লাইফ স্টাইল

মাংসপেশিতে ব্যথা ও টান পড়লে

মাংসপেশিতে ব্যথা ও টান পড়লে

মাংসপেশিতে টান পড়া বা শরীরের কোনো অংশ মচকানো বেশ সাধারণ একটি সমস্যা। একে বিশেষজ্ঞের ভাষায় মাসল পুল, মাসল সোরনেস, স্ট্রেইন, স্প্রেইন, ক্র্যাম্প, স্প্যাজম ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে।

এতে শরীরের ওই অংশটিতে ভীষণ ব্যথা হয়।ল্যাকটিক অ্যাসিড নিঃসরণের জন্য জ্বালা-পোড়া করে। এ কারণে মাংসপেশি নাড়াচাড়া করা যায় না। গরমে এ সমস্যায় অনেকের আক্রান্ত হচ্ছেন।

* মাসল পুলের কারণ

▶ শরীরের যে কোনো একটি মাংসপেশি অনেকক্ষণ ধরে ব্যবহৃত হলে।

▶ ব্যায়াম, খেলাধুলা বা যে কোনো শারীরিক কসরতের আগে ওয়ার্মআপ বা শরীর গরম না করলে।

▶ পেশি ক্লান্ত থাকা অবস্থায় আকস্মিক নড়াচড়া করলে।

▶ হঠাৎ অতিরিক্ত ভারী কিছু উঠালে।

▶ পেশির অতিরিক্ত ও অনুপযুক্ত ব্যবহার।

▶ মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা।

▶ অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, বিশেষ করে পানি কম খেলে এবং শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব দেখা দিলে মাংসপেশিতে টান পড়তে পারে।

* কখন বুঝবেন মাসল পুল হয়েছে

▶ যদি পেশিতে অনেক ব্যথা হয়। পেশি অনেক দুর্বল হয়ে যায়।

▶ আঘাতপ্রাপ্ত জায়গাটি যদি ফুলে ওঠে বা লালচে দাগ পড়ে।

▶ আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে স্বাভাবিক ওজন নিতে কষ্ট হলে।

▶ মাংসপেশি আপনা আপনি অনেক শক্ত হয়ে পড়লে।

* কী করবেন

মাংসপেশিতে টান খাওয়ার প্রথম কয়েকদিন চারটি ধাপে এর চিকিৎসা করতে হবে। যাকে সংক্ষেপে রাইস থেরাপি (RICE) বলা হয়। এর মাধ্যমে ব্যথা অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়। রাইস থেরাপির ৪টি ধাপ হলো-রেস্ট, আইস, কমপ্রেশন ও এলিভেশন (RICE-rest, ice, compression and elevation)

▶ রেস্ট বা বিশ্রাম : সব ধরনের শারীরিক ব্যায়াম বা ক্রিয়াকলাপ বন্ধ রাখতে হবে। আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে কখনো কোনো ওজন নেওয়া যাবে না।

▶ আইস বা বরফ : আঘাতের স্থানে দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর ২০ মিনিটের জন্য বরফের ব্যাগ দিয়ে রাখুন।

▶ কমপ্রেশন বা সংকোচন : আঘাতপ্রাপ্ত স্থানটির নাড়াচাড়া নিয়ন্ত্রণে একটি ব্যান্ডেজ দিয়ে মুড়িয়ে নিতে হবে।

▶ এলিভেট বা উঁচু করা : আঘাতের স্থানটি যতটা সম্ভব বালিশের ওপরে উঠিয়ে রাখতে হবে।

* ব্যায়াম

পেশিতে টান পড়লে, যে পায়ের পেশিতে টান পড়ল দ্রুত সে পায়ের পেশিকে শিথিলায়ন বা রিলাক্স করতে হবে। এতে পেশি প্রসারিত হবে এবং আরাম পাবেন। পেশিকে প্রসারিত করার নিয়ম হলো, আপনার যদি হাঁটুর নিচে পায়ের পেছনের মাসলে টান লাগে তাহলে পা সোজা করে হাত দিয়ে পায়ের আঙুলের মাথাগুলো ধরে নিজের দিকে আস্তে আস্তে টানুন। আর যদি সামনের দিকে হয় তাহলে পা ভাঁজ করে পায়ের আঙুলের মাথাগুলো পেছনের দিকে টানুন।

অনেক সময় উরুর পেছনেও এমনটা হয়, তখন চিৎ হয়ে শুয়ে পা ভাঁজ করে হাঁটু বুকের দিকে নিয়ে আসুন যতটুকু পারা যায়। আর উরুর পেছনের পেশিতে আলতো হাতে আস্তে আস্তে মালিশ করুন। এতে আরাম পাবেন। আর যদি পেশি শক্ত হয়ে আসে তখন ওয়াটার ব্যাগ বা হট ব্যাগের মাধ্যমে আক্রান্ত পেশিতে কিছুক্ষণ গরম সেঁক দিন। যদি পেশি বেশি নরম ও ফুলে যায় আর ব্যথা থাকে তাহলে তাতে আইস ব্যাগ দিয়ে ঠান্ডা সেঁক দিন। এতে বেশ আরাম পাবেন। প্রত্যেকের বাসায় ব্যথানাশক বাম বা জেল থাকে, তা দিয়ে আলতো হাতে মালিশ করা যেতে পারে এই পেশিতে।