রাজনীতি

বরিশাল আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত

বরিশাল আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত

গত সিটি নির্বাচনে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সেরিনয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পরে তার নাম উঠে আসে বরিশাল-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায়। মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা তার পক্ষে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করে জমাও দিয়েছিলেন। তবে দখিনের গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সাংসদ ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আবদুল্লাহ।

‘প্রশাসন ব্যবহার করে বাক্স ভরতে দেব না, এবারের ভোট হবে স্বচ্ছ, খেলা হবে পরিচ্ছন্ন’ গত ২৯ নভেম্বর ‘শান্তি’ সমাবেশে দলীয় প্রার্থী জাহিদ ফারুকে উদ্দেশ্যে করে এমন মন্তব্য করে তিব্র সমালোচনার মুখে পড়েন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর।

এমন বক্তব্য দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ তুলে জাহাঙ্গীরের বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে ২ ডিসেম্বর বিক্ষোভ করেছেন জাহিদ ফারুকের অনুসারীরা। বিক্ষোভ সমাবেশে মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন বলেন, একেএম জাহাঙ্গীর বলেছেন আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রশাসনের মাধ্যমে ভোট কেটে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী হতে দেবেন না, আওয়ামী লীগ কখনও ভোট কেটে ক্ষমতায় আসেন নাই। বঙ্গবন্ধু কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশে ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। জাহাঙ্গীর অবশ্যই বিএনপি জামায়াতের এজেন্ট, আমরা এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে তার বহিষ্কারের দাবী জানাই।

মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট আফজালুল করীম বলেন, গত সিটি নির্বাচনে জাহাঙ্গীরেরা নৌকার প্রার্থীর বিরোধীতা করেছিলেন, এবারও তারা নৌকার প্রার্থী জাহিদ ফারুকের বিরোধীতা করছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহ্বান জানাবো অবিলম্বে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙ্গে বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের খায়ের আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি করা হোক।এর আগে রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জাহিদ ফারুক বলেছেন, যদি জনপ্রিয়তা থাকতো তাহলে তাকে (সাদিক আব্দুল্লাহকে) মনোনয়ন দেয়া হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার প্রতি আস্থা রেখেছেন, এজন্য আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

অন্যদিকে ২ডিসেম্বর বিকেলে পার্বত্য শান্তি চুক্তি দিবস উপক্ষে আলোচনা সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর বলেছেন, আমি স্পষ্ট বলেছি এবারের নির্বাচন হবে স্বচ্ছ, এবারের নির্বাচনে মানুষের ঢল নামবে কেন্দ্রে। আর প্রশাসন কোন দলে না, কোন প্রার্থীর না, প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে ভোট গ্রহণ করবেন। এখানে জালিয়াতি করার কোন সুযোগ নাই। একটি গ্রুপ আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছেন, যারা এমন করছেন তারা দলের কেউ না, দলের দূর্দিনের তারা কোথায় ছিলেন? এরা সুবিধাবাদী লোক, যেখানে সুযোগ পায় সেখানেই ডুকে পরেন।

তৃণমূল আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের বর্ষিয়াণ নেতা আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এমপির ছেলে সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের হাল ধরার পর থেকেই দক্ষ নেতৃত্ব দিয়ে সুসংগঠিত করে দেখেছেন দলকে। আর ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত থাকলেও জাহিদ ফারুকের সান্নিধ্য খুবই কম পেয়েছে সদর উপজেলার বাসিন্দারা। সে হিসেবে জাহিদ ফারুকের চেয়ে সাদিক আব্দুল্লাহ তৃণমূলের কাছে বেশ জয়নপ্রিয়।