জাতীয়

ভারতের সঙ্গে কথা হবে চোখে চোখ রেখে বললেন আসিফ মাহমুদ

স্বাধীন দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা হবে বলে মন্তব্য করেছেন যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেছেন, ‘একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের সঙ্গে কথা হবে চোখে চোখ রেখে, মাথা নিচু করে নয়। কথা হবে মাথা উঁচু করে।

মঙ্গলবার বিকালে কুমিল্লা টাউনহল মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের স্পিরিটকে ধারণ করে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, আবু বাকের মজুমদার, সুমাইয়া আক্তার, হামযা মাহবুব, জিয়া উদ্দিন আয়ান, আলী আহমেদ আরাফ, আবু রায়হান, তাছনিয়া নাওরিন, মহিদুল ইসলাম রিন্তু, ফারিয়া রহমান, খালেদ হাসান এবং নাঈম আবেদিনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘ভারত এতদিন একটি দলের সঙ্গে কথা বলেছে। কিন্তু এখন আর তা হবে না। এ দেশের জনগণ পররাষ্ট্রের নীতির ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটি রাষ্ট্র বাস্তবায়ন করবে। জনগণের বুকে গুলি চালিয়ে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলার যে প্র্যাকটিস তারা এতদিন ধরে করে এসেছে সেখান থেকে সরে আসতে হবে।আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বেশি কিছু চায় না।

স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করতে চায়। বিলাসিতা চায় না। যে মৌলিক অধিকার রয়েছে, সেগুলো নিশ্চিত হয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে চায়। কিন্তু একটি দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের শাসনের যাত্রার ফলে আমরা এমনভাবে পিষ্ট হয়েছি যে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিতে গেলেও দশবার ভাবা লাগত। গান গেয়ে অনেককে জেল খাটতে হয়েছে। কবিতা লিখে জেল খাটতে হয়েছে।

আজ আমরা এতটুকু স্বস্তিতে অন্তত আছি। এখন আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। কেউ আমাদের আজ বিরক্ত করছে না।র‌্যাব, পুলিশ, ডিবি বলে আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে না উল্লেখ করে আসিফ বলেন, ‘শুধু ১৬ বছর নয়, গত ৫৩ বছর ধরে এ দেশের ওপর শুধু জঞ্জাল জমা হয়েছে। আমরা খুব দ্রুত সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা করছি।

আপনারা বিগত ৫৩ বছরে এমন কোনো বন্যা দেখাতে পারবেন না যেখানে ত্রাণ চুরির ঘটনা ঘটেনি। এবার কিন্তু এরকম একটি ঘটনাও ঘটেনি। চাল চুরি করে, ত্রাণ চুরি করে, খাটে লুকিয়ে রাখার ঘটনা একটিও ঘটেনি।উপদেষ্টা আসিফ বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন বিআরটিএসহ অনেক সরকারি অফিসে জনগণকে ঘুরাতো, কষ্ট দিত, ঘুরিয়ে তাদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করত।

এখন আর কেউ কি সেই সাহস দেখাচ্ছে? সেটি যেন আর কেউ ভবিষ্যতে সাহস না দেখায় আমরা সেই সংস্কারের কথা বলছি। সেই কাঠামোগত সংস্কার কীভাবে হবে সেটি আমরা ২১ জন যারা সরকারে বসেছি আমরা ঠিক করব না, সেটি নির্ধারণ করবেন আপনারা। সেটি নির্ধারণ করবে এ দেশের জনগণ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের যে পতন হয়েছে তা কিন্তু দীর্ঘদিন তাদের যে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, মানুষের ওপর অন্যায়-অবিচার তার চূড়ান্ত ফসল। আপনারাও যদি একই পথে হাঁটেন আপনাদের পরিণতিও সেই আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট সরকারের মতোই হবে।