জাতীয়

১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী না রাখার প্রস্তাব জনসমাজের

কোনো ব্যক্তির দুই মেয়াদ বা সর্বোচ্চ ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকার প্রস্তাব দিয়েছে ‘পরিবর্তনের লক্ষ্যে জনসমাজ’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়।

 

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় পর্যায়ের উন্নয়ন কর্মী ও সংগঠক এবং ‘জনসমাজ’-এর সমন্বয়ক আবুল হাসিব খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে ‘পরিবর্তনের লক্ষ্যে জনসমাজ’- এর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, কর্মপন্থা, প্রস্তাব ও সুপারিশসমূহ লিখিতভাবে উপস্থাপন করেন ড. আরিফুর রহমান।

 

ড. আরিফুর রহমান জানান, প্রতিষ্ঠানটির প্রস্তাব ও সুপারিশসমূহের অন্যতম হলো- দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, নিম্নকক্ষের মেয়াদ যখন শেষ হয়ে যায় অথবা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ভেঙে দেওয়া হয় তখন উচ্চকক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা। তিনি বলেন, ‘জনসমাজ’ মনে করে, সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তন বা পুনর্লিখনের ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানের চেতনার প্রতিফলন প্রয়োজন।

 

এক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার ঘোষণায় যে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের’ কথা বলা হয়েছে, তা মূল ভিত্তি হতে পারে। ক্ষমতার কেন্দ্রীভূত নয়, ক্ষমতার ভারসাম্য সংবিধানে ধারণ করা বাঞ্চনীয়। ‘জনসমাজের’ অন্যতম প্রস্তাব হলো- কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদ বা সর্বোচ্চ ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকা; ‘জনসমাজ’ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন, পুলিশসহ রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ব্যাপক সংস্কার।

তিনি আরও বলেন, ‘জনসমাজ’ আরও মনে করে, পররাষ্ট্রনীতিতে সম্প্রীতি, আস্থা ও ভারসাম্য বজায় রাখা; বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে এবং ভূরাজনীতিতে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর এলাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ভারত, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সৌদি আরব কেন্দ্রিক মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে ভারসাম্য ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নিয়মিত এনগেজমেন্ট বজায় রাখা।

‘জনসমাজ’ মনে করে যে, সংস্কার-কর্মসূচির বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে পর্যাপ্ত এবং যুক্তিসঙ্গত সময় প্রদান করা বাঞ্চনীয়। এছাড়া, অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য সংস্কার যত সহজ হবে, দলীয় সরকারের পক্ষে তত সহজ হবে না। সংস্কার সম্পন্ন না করে তাড়াহুড়া করে নির্বাচন করলে গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্খিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং জনগণের স্বপ্নপূরণ বাধাগ্রস্ত হবে।

ফলে, ফ্যাসিবাদী প্রবণতা, দুর্নীতি, অবিচার ও অব্যবস্থা, নির্যাতন-নিপীড়ন আবার ফিরে আসতে পারে, যা কাম্য নয়। ‘জনসমাজ’ আশা করে যে, গ্রহণযোগ্য, অর্থবহ নির্বাচনের মাধমে উদার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, আসাম্প্রদায়িক, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের কল্যাণময় বা সোস্যাল ডেমোক্র্যাটিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।