29 May 2024 , 12:24:03 প্রিন্ট সংস্করণ
সুবাস নয়, এ ফুলের পরিচিতি তার দুর্গন্ধের জন্য৷ এর পোশাকি নাম কর্পস ফ্লাওয়ার বা শবফুল। এই ফুলের গন্ধ পচা মানবদেহের মতো। তবে তার পরও হাজার হাজার মানুষ এক বার তার কাছে যেতে চায়।আকার ও আকৃতির জন্য এই ফুলের আর এক নাম পেনিস প্ল্যান্ট। প্রস্ফুটিত এই ফুলের দিকে তাকালে এক ঝলকে মনে হয় পু.রু.ষা.ঙ্গের কথা। এই ফুল খুবই বিরল।
নেদারল্যান্ডসে প্রায় ২৪ বছরের মধ্যে এই প্রথম ফুটেছে বিরল প্রজাতির পেনিস প্ল্যান্ট। ইউনিভার্সিটি অব লেইডেনের বোটানিক্যাল গার্ডেনে সাড়ে ছয় ফুট লম্বা একটি পেনিস প্ল্যান্ট গাছে ফুলটি ফুটেছে। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে লেনডেন হটার্স বোটানিক্যাল গার্ডেনে পেনিস প্ল্যান্টে ফুল ফোটার ঘটনা ঘটেছিল।পেনিস প্ল্যান্ট বিরল প্রজাতির একটি গাছ এবং এতে একবার ফুল ফুটতে ২০ বছর বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে।
চুরুটের মতো গাছের আকার এবং অস্বাভাবিক গঠনের ফুলের কারণে এটি পেনিস প্ল্যান্ট হিসেবে পরিচিত। তবে এর বৈজ্ঞানিক নাম আমোরফোফ্যালাস ডেকাস-সিলভি। লেইডেনের বোটানিক্যাল গার্ডেনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ইউরোপের ইতিহাসে এ নিয়ে মাত্র তৃতীয়বারের মতো পেনিস প্ল্যান্ট গাছে ফুল ফোটার ঘটনা ঘটল।ইন্দোনেশিয়া ও জাভা অঞ্চল এই গাছের আদি উৎপত্তিস্থল।
নির্দিষ্ট পরিবেশ দরকার হয় বলে গাছটির পরিচর্যা করা অত্যন্ত কঠিন। আর কোনোভাবে গাছের পরিচর্যা করা গেলেও ফুল ফোটার ঘটনা খুবই বিরল।ইউনিভার্সিটি অফ লেইডেনের বোটানিক্যাল গার্ডেনে ২০১৫ সালে গাছটি রোপণ করেন এক স্বেচ্ছাসেবক। গাছটিতে ১০ বছরে সাধারণত একবার ফুল ফোটে। তবে ছয় বছরের অপেক্ষা শেষে গত সেপ্টেম্বরে ফুল ফুটোর আভাস পান বোটানিক্যাল গার্ডেনের কর্মীরা।
অবশেষে ফুলের দেখা পাওয়া যায় গত ১৯ অক্টোবর। এরপর মাত্র কয়েকদিন টিকে ছিল ফুলটি।আমোরোফ্যালাস ডেকাস-সিলভি পেনিস প্ল্যান্ট হিসেবে পরিচিত তিনটি গাছের একটি। একই প্রজাতির আরেকটি গাছ আমোরফোফ্যালাস টাইটেনিয়াম পরিচিত কর্পস ফ্লাওয়ার বা শব ফুল হিসেবে।হোর্টাস বোটানিকাস অফ লেইডেনের এক ইন্সটাগ্রাম পোস্টে দেখা যায়, সাড়ে ছয়ফুট উচ্চতার শক্তভাবে খাড়া পেনিস প্ল্যান্টের কান্ডে ১.৬ ফুট লম্বা ফুল ফুটেছে। বিরল গাছটি দর্শনীয় হলেও ফুলের গন্ধ পচা মাংসের মতো।
বোটানিক্যাল গার্ডেনের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, ‘স্ত্রী ফুল ফোটার পর তাপের কারণে স্প্যাডিক্স (ফুলের লম্বা আকৃতির অংশ) থেকে এক ধরনের পচা গন্ধ বের হয় যা পচনশীল মাংসের মতো। মাছি বা অন্যান্য পরাগবাহী কীট এ গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে কাছে ছুটে আসে। এরা গাছ থেকে পরাগ অন্য আমোরোফ্যালাস ডেকাস-সিলভি গাছে নিয়ে যায়।ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়, ‘আমোরোফ্যালাস ডেকাস-সিলভি গাছটি খুবই দুর্লভ ও খুব বেশি বোটানিক্যাল গার্ডেনে এটি নেই।
এ কারণে এতে ফুল দেখতে পাওয়া বিশেষ এক অভিজ্ঞতা। বছরের পর বছর গাছে যখন ফুল থাকে না তখন এর শিকড়ে খাদ্য জমা হয় এবং শুধু পাতার জন্ম দিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে। ফুল ফোটার পর পাতা জন্মানোর চক্র আবার শুরু হয়।গাছটির কারণে বোটানিক্যাল গার্ডেনে অনেক দর্শক এসেছেন বলে জানান সেখানকার গ্রিনহাউস ম্যানেজার রকির ফন ফুখট।
তিনি নেদারল্যান্ডসের সংবাদমাধ্যম ওমরেপ ওয়েস্টকে বলেন, ‘অ্যামোরফোফ্যালাস মানেই হচ্ছে আকৃতি ছাড়া পু.রু.ষা.ঙ্গ। একটু কল্পনা করলেই গাছে একটি পু.রু.ষা.ঙ্গ দেখা সম্ভব। এর একটা লম্বা দেহ আছে যার ওপরে শিরাযুক্ত একটি অ্যারাম রয়েছে। আর মাঝখনে একটা সাদা ও মোটা স্প্যাডিক্স আছে।’ এই গাছ দর্শনীয় হলেও এর ফুলের গন্ধ পচা মাংসের মতো।