেছে, ২০২০ সালে কুষ্টিয়া চিনিকলসহ দেশের ৬টি চিনিকলের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রাখে সরকার। তার পর থেকে এসব চিনিকলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার পরিবার ভীষণ অর্থকষ্টে পড়েন। গত ২ ডিসেম্বর সরকার বন্ধন চিনিকলগুলো পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেয়।