9 June 2024 , 4:41:41 প্রিন্ট সংস্করণ
ধূমপান অনেক সামাজিক বিপর্যয় নিয়ে আসে। ধূমপান সামাজিক ও শারীরিক ব্যাধি। অতিরিক্ত ধূমপান করলে ফুসফুসের যে ক্ষতি হয়, এটা আমরা সবাই জানি। ধূমপায়ীদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক। কারণ নিকোটিন ফুসফুসকে ধীরে ধীরে পুড়িয়ে দিতে থাকে। এমনটিই লিখেছে আনন্দবাজার অনলাইন।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সিগারেট পুড়লে ধোঁয়ার সঙ্গে বেঞ্জিন, আর্সেনিক, ফর্মালডিহাইডের মতো কমপক্ষে পাঁচ হাজার রাসায়নিক উৎপন্ন হয়। একটা টান দিলে এসব রাসায়নিকই শরীরে প্রবেশ করে, যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে। ধূমপায়ীরা বুঝতেই পারেন না, তাদের শরীরে কী রোগ বাসা বাঁধছে। ফুসফুসের অবস্থা বেহাল হচ্ছে কিনা, তা জটিল রোগ ধরা পড়ার পরেই বোঝা যায়।
তখন দেরিও হয়ে যায় অনেকটাই।চিকিৎসকরা বলছেন, ধূমপানের কারণে শরীরে কোনো রোগ হচ্ছে কিনা, তা আগাম ধরা যাবে এই পরীক্ষাগুলো করানো থাকলে। ধূমপান যারা করেন, তাদের কয়েকটি শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে রাখা খুব জরুরি।
১. স্পাইরোমেট্রি
স্পাইরোমেট্রি পরীক্ষা করালে ধরা পড়ে ফুসফুসের অবস্থা কেমন। যেসব ধূমপায়ীর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা আছে, শুকনো কাশি হয় তাদের আগে এই টেস্ট করতে বলেন চিকিৎসকরা। ফুসফুসে কোনো সংক্রমণ হচ্ছে কিনা অথবা ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’ বা সিওপিডি হতে পারে কিনা, তা আগাম ধরা যায় এই পরীক্ষা করা থাকলে। দিনে ১০-১২টা সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস কয়েক বছরের মধ্যে সিওপিডিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করে। এই রোগের শুরুতে লাগাতার কাশি ও অল্পস্বল্প শ্বাসকষ্ট থাকে। বেশি পরিশ্রম করলে নিঃশ্বাসের কষ্ট হয়। এসব লক্ষণ ধরা পড়লেই পরীক্ষা করানো জরুরি।
২. বুকের এক্স-রে
ধূমপায়ীদের অনেকেই নিউমোনিয়া ও শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগে ভোগেন। বুকের এক্স-রে করলে চিকিৎসকরা ধরতে পারেন, ফুসফুসে কোনো সংক্রমণ হচ্ছে কিনা। ফুসফুসে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিও কতটা। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, সিওপিডি, ব্রঙ্কাইটিসের উপসর্গও ধরা পড়ে এই পরীক্ষায়।
৩. সিটিস্ক্যান
শুধু বুকের এক্স-রে করে ফুসফুসের সব ধরনের সমস্যা বোঝা যায় না। সে ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান কার্যকরী। ফুসফুসে টিউমার বাসা বাঁধছে কিনা, কোনো ক্ষত তৈরি হয়েছে কিনা, তা ধরা যায় এ পরীক্ষায়। সিটিস্ক্যান করে ফুসফুসে অস্বাভাবিক কিছু দেখলে তখন ধূমপান দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
৪. ইসিজি
দীর্ঘ সময় ধরে যারা ধূমপান করছেন, তাদের একটি ইলেকট্রোকার্ডিয়োগ্রাম (ইসিজি) করিয়ে রাখা ভালো। এতে বোঝা যায়, হার্টের অবস্থা কেমন। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে গেছে কিনা, ধমনীতে রক্ত জমছে কিনা, তা ধরা যায় এই পরীক্ষায়।