লাইফ স্টাইল

পায়ের পেশিতে টান লাগলে যা করবেন যেনে রাখুন

বর্তমান সময়ে কমবেশি অনেকেরই কিছু না কিছু শরীরে সমস্যায় রয়েছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই সতর্ক হয়ে যেতে হবে। কারণ আপনি যদি নিজের মতো করে এই সমস্যার প্রথমেই সমাধান না করতে পারেন, তবে জটিলতা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এদিকে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথার মধ্যে পায়ের যন্ত্রণায় ভোগা মানুষের সংখ্যাই বেশি।

পায়ের মাংসপেশিতে হঠাৎ টান ধরার সমস্যা অনেকেরই হয়ে থাকে। বিশেষ করে রাতে ঘুমের মধ্যে এটা বেশি হয়। তীব্র ব্যথায় ঘুম ভেঙে যায়। কিছুতেই পা আর সোজা বা ভাঁজ করা যায় না। কখনো কখনো একটানা পা ভাঁজ করে রেখে হঠাৎ সোজা করতে গেলে বা সকালে হাঁটা শুরু করার পরও পায়ের পেশিতে টান পড়তে পারে। সাধারণত পায়ের কাফ মাসল বা পেছনের মাংসপেশি আর পায়ের পাতায় এই টান ধরে।

টান ধরার কারণ এই পেশির হঠাৎ শক্ত হয়ে যাওয়া। মাঝেমধ্যে ব্যথা ঊরুতেও উঠে আসে। ব্যথার তীব্রতা কারও ক্ষেত্রে কয়েক সেকেন্ড পর্যন্ত স্থায়ী হয়, আবার কখনো কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে সারা রাত ভোগাতে পারে। যেকোনো বয়সে যে কারওরই হতে পারে এ সমস্যা। তবে বয়স্ক ও নারীদের মধ্যে এই পেশিতে টান পড়ার প্রবণতা বেশি।

আসলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে ভিটামিন ডি-এর অভাব, পায়ের মাংসপেশির শৈথল্য, কোনও আঘাতসহ অন্যান্য কারণে পায়ের মাংসপেশিতে হঠাৎ টান ধরার সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে ঘরোয়া কিছু নিয়মে পায়ের ব্যথা কমানো যেতে পারে। জেনে নিন নিয়মগুলো।

নানা কারণে পায়ের পেশিতে টান লাগে। যেমন—

অতিরিক্ত ব্যায়াম ও পরিশ্রম করলে কিংবা পায়ের পেশিতে বেশি চাপ পড়লে। টানা বসে বা দাঁড়িয়ে কাজ করলে। পানিশূন্যতা। শরীরে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে। গর্ভাবস্থায়, বিশেষ করে শেষ ৩ মাসে।

এ ছাড়া পায়ে রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে, অতিরিক্ত মাদকাসক্তি, বাত, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, কিডনি, হার্টের সমস্যার জন্যও এমন হতে পারে।

যা করা উচিত

পায়ে টান পড়লে দ্রুত পেশিকে রিলাক্স করতে হবে। পেশি প্রসারিত হলে ব্যথাও কমবে। পায়ের পেছনের পেশিতে ব্যথা হলে পা সোজা করে হাত দিয়ে পায়ের আঙুলগুলো নিজের দিকে টানতে হবে, সঙ্গে মাংসপেশিতে হালকা মালিশ বা ম্যাসেজ করা যেতে পারে।

 

পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে পা উঁচু করে রাখতে পারেন। হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে কিছুক্ষণ গরম সেক দিতে পারেন আবার পেশি ফুলে গেলে আইসব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে।

প্রতিরোধের উপায়

নিয়মিত বিশেষ করে ঘুমানোর আগে পায়ের মাংসের স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম করতে হবে। শরীরে পানিশূন্যতা দূর করতে দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে, সঙ্গে ফলের রস, ডাবের পানিও খেতে পারেন।

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার—দুধ, ডিম, বাদাম, কলিজা, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে। ধূমপান, মদ্যপান করা থেকে বিরত থাকুন। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০ মিনিট করে হাঁটার অভ্যাস করুন।

দীর্ঘ সময় একটানা বসে কাজ না করে এক ঘণ্টা পরপর অবস্থান পরিবর্তন বা হাঁটাচলা করতে হবে। তবে সমস্যাটা যদি প্রায়ই হয় কিংবা টান লেগে পেশি ফুলে যায় বা পায়ের চামড়ার রং পরিবর্তন হয়, পা ঝিন ঝিন বা অবশ হয়ে আসে, শরীরের অন্যান্য জায়গায়ও ব্যথা হয়, তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।