জাতীয়

৩৫৬টি উন্নয়ন ও সংস্কার প্রস্তাব উঠছে

৩৫৬টি উন্নয়ন ও সংস্কার প্রস্তাব উঠছে

চার দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে রোববার (৩ মার্চ)। এবারের ডিসি সম্মেলনে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে আসা ৩৫৬টি উন্নয়ন ও সংস্কার প্রস্তাব উঠছে। শনিবার সচিবালয়ে ডিসি সম্মেলন নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

সচিব জানান, এবারের সম্মেলনের বিশেষত্ব হলো নতুন সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়নে ডিসিদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেবেন।রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের মতো এবারও জেলা প্রশাসক সম্মেলনের মূল ভেন্যু রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন।

সরকারের নীতিনির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতিবছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এবার সম্মেলনে ৩০টি অধিবেশন হবে। এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য-অধিবেশন ২৫টি।

এছাড়া একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে একটি এবং প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, নির্দেশনা গ্রহণ ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে দুটি অধিবেশন হবে। কার্য-অধিবেশনগুলোয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের মন্ত্রী/উপদেষ্টা/প্রতিমন্ত্রী/সিনিয়র সচিব/সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।এবার সম্মেলনে ৫৬টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অংশ নেবে।

অন্য বছর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে একটি সেশন থাকলেও এবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বিদেশে থাকায় সেটি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।এছাড়া সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তবে সেনাবাহিনীর অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে ডিসিদের সৌজন্যে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় হবে।

এবার জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ৩৫৬টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলোয় জনসেবা বাড়ানো, জনদুর্ভোগ কমানো, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনের বিকাশ, আইনকানুন বা বিধিমালা সংশোধন, জনস্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রথমবারের মতো সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। এজন্য আজ (রোববার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উন্নয়নে মাঠ প্রশাসন শীর্ষক এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।বারের সম্মেলনে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ সংক্রান্ত।

এ সংক্রান্ত প্রস্তাব ২২টি। এছাড়া ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন, তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসরণ, স্বাস্থ্যসেবা পরিবারকল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণরোধ এবং উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয় করা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, গত বছর অনুষ্ঠিত ডিসি সম্মেলনে উত্থাপিত ২১২টি প্রস্তাবের ১৩০টি বাস্তবায়ন হয়েছে এবং ৮২টি বাস্তবায়নাধীন। বাস্তবায়নের হার ৬২ শতাংশ। বাস্তবায়ন নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সন্তুষ্ট। বাস্তবতা এবং বাস্তবায়নের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে সাংবাদিকদের করা এমন সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ডিসির অধীনে এমন কাজ হতেই পারে না। তবে প্রকল্পের বিষয় হলে তা খতিয়ে দেখা হবে।

এসি ল্যান্ড থেকে ভূমি মন্ত্রণালয় পর্যন্ত সর্বস্তরে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা, তারপরও ভূমি নিয়ে এত সমস্যা কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে এড়িয়ে যান সচিব।ডিসির বাংলা অর্থ জেলা প্রশাসক কেন-এমন প্রশ্নের জবাবও তার জানা নেই বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এছাড়া ডিসি সম্মেলনে কত টাকা ব্যয় হচ্ছে, তাও সচিবের এ মুহূর্তে জানা নেই বলে জানান তিনি।