বিনোদন

নির্যাতনের ভয় আছে তাই না খেয়ে মরার ভয় নেই বললেন মেখলা

আরজি করকাণ্ডে গায়িকা মেখলা দাশগুপ্ত বলেছেন, আমি নিজের মতো করে কাজ বেশি করি। ছবিতে খুব যে গাই বা প্রচুর পুরস্কার পাই, তেমনটি নয়। ফলে কাজ না পাওয়ার ভয় আমার নেই বলে জানান এ সংগীতশিল্পী। আনন্দবাজার প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, আরজি করকাণ্ডে গায়িকা মেখলা দাশগুপ্ত নিজের মতো করে প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন— না, কোনো প্ল্যাকার্ড নেই তার হাতে।

তিনি কোনো সমাবেশে জ্বালাময়ী ভাষণও দেননি। এর বদলে তিনি সামাজিকমাধ্যমে মুখর ওঠেন। এমন একটি ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করে তিনি বলেছেন— ধর্ষণ শুধুই লালসার ফল নয়। ভয় দেখাতেও ধর্ষণ করা হয়, আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে যা হয়েছে। এ গায়িকা বলেন, মৃতা তরুণীর মতো করে আগামী দিনে যাতে আর কেউ প্রতিবাদী হওয়ার সাহস না দেখান, তার জন্যই এ রকম নারকীয় কাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

গায়িকা মেখলার সামাজিকমাধ্যমে ভিডিওটি পোস্ট দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তার এ ভিডিও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। গায়িকার ধর্ষণের ভয় নেই ভিডিও দেখে প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। জবাবে মেখলা বলেন, হ্যাঁ, ধর্ষণের ভয় আমারও আছে। তারপরও মনে হয়, মাথার ওপরে ঈশ্বর আছেন। নিশ্চয়ই তিনি বিচার ও রক্ষা— দুটোই করবেন।

মেখলার মন্তব্যবাক্স বলছে, তার বক্তব্য শুনে প্রভাবিত অনেক নেটিজেন। তারা সে কথা লিখে জানিয়েছেন। ভিডিওবার্তায় কী বলেছেন গায়িকা? তার মত, অনেকেই মিছিলে বলছেন, মেয়েদের ‘না’ মানে যে না আর হ্যাঁ মানে ‘হ্যাঁ’— এটা মানতে হবে। এটা ঠিক নয়। কারণ আমার মতে— সব ধর্ষণ লালসা থেকে হয় না। অনেক সময় ভয় দেখানোর জন্যও হয়।

নিজের কথার পক্ষে তার যুক্তি— সে ক্ষেত্রে তার মৃত্যু অন্যভাবেও ঘটতে পারত। কিন্তু সেটি ঘটেনি। বদলে নারকীয় কাণ্ড ঘটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। উদ্দেশ্য— বাকিদের মনে ভয় জাগানো। মেখলা বলেন, সাধারণ মানুষ মৃত্যুভয়ে, কাজ হারানোর ভয়ে অনেক অন্যায় দেখেও চুপ করে থাকেন। ভয়ের চোটে অনেকে অন্যায়কারীর হ্যাঁ-তে হ্যাঁ, না-তে না বলেন। এই ভয় যেদিন জয় করা যাবে, সেদিন অন্যায় পরাস্ত হবে। তার জন্য প্রতিবাদ প্রয়োজন।

এ গায়িকা বলেন, না খেতে পেয়ে মরার ভয় তার নেই। নিজের মত প্রকাশ করে মেখলা বলেন, আমি নিজের মতো করে কাজ বেশি করি। খুব যে ছবিতে গাই বা প্রচুর পুরস্কার পাই, তেমন নয়। ফলে কাজ না পাওয়ার ভয় আমার কম। তারপরও যদি কাজ আর না পান, তা হলে তিনি গান শেখাবেন। আঁকতে জানেন। সেটিও যত্ন নিয়ে শেখাতে পারবেন।

ফলে অন্নের অভাব তার কোনো দিন হবে না। যারা তার মতো শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পাননি, তাদের জন্য তার কী বার্তা—এ প্রশ্নের উত্তরে মেখলা বলেন, এ জন্যই নারীর শিক্ষা আর উপার্জনের ওপর জোর দেওয়া হয় উচিত। প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে এ দুটো বিষয় খুব জরুরি।

তারপরও বলব, যারা পিছিয়ে রয়েছেন, তারা যদি সৎ পথে থাকেন, ঘুরপথে না গিয়ে, পরিশ্রম করে নিজের প্রাপ্য পাওয়ার চেষ্টা করেন, তা হলেও তারা জিতবেন। হয়তো কষ্ট বেশি করতে হবে। বদলে অন্যায় পিছু হটবে।