27 October 2023 , 3:36:54 প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতা বন্ধ এবং মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছে ইউনাইটেড এগেইনস্ট টর্চার (ইউএটি)। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ইউনাইটেড এগেইনস্ট টর্চার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায়।ইউএটি যে ছয়টি আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী সংগঠন দ্বারা গঠিত, তার একটি হলো— ইন্টারন্যাশনাল রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল ফর টর্চার ভিকটিমস (আইআরসিটি)।
আইআরসিটির মহাসচিব লিসা হেনরি বলেন, বাংলাদেশে আমাদের প্রতিনিধিরা বলেছেন— গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন প্রতিদিনই ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে নির্যাতন বাড়ছে। ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার ও নিরাময়ের অধিকার রয়েছে, তাই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং ভুক্তভোগীদের পুনর্বাসন প্রদানের জন্য নির্যাতনের মামলা নথিভুক্ত করার জন্য আমরা বাংলাদেশে আমাদের সদস্য এবং অংশীদারদের সমর্থন করার জন্য একসঙ্গে কাজ করব।
বাংলাদেশ তার জনগণের জন্য নির্যাতন নিষিদ্ধ করার সাংবিধানিক অঙ্গীকারকে বাস্তবে পরিণত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকা ১৯৯৮ সালে নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সম্মেলনে যোগদান করে এবং ২০১৩ সালে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন পাশ করে যা নির্যাতনকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ২০১৯ সাল পর্যন্ত কমিটি এগেনস্ট টর্চার এর কাছে রিপোর্ট করতে অস্বীকার করে।
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের কথা রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রধান বিরোধী দল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বেআইনি, নজিরবিহীন এবং অতিরিক্ত বল প্রয়োগের নীতি অনুসরণ করছে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো। গত বছর থেকে বিরোধী দলগুলোর বিক্ষোভে একাধিকবার গুলি ও রাবার বুলেট ব্যবহার হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করা হয়েছে এবং শত শত মানুষ আহত হয়েছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ডিজিটাল ভেরিফিকেশন ল্যাবের বিশ্লেষণ বলছে, বিক্ষোভকারীদের পুলিশ শোয়া বা নিরস্ত্র এবং পালানোর অবস্থায় মারধর করেছে। জাতিসংঘের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, লাঠিসোটা এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা উচিত নয়, যে না হিংসাত্মক আচরণে জড়িত, না এসবের হুমকি দিচ্ছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, প্রমাণ বহির্ভূতভাবে বিএনপির কয়েক হাজার সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করে কীভাবে বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পদ্ধতিগতভাবে শ্বাসরোধ করা হচ্ছে। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। যিনি ‘গরিবের ব্যাংকার’ হিসাবে পরিচিত, তিনি অসংখ্য মামলার শিকার হয়ে জেলে যাওয়ার মুখে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক নাগরিক সমাজের আইনি হয়রানি বন্ধ করতে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।