9 June 2024 , 5:27:10 প্রিন্ট সংস্করণ
বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় যমুনা নদীর তীরে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে অর্ধশত ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। ঝুঁকিতে পড়েছে আরও অন্তত ৮০০ থেকে ৯০০ পরিবারের ঘরবাড়ি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
গতকাল শনিবার উপজেলার তেওতা, সমেজঘর তেওতা, আলোকদিয়া চর, শিবালয়, দক্ষিণ শিবালয়, আরিচা লঞ্চঘাট, বোয়ালী, অন্বয়পুর, কুষ্টিয়া, দাশকান্দি, নয়াকান্দি, পাটুরিয়া ফেরিঘাট, মান্দারখোলাসহ কয়েকটি এলাকায় ভাঙনের দৃশ্য দেখা গেছে। তেওতা ইউনিয়নের সমেজঘর তেওতা গ্রামের খবির খান ও হাজেরা বেগম বলেন, তিন-চার দিনের মধ্যে তাদের ঘরবাড়ির অর্ধেক অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
বাধ্য হয়ে বাকি অংশ ভেঙে নিয়ে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছেন। তাদের অভিযোগ, এ পর্যন্ত দায়িত্বশীল কেউ তাদের খবর নেননি। পরিবার-পরিজন নিয়ে রাস্তায় নামতে হচ্ছে।একই এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের আশঙ্কা, নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে দু-এক দিনের মধ্যে এক থেকে দেড়শ ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
একই এলাকার মো. সাজ্জাদ আলী মৃধার ভাষ্য, তীর ভেঙে যমুনা যেভাবে এগিয়ে আসছে, এতে আশপাশের এলাকার ৮০০ থেকে ৯০০ পরিবারের ঘরবাড়ি ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে। নদীতে বিলীন হলে এদের প্রায় সবাই নিঃস্ব হয়ে পড়বেন।এলাকাবাসী বলছেন, ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙন বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
আলোকদিয়া চরাঞ্চলে ভাঙনে ঘরবাড়ি হারানো বেশ কয়েকটি পরিবার ইতোমধ্যে মুজিব কেল্লায় আশ্রয় নিয়েছে। তবে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মুজিব কেল্লাটিও নদীভাঙনে বিলীন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ওই চরের বাসিন্দা বাবুল হাওলাদারের দাবি, এক সপ্তাহের মধ্যে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি নদীর পেটে গেছে। দ্রুত প্রতিরোধ না করা হলে আসন্ন বর্ষায় ঘরবাড়ি হারাতে পারে তীরের প্রায় দুই হাজার পরিবার।
দ্রুত নদীভাঙন রোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী হোসেন। শিবালয় মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলালের ভাষ্য, প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে নদী-তীরবর্তী শত শত মানুষের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যায়। এক সপ্তাহ ধরে আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন।
নদীভাঙনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন জানিয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বেলাল হোসেন বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি।মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাইনুদ্দিন জানিয়েছেন, তারা নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে ওপর মহলে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। সেটির অনুমোদন পেলেই কাজ শুরুর আশ্বাস দেন।