১৭ সূচকে রেড জোনে বাংলাদেশ

২০ সূচকের মধ্যে ১৭টিতেই ‘রেড জোনে’ আছে বাংলাদেশ। এসব সূচকের মধ্যে রয়েছে তথ্য অধিকার, দুর্নীতি, আইনের শাসন, রাজনৈতিক ও নাগরিক স্বাধীনতা, সরকারের কার্যকারিতাসহ আরও ১১টি সূচক। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অবনতি হয়েছে তথ্য অধিকারে। এর পরই আছে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ।

গত মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ করপোরেশন (এমসিসি) নামক যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত ২০২৪ অর্থবছরের সূচকে দেখা যায়, মাত্র তিনটিতে পাস করেছে বাংলাদেশ। সেগুলো হচ্ছে রাজস্ব নীতি, মুদ্রাস্ফীতি ও টিকাদানের হার। এগুলোকে গ্রিন জোন হিসেবে দেখিয়েছে এমসিসি।

বাকি ১৭টি আছে রেড জোনে। গত বছরের সার্বিক সূচকও একই ছিল। তবে ২০২২ সালে রেড জোনে ছিল ১৬টি। আগের বছরগুলোয় আরও ভালো ছিল সূচক। প্রসঙ্গত, দারিদ্র্য বিমোচনে অর্থ সহায়তা দেওয়ার জন্য এ সূচক তৈরি করে থাকে এমসিসি। সূচকের এমন পরিস্থিতিতে তাদের অর্থ সহায়তা পাবে না বাংলাদেশ।

সংস্থাটির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই সূচক প্রতিযোগিতামূলক দেশ নির্বাচন প্রক্রিয়ার একটি মূল উপাদান। এটা নির্ধারণ করে কোন দেশগুলো ২০২৪ থেকে পাঁচ বছরের জন্য অনুদান চুক্তির যোগ্য। ৮০টি দেশের মধ্যে এবার ২৫টি দেশ পাস করেছে এবং ৫৫টি দেশ ব্যর্থ হয়েছে।

এমসিসির তহবিলের জন্য কোনো দেশকে অবশ্যই প্রতিটি বিভাগ থেকে একটি সূচকসহ অন্তত ১০টিতে পাস করতে হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রাজনৈতিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা এবং দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ।

তালিকায় সুশাসন ক্যাটাগরির ছয়টি সূচকের একটিতেও পাস করেনি বাংলাদেশ। এর মধ্যে রাজনৈতিক স্বাধীনতা সূচকে ৪০ এর মধ্যে ১৫, নাগরিক স্বাধীনতায় ৬০ এর মধ্যে ২৫, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে ১.৫ এর মধ্যে মাইনাস ০.৫৩, সরকারের কার্যকারিতায় ১.৫ এর মধ্যে মাইনাস ০.৩৪, আইনের শাসনে ১.৫ এর মধ্যে মাইনাস ০.২৮ এবং তথ্য অধিকারে ৯৫ এর মধ্যে ৩২.৩ পেয়েছে বাংলাদেশ। শেষের এই সূচকটিতে এক বছরের মধ্যে ৮ পয়েন্ট কমেছে।

একইভাবে স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় খরচ, প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষা, মেয়েদের নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা, শিশু স্বাস্থ্য, জেন্ডার অর্থনীতি, ভূমিতে অধিকার, কর্মসংস্থানের সুযোগ ও ঋণপ্রাপ্তিতে রেড জোনে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। শুধু অর্থনৈতিক স্বাধীনতা তালিকার আর্থিক নীতি ও মুদ্রাস্ফীতি এবং জনগণের জন্য বিনিয়োগ ক্যাটাগরির টিকাদানের হারে গ্রিন জোনে রয়েছে বাংলাদেশ।

জানা গেছে, এমসিসির তালিকায় বাংলাদেশে ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। ২০২২ সালে রেড জোনে ছিল ১৬টি সূচক, ২০২১ সালে ১৩টি, ২০২০ সালে ১২টি, ২০১৯ সালে ১১টি, ২০১৮ সালে ৭টি ও ২০১৭ সালে ছিল ১০টি সূচক। এর আগে ২০১৬, ২০১৫ ও ২০১৪ সালের রেড জোনে ছিল ৯টি করে সূচক।