অপরাধ বার্তা

শীর্ষ চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ গ্রেপ্তার

বাংলাদেশের শীর্ষ চাল ব্যবসায়ী বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরের রশিদ এগ্রো ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের মালিক আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ। গতকাল শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর এলাকার একটি গলি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে মডেল থানা পুলিশের আভিযানিক দল। রাজশাহীর ইনাম ফিড মিলের মালিক আতিকুর রহমানের দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান শিহাব। আব্দুর রশিদ ওরফে চাল রশিদ দেশের শীর্ষ চাল ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ অটো মেজর এন্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি। তিনি দেশের চাল সিন্ডিকেটের মূলহোতা। তার ইশারায় দেশে চালের দাম উঠানামা করত। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

জানা গেছে, রাজশাহীর ইনাম ফিড মিলের মালিক আতিকুর রহমানের এক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রশিদের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬৭ টাকার একটি মামলা করেছিলেন তিনি। ওই আবেদনে বলা হয়, আসামি তার ব্যাংক হিসাবে আমার কাছ থেকে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬৭ টাকা অগ্রিম নিয়ে মৎস্য খাদ্যের কাঁচামাল উঙজই (ফব ড়রষবফ ৎরপব নৎধহ) কিংবা টাকা কোনোটাই দিচ্ছিলেন না। পরে আতিকুর রহমান রশিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে মহামান্য আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আব্দুর রশিদ ও তার পরিবার সদস্যদের বিরুদ্ধে ৬৮টির অধিক মামলা রয়েছে।

সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক সহ দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে লাপাত্তা ছিলেন বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরের রশিদ অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্টের মালিক আবদুর রশিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা। এত মামলার আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিলো। এই নিয়ে পুলিশের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন ছিলো বিভিন্ন মহলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকটি সংস্থা ও আদালত সূত্র বলছে, এই নিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কয়েক দফায় ঋণ পরিশোধের নোটিশ দিলেও তাতে সাড়া দেননি আবদুর রশিদ ও তার পরিবারের লোকজন। তাই তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত আবদুর রশিদ ও তার পরিবার সদস্যদের বিরুদ্ধে ৬৮টি মামলা দায়ের করেছে বিভিন্ন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। নাম-প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, আবদুর রশিদ প্রভাবশালী চাল ব্যবসায়ী হওয়ায় ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋনের টাকা তিনি পরিশোধ করছেন না। বছরের পর বছর ঋণ পরিশোধের নোটিশ দিয়েও সাড়া দেননি তিনি ও তার পরিবার।

তাই উপায় না পেয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এতে আবদুর রশিদ ও তার পরিবার লোকজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরেও নির্বিঘ্নে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন আবদুর রশিদ। রাজকীয় ভাবে বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে তাকে দেখা যেত। এতে অনেকটাই নির্বিকার ছিলো প্রশাসন। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান শিহাব বলেন, আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে সিআর ৬৪৩/২৩ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন তিনি। আব্দুর রশিদ এবং তার পরিবারের সদস্যদর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির দায়ে আদালতে ৬৮টি মামলা দায়ের করেন সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক সহ দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই তিনি ও তার পরিবার সদস্যরা আত্মগোপনে ছিলেন। বিকাল ৫টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content