ভিন্ন স্বাদের খবর

প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগপত্র পেলেন মৃত্যুর পর

প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগপত্র পেলেন মৃত্যুর পর

যখন চাকরি থেকে অবসর নেয়ার সময় এসেছে বা পেরিয়ে গেছে চাকরির বয়স, ঠিক তখনি নিয়োগ দেয়া হলো। নিয়োগ পাওয়াদের কয়েকজন আবার মারাও গেছে। এমনি ঘটনা ঘটেছে ভারতে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে। বিভিন্ন আইনি জটিলতায় বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল নিয়োগ। আইন-আদালতের দরজায় কড়া নেড়েও সুরাহা হয়নি।

অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পর নিয়োগের চিঠি এসেছে বটে কিন্তু তার মাঝেই পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ৪০ বছর।এত বছর পর যখন অবশেষে নিয়োগপত্র হাতে পেলেন, অবসরের বয়সই পেরিয়ে গিয়েছে তাদের। এক-দু’জন নন, সম্প্রতি ৬৬ জনকে নিয়োগপত্র দিয়েছে হুগলির প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। দেখা গিয়েছে, তাদের সকলেরই বয়স ৬০ পেরিয়ে গেছে। চার জন মারাও গেছেন।

শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে দেশ জুড়ে।এই বয়সে নিয়োগপত্র পেয়ে স্বাভাবিকভাবে হতচকিত সেই সব প্রবীণরা। খোঁজ নিতে কেউ ছুটে গিয়েছেন নিয়োগপত্রে উল্লিখিত স্কুলে। তবে এ নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের তরফে এ বিষয়ে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে এর আগে ২০২৩ সালের ২০শে ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

সেই মতোই নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে ৬৬ জনকে। তাদের চাকরিতে নিয়োগ কার্যকর হয়েছে ২০১৪ সালের ৮ই আগস্ট থেকে।নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার চাকরিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন পাণ্ডুয়ার দীনবন্ধু ভট্টাচার্য। সেখানে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সেই সময় বামফ্রন্ট সরকার ছিল। আমরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলাম। কিন্তু চাকরি পাইনি। পরে প্যানেল বাতিল হয়ে যায়। এতদিন পর শিক্ষা দপ্তর নিয়োগপত্র পাঠাল। কি করে এটা হয়, বুঝতে পারছি না।

নিয়োগপত্র পাওয়া অচিন্ত্য আদক জানান, চাকরি না মেলায় তারা ১৯৮৩ সালে মামলা করেছিলেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এখন কি করে সেই চাকরি দেওয়া হয়, ভেবেই পাচ্ছেন না ৭১ বছরের বৃদ্ধ। তিনি বলেন, ‘ষাট বছরে তো অবসর হয়। এই বয়সে কি করে চাকরি করব? এ বিষয়ে এবিপিটিএ-র কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহন পণ্ডিত বলেন, ‘এমন ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি।

অবসরের বয়স পেরিয়ে যাওয়ার পর চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে। অনেকেই আমাদের ফোন করছেন। বলা হয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে তারা চাকরির সব সুযোগ পাবেন। তবে, চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরেই আবার চাকরি চলে যাবে। আর অবসরের পর সবাই পাবেন পঞ্চাশ লাখ টাকা করে।