জাতীয়

জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে কঠোর আচরণ করছে জলদস্যুরা

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের সঙ্গে দিন দিন কঠোর আচারণ করছে জলদস্যুরা। সব নাবিক সুস্থ থাকলেও তাদেরকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না জাহাজটির কম্পিউটার রুমে। শুধু তাই নয়, সেখানে মজুত পানিও ফুরিয়ে আসছে। এ কারণে পানি ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে দস্যুরা। পুরো দিনে মাত্র দুই-এক ঘণ্টা মজুত থাকা পানি ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে নাবিকদের। বাকি সময়ে সাগর থেকে পানি নিয়ে ব্যবহার করতে হচ্ছে।

সোমবার (১৮ মার্চ) রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা বদরুল ইসলাম। তিনি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে জিম্মি অয়েলার মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের ভগ্নিপতি।বদরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার শ্যালক শামসুদ্দিনের সঙ্গে রোববার কথা হয়েছে। বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টার দিকে তিনি মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করেছেন। তবে তিনি সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে। আরও বলেছেন, নাবিকদের সে দেশের মোবাইল সিম দেওয়ার কথা বলে সবার কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে দস্যুরা।

তবে তারা কোনও সিম নাবিকদের দেয়নি। এটা এক ধরনের প্রতারণা করেছে। রাতে নাবিকরা নিজ নিজ কেবিনে ঘুমাতে গেলে সেখানে দুই-এক ঘণ্টা পর পর দস্যুরা দরজা ধাক্কাতে থাকে। এভাবে বিরক্ত করছে দস্যুরা।তিনি বলেন, ‘ফোনে শামসুদ্দিন বলেছেন- দস্যুরা এখনো জাহাজ মালিকের কাছে কোনো দাবি-দাওয়া জানায়নি। তারা চাচ্ছে- মালিকপক্ষ নিজ থেকে তাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুক। তাহলে মুক্তিপণের অর্থ বেশি করে নিতে পারবে। অপরদিকে জাহাজ মালিক চাচ্ছে, দস্যুরা তাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করে দাবি-দাওয়া বলুক।

একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, যে দস্যু গ্রুপ এমভি আবদুল্লাহকে প্রথমে জিম্মি করেছে তারা পরে দ্বিতীয় দস্যু গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করেছে। এখন দ্বিতীয় গ্রুপটি মুক্তিপণ চাইবে নাকি তারা নতুন করে অন্য গ্রুপের কাছে দেবে তা বলা যাচ্ছে না।এদিকে, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকদের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে ওই জাহাজে থাকা ৫৫ হাজার টন কয়লা। সম্প্রতি জাহাজটি চিফ অফিসার ক্যাপ্টেন আতিক উল্লাহ খান জাহাজটির মালিক পক্ষের কাছে পাঠানো এক অডিও বার্তায় বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে, আমাদের জাহাজে কিছু কোল্ড কার্গো আছে।

প্রায় ৫৫ হাজার টন। এগুলো একটু ডেঞ্জারাসও (ঝুঁকিপূর্ণ)। ফায়ারেরও ঝুঁকি আছে। লাস্ট যখন অক্সিজেন মেপেছি তখন ৯-১০ শতাংশ লেভেল পেয়েছি। এটি নিয়মিত মনিটরিং করতে হয়। কোনো কারণে অক্সিজেন লেভেল বেড়ে গেলে বিশেষজ্ঞের মতামত নিতে হবে। এটার একটু ব্যবস্থা করবেন, স্যার।কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে।

তারা সুস্থ আছেন। এখন পর্যন্ত দস্যুরা জাহাজ মালিকের কাছে কোনো দাবি-দাওয়া জানায়নি। আমরা তাদের সঙ্গে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত সে রকম কোনো সোর্স আমরা পাইনি যার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারব। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জাহাজসহ নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

%d bloggers like this: