শিক্ষা

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি শিক্ষক মাহতাবকে চাকরিচ্যুতির কারণ জানাল

সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ‘শরীফ থেকে শরীফা’ হওয়ার পাতা ছিঁড়ে চাকরিচ্যুত হন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাব। গত ২০শে জানুয়ারি তাকে কী কারণে চাকরিচ্যুত করা হয় এতদিন পর্যন্ত এর কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা ছিল না ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে। সোমবার (২৯শে জানুয়ারি) সকালে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মাহতাবের চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে।

জনসংযোগ কর্মকর্তা ফাতিয়াস ফাহমিদ সাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সব মত ও আদর্শের জন্য সহনশীলতা ও সম্মানের ভিত্তিতে গঠনমূলক আলোচনা, বিতর্ক এবং পারস্পরিক মতবিনিময়ে বিশ্বাস করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাতীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য আচরণ, যা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সমর্থন করে না। সাম্প্রতিক সময়ে ব্র্যাকের শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎসের সপ্তম শ্রেণির জাতীয় পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা ছেড়া এবং পাবলিক ফোরামে অন্যদেরকে একই কাজ করতে বলার ঘটনাটিকে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি একটি ধ্বংসাত্মক কাজ বলে মনে করে।

এ ধরনের অশিক্ষকসুলভ আচরণকে তারা কোনোভাবেই সমর্থন করে না।একারণে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ২০২৪ সালের স্প্রিং সেমিস্টারের জন্য আসিফ মাহতাবকে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নতুন চুক্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ইউনিভার্সিটি মাহতাবকে এই সেমিস্টারের প্রস্তুতিমূলক কাজে তার সময় ও প্রচেষ্টার জন্য পারিশ্রমিক প্রদান করবে।বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সব ক্ষেত্রে দেশের সংবিধান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং দেশের প্রচলিত বিধিবিধান মেনে চলার বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ।

তাই ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সমকামিতার প্রচার ও প্রসারের সাথে যুক্ত—সামাজিক মাধ্যমে কিছু মহলের এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি প্রত্যেকটি মানুষের সমান অধিকার এবং সম্ভাবনা বিকাশের পথে সমান সুযোগ সৃষ্টিতে বিশ্বাস করে।গত ১৯শে জানুয়ারি রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক : বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে ‘ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক গল্প’ পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদ জানান শিক্ষক আসিফ মাহতাব।

তার দাবি, সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ‘ট্রান্সজেন্ডারের গল্প’ ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করা হচ্ছে। এ সময় তিনি সবার সামনে ওই পাঠ্যবই থেকে ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন। এরপর ব্রাক ইউনিভার্সিটি তাকে সব শিক্ষাকার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয় এবং তার ব্যবহৃত ইমেইল ডিজেবল করে দেয়। এ নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল আলোচনা সমালোচনার মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই গল্পটি বিশ্লেষণ করার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করে দেয়। কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

আরও খবর

Sponsered content

%d bloggers like this: