2 August 2025 , 7:09:16 প্রিন্ট সংস্করণ
বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড়চোপড় ধুঁতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। তিনি বাড়ি না ফিরলে নদীতে ডুবে গেছে বলে ধারণা করেন স্বজনরা। তখন স্বজন ও এলাকাবাসী নদীতে খোঁজাখুঁজি করেন। খবর পেয়ে ওইদিন রাতে উদ্ধার অভিযান চালায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। তবুও তার সন্ধান না মিললে ঘটনার পরদিন উদ্ধারে নামে খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। তারা প্রায় ১২ ঘণ্টা অভিযান চালায়। তারপরেও সোহানাকে না পেয়ে অভিযান স্থগিত ঘোষণা করে। ফলে তার মা শিরিনা খাতুন ও বাবা গোলাম মওলা শোকে মাতম হলে পরদিন তারা মেয়ের সন্ধান পেতে নদীতে কবিরাজ নামায়। তবুও মেলেনি মেয়ের সন্ধান। অবশেষে ঘটনার ১০ দিন পরে মেয়ে ফোনে তার মাকে জানায় তিনি ঢাকার গাজীপুর এলাকায় তার সাবেক স্বামীর কাছে রয়েছেন। গোলাম মওলা ও শিরিনা দম্পতি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ার বাসিন্দা। ১৯ জুলাই দুপুর থেকে তাদের মেয়ে সোহানা নিখোঁজ ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। গ্রামের মানুষ, ফায়ার সার্ভিসের লোকজনসহ সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে কবিরাজ নামিয়েছিলাম। হঠাৎ বুধবার ওর মায়ের ফোনে কল দিয়ে মেয়ে জানায় তার স্বামীর কাছে আছে। বিষয়টি আজ ( বৃহস্পতিবার) রাতে পুলিশকে জানিয়েছি। এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, প্রায় দুইবছর আগে প্রেমের সম্পর্কের জেরে আপন খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনকে পালিয়ে বিয়ে করেছিল সোহানা। বনিবনা না হওয়ায় প্রায় তিনমাস আগে স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে ছিলেন সোহানা। ১৯ জুলাই বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে দুইটার দিকে এক গামলা কাপড়চোপড় ধুঁতে এবং গোসল করতে গিয়েছিল সোহানা। পরে বাড়িতে ফিরতে দেরি হওয়ায় মা শিরিনা তাকে নদীতে ডাকতে যান। তিনি গিয়ে দেখেন গামলা ভরা কাপড়চোপড় পড়ে আছে, তবে সোহানা নেই। এরপর স্বজন ও স্থানীয়রা নদীতে নেমে খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে কুমারখালী ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। পরে ওইদিন রাত ৮টা থেকে কুমারখালী ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এবং পরদিন ২০ জুলাই সকাল ৮টা থেকে খুলনার ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তাকে না পেয়ে অভিযান স্থগিত ঘোষণা করেন তারা। এরপর মেয়ের সন্ধান পেতে ২১ জুলাই নদীতে এক কবিরাজ নামায় তাঁর মা বাবা। তবুও সন্ধান না পেয়ে শোকে মাতম হয়ে পড়েন তারা। এরপর খোঁজাখুঁজি একপর্যায়ে বুধবার রাতে মাকে ফোন দেন শিরিনা। জানায় ঢাকার গাজীপুরে সাবেক স্বামীর কাছে আছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানায়, খালাতো ভাইকে প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করেছিল সোহানা। পরে বনিবনা না হওয়ায় স্বামীকে তালাক দেন সোহানা। পরে নদীতে নিখোঁজের নাটক করে পালিয়ে ফের সাবেক স্বামীর কাছে গিয়েছে। এ দিকে সবাই নদীতে খোঁজাখুঁজি করে পাগল প্রায়। জামাই গার্মেন্টস শ্রমিক। মেয়ে সেখানে নিরাপদে আছে বলে জানিয়েছেন বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দিয়েছি। সেজন্য ক্ষমা চাই। কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক ( তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম বলেন- প্রথমে পরিবারের লোকজন মৌখিক জানিয়েছিল নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। আজ (বৃহস্পতিবার) আবার তার বাবা জানিয়েছে সোহানা নদীতে নয়, ঢাকায় স্বামীর কাছে আছে।







