27 February 2024 , 2:26:59 প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম বন্দরের মেগা প্রকল্প বে-টার্মিনালের ভূমি জটিলতা অবশেষে কাটছে। প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ৫০০ একর সরকারি খাসজমি প্রতীকী মূল্যে পাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। জেলা প্রশাসন এ জমির মূল্য নির্ধারণ করেছিল প্রায় এক হাজার ২৫০ কোটি টাকা। তবে এত বিশাল অঙ্কের টাকা আর গুনতে হচ্ছে না বন্দরকে। মাত্র তিন কোটি টাকা প্রতীকী মূল্যে জমি বন্দোবস্তি পেতে চলেছে তারা। এরই মধ্যে বন্দোবস্তের সরকারি অনুমোদন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এখন জেলা প্রশাসন থেকে চিঠি পেলেই বন্দোবস্তের নামমাত্র মূল্য পরিশোধ করা হবে।
এতে ভূমির প্রায় পুরো মূল্যই সাশ্রয় হবে। কমে আসবে প্রকল্প ব্যয়। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা প্রকল্পটিও দেখবে আলোর মুখ।বন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভূমি জটিলতা। প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি প্রায় তিন বছর আগে বুঝে পেলেও সরকারি খাসজমি পাওয়ার চেষ্টা চলছিল। জেলা প্রশাসন মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে ভূমি দেওয়ার প্রস্তাব করে। আর বন্দর চাইছিল প্রতীকী মূল্যে বন্দোবস্ত পেতে। এ নিয়ে চলে দীর্ঘ টানাপোড়েন। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক যুগান্তরকে বলেন, ‘বে-টার্মিনালের জন্য ৫০০ একর সরকারি খাসজমি বন্দরকে তিন কোটি টাকা প্রতীকী মূল্যে বন্দোবস্ত দিতে সরকারিভাবে অনুমোদন হয়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের চিঠি দেওয়া হবে। এরপর আমরা বন্দোবস্তের টাকা পরিশোধ করব।পণ্য হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নগরীর পতেঙ্গা-হালিশহর সমুদ্র উপকূলে প্রায় আড়াই হাজার একর ভূমিতে বে-টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৮৭০ একর ভূমি সমুদ্র উপকূল থেকে পাওয়া যাবে। বাকিটা সমুদ্র থেকে রিক্লেইম (পুনরুদ্ধার) করার কথা। ২০২১ সালে ৬৭ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি বন্দরকে বুঝিয়ে দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এ ভূমির অধিগ্রহণ মূল্য ছিল প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। এরপর থেকে বন্দর বাকি ৮০৩ একর সরকারি খাসজমি প্রতীকী মূল্যে পাওয়ার চেষ্টা শুরু করে। সর্বশেষ গত বছর জেলা প্রশাসন ভূমি বন্দোবস্তের প্রস্তাব পাঠায় ভূমি মন্ত্রণালয়ে।
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ৫০০ একর নিষ্কণ্টক খাসজমির মূল্য নির্ধারণ করা হয় এক হাজার ২৫০ কোটি টাকা।চট্টগ্রাম বন্দরের ভূমি শাখার এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, ৫০০ একর জমি প্রতীকী মূল্যে বন্দোবস্ত দিতে বন্দরের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন করা হয়েছিল। এক হাজার ২৫০ কোটি টাকার ওই জমি তিন কোটি তিন টাকায় পাওয়া যাবে।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমোদন মিলেছে। দক্ষিণ হালিশহর মৌজার ভূমির অনুমোদন হয়েছে ৩০ জানুয়ারি আর মধ্যম হালিশহর, উত্তর হালিশহর ও দক্ষিণ কাট্টলি মৌজার জমির অনুমোদন হয় ১১ ফেব্রুয়ারি। ভূমি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা। জেলা প্রশাসন থেকে চিঠি পেলে ভূমির প্রতীকী মূল্য পরিশোধ করা হবে।