21 August 2024 , 3:13:09 প্রিন্ট সংস্করণ
অনেক সময় বয়স্ক ব্যক্তিরা খুব সামান্য আঘাতে বা কোনো আঘাত ছাড়াই হাত বা কোমরের হাড় ভাঙার শিকার হন। কেন এমনটা হয়? কারণ তারা অস্টিওপোরোসিসে ভুগছেন, যা বার্ধক্যের একটি স্বাভাবিক বিষয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবারই হাড় ক্ষয় হতে থাকে।
তবে কিছু মানুষের শরীরে এ প্রবণতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দেখা যায়। অস্টিওপোরোসিস মানে হাড়ে পোরস বা ছিদ্র বেড়ে যাওয়া। এ ক্ষেত্রে হাড়ের ওপরের আবরণ বা কমপ্যাক্ট বোন অনেক পাতলা হয়ে যায়। ভেতরের স্পঞ্জি বোনের ছিদ্র বেড়ে যায়। ফলে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায় ও হাড়কে ভঙ্গুর করে ফেলে; তখন অল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যায়।
পঞ্চাশোর্ধ্ব এক-তৃতীয়াংশ নারী ও এক–পঞ্চমাংশ পুরুষ অস্টিওপোরোসিসে ভোগেন। সাধারণত ২০ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত মানুষের হাড় মজবুত হতে থাকে। এই সময় যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, পুষ্টিকর খাবার (যেমন ক্যালসিয়াম–সমৃদ্ধ) গ্রহণ করেন, তাদের হাড় বেশি মজবুত হয় এবং পরবর্তী সময়ে হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি কম থাকে।
কাদের ঝুঁকি বেশি
নারীদের মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে যায়, ফলে হাড় ক্ষয়ের মাত্রা বেড়ে যায়। তিন মাসের বেশি সময় উচ্চমাত্রার স্টেরয়েড গ্রহণ করলে যেমন- ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে। থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য, যেমন হাইপোথাইরয়ডিজম, হাইপারথাইরয়ডিজম বা থাইরয়েড হরমোন ওভার রিপ্লেসমেন্ট হলে।
উপসর্গ কী
সাধারণত কোনো উপসর্গ থাকে না। হাড় ভাঙা নিয়েই রোগীরা আসেন অথবা পরীক্ষা করতে গিয়ে অস্টিওপোরোসিস ধরা পড়ে। সাধারণত কবজির হাড়, মেরুদণ্ড, নিতম্ব ও পায়ের হাড় বেশি ভাঙে।
প্রতিকার কী
১. প্রতিকারের সবচেয়ে ভালো উপায় জীবনযাত্রার পরিবর্তন বা সুশৃঙ্খল জীবনযাপন।
২. ছোটবেলা থেকেই নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে।
৩. প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। হাঁটা, জগিং, তাই চি, ওয়েট বেয়ারিং ভালো ব্যায়াম। বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ব্যায়াম তাদের শারীরিক সক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে।
৪. ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করতে হবে।
৫. প্রতিদিন ক্যালসিয়াম–সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ভিটামিন ডির জন্য রোদে কমপক্ষে ১৫ থেকে ৩০ মিনিট থাকতে হবে, এতে হাড় মজবুত হবে।
৬. যারা স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ খান, তাদের অবশ্যই ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শে ডেক্সাস্ক্যান করে দেখতে হবে হাড় ক্ষয় হচ্ছে কি না।
৭. বেশি ক্যাফেইন (৩৩০ গ্রাম/দিন) খেলে অস্টিওপোরোসিসের আশঙ্কা বেড়ে যায়। দিনে ২ কাপ বা ২৪০-৩৬০ মিলির বেশি কফি পান করা যাবে না। যাদের বেশি কফি পানের অভ্যাস, তাদের প্রতিদিন ক্যালসিয়াম খেতে হবে।
৮. পড়ে যাওয়া রোধ করতে হবে। এ জন্য ঘরে পর্যাপ্ত আলো থাকা, বাথরুম পিছলা না থাকা, চোখে দেখতে সমস্যা হলে চোখের চিকিৎসক দেখানোর মতো বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।