শিক্ষা

পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা জন্ম থেকেই নেই দুই হাত

জন্ম থেকেই দুই হাত নেই সিয়াম মিয়ার। কিন্তু এই সীমাবদ্ধতা দমাতে পারেনি তাকে। পা দিয়ে লিখেই পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে সিয়াম। পিএসসি ও জেএসজি পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে ভালো রেজাল্ট করেছে। এবার মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে সিয়াম।

জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদানপাড়া গ্রামের দিনমজুর জিন্নাহ মিয়ার ছেলে সিয়াম।উপজেলার চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে সিয়াম।

উপজেলার হরখালি মজিবুর রহমান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে তার।ওই কেন্দ্রের ৩০৩ নম্বর কক্ষে তার আসন। সকালে সিয়ামকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে আসেন তার মা। পরীক্ষা কেন্দ্রে তার বসার জন্য কাঠের নিচু টুলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে খাতা ও প্রশ্নপত্র পেয়ে পা দিয়েই লেখা শুরু করে সিয়াম।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উদানপাড়া গ্রামের দিনমজুর জিন্নাহ মিয়া ও জোসনা বেগম দম্পতির ছেলে সিয়াম। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট সে।

২০০৬ সালে জন্ম নেওয়া সিয়াম পিএসসি পরীক্ষাতে পা দিয়ে লিখে জিপিএ ৪ দশমিক ৮৩ পেয়েছে। বড় বোন ও ভাই স্নাতক পাস করেছেন। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ভাই চাকরি খুঁজছে।জন্মের পর দরিদ্র এই পরিবারে অভাবের বিষাদ নেমে এলেও সিয়ামের পড়ালেখা থেমে যায়নি।

শত প্রতিকূলতার মধ্যেও সে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। হাত না থাকায় দৈনন্দিন কাজ পা দিয়েই করে সে। তার কাজে তাকে সহযোগিতা করে পরিবার।সিয়ামের মা জোসনা বেগম বলেন, ‘সহপাঠী ও বন্ধুদের সহয়তায় সিয়াম তার পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে।

তার ইচ্ছে পড়ালেখা করে সরকারি বড় কর্মকর্তা হবে।সিয়ামের সহপাঠী ও শিক্ষকরা জানায়, পা দিয়ে লিখলেও সিয়ামের লেখা অনেক ভালো। সে নিয়মিত স্কুলে আসে।সিয়ামের বাবা জিন্নাহ মিয়া বলেন, ‘অভাব-অনটনের সংসারে সিয়ামের পড়ালেখার খরচ চালাতে অনেক কষ্ট হয়।

ভিটেমাটি ছাড়া আর কোনো সম্পত্তি নেই। অনেকেই সহায়তা করার কথা দিলেও পরে কেউ খোঁজ নেয় না।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা কেন্দ্রে সব সুযোগ-সুবিধাই দেওয়া হচ্ছে সিয়ামকে।

যদিও সে স্বাভাবিক ছাত্রদের মতো নির্ধারিত সময়ের ভেতরেই পরীক্ষা শেষ করছে। এবারও সে ভালো ফল করবে আশাকরি।

আরও খবর

Sponsered content

%d bloggers like this: