জাতীয়

মার্কেটে কোনো ধরনের ফায়ার সেফটি ছিল না বললেন ফায়ার সার্ভিস

ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস অ্যান্ড ম্যানটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়ের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। ফুটপাত ও সড়কে দোকান থাকা ও মানুষের কারণে ফায়ার নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে।

এখানে পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না।তিনি বলেন, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আগুন লাগার খবর পাওয়ার ৯ মিনিটের মাথায় আমরা এখানে চলে আসি। তিনটা ৫২ মিনিট থেকে আমরা এখানে আগুন নির্বাপনের চেষ্টা করি। আমরা ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছি। ১৭টি ইউনিটে ১৫০ জন ফায়ার ফাইটার কাজ করেছে। আমাদের সাথে বিজিবি পুলিশ র্যাব সেনাবাহিনী নৌবাহিনী সহযোগিতা করেছে।তিনি বলেন, আগুন লাগা এই মার্কেটটিতে কোনো সেফটি প্ল্যান নাই।

এই মার্কেটটিতে বারবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে গণসংযোগ করা হয়েছে। সচেতনতার প্রোগ্রাম যেভাবে আমরা করেছি সেভাবে তারা সাড়া প্রদান করেন নাই। এই মার্কেটটা কিছুটা বঙ্গবাজার টাইপের। এখানে ভিতরে অনেক সাব হয়েছিল ছোট ছোট কিন্তু ছোট ছোট এবং ভিতরে যতগুলো রাস্তা এবং বাইরের যে ছোট ছোট রাস্তা পুরোটাই বিভিন্ন মালামালে দিয়ে গাদাগাদি করে রাস্তাটা বন্ধ করা ছিল। এবং পুরো মার্কেট টাইট ফ্লবসিবল গেট দিয়ে আটকানো ছিল।

তাজুল ইসলাম বলেন, এখানকার নাইট গার্ড যারা ছিলেন তারা বাহিরে ছিলেন। তাদেরকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি তেমন একটা। আমাদেরকে ব্যাক পেতে হয়েছে ভিতরে ফায়ার ফাইটারদের প্রবেশ করতে। তালা ভেঙ্গে এবং ক্লবসিবল গেট ভেঙ্গে আমাদেরকে ভিতরে যেয়ে তারপর আগুন নির্বাপনের চেষ্টা করি। এ মার্কেটের বাইরেও বিভিন্নভাবে রাস্তাগুলো দখল করা ছিল। দোকানের সামনে ছোটখাটো দোকান আমাদের একটা কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এগুলোর জন্য আমাদেরকে ব্যাক পেতে হয়। আমরা আশার পরই আগুনের মাত্রা অনেক বেশি দেখেছি। একটা পর্যায়ে মার্কেটের প্রায় চার ভাগের তিনভাগ সম্পূর্ণ আগুন ধরে যায় এবং আমরা চেষ্টা করি এই মার্কেটের ভিতরে যেন আগুনটা আবদ্ধ থাকে। আমাদের ফায়ার ফাইটাররা সর্বাত্মক চেষ্টা করে আগুনটাকে একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখতে পেরেছে।তিনি বলেন, আমরা এখন যেটা করছি আগুনটা নির্বাপনের চেষ্টা চলছে। আগুনটা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে তবে নির্বাপনে কিছুটা সময় লাগবে।

এর আগে আগুন লেগেছে তখন কি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেননি। সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতি সপ্তাহে শনিবারে গণসংযোগ করি। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় মার্কেটের প্রতিনিধিদেরকে ডেকে আমরা অনেকবার আলোচনা করেছি অনেক ওয়ার্কশপ করেছি। মার্কেটের যারা মালিকপক্ষ তাদেরকে ডেকে আমরা বুঝিয়েছি সচেতনতার প্রোগ্রাম আমরা কিভাবে করব। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং উনাদেরকেই করতে হবে।

এই মার্কেটে প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং এর কোন ইকুইপমেন্টই ছিল না। কোনো ধরনের পানির সোর্স ছিল না। আমরা সব থেকে বেশি ব্যগ পেয়েছি পানির সোর্স। এখানে বিভিন্ন ভবনে পানির সোর্স রয়েছে কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। খুব দ্রুত আমাদের পানি শেষ হয়ে যায়। আমরা বিশেষ পানি বাহিত গাড়ি এনে এবং অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় আমরা এই কার্যক্রমগুলো করি।

আগুন নেভানোর এত সময় লাগার আরও বড় কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগুন নেভানোর আরেকটি বড় কারণ ছিল মানুষের ভিড়। মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের পুলিশ বিজিবি তারা খুবই হিমশিম খেয়েছে। এই ভিড়ের কারণে আমাদের এত সময় লেগেছে। যদিও মানুষ চেষ্টা করতে চায় আমাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য কিন্তু আদৌ এটা আমাদের অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আগুনের সূত্রপাত আমরা তদন্ত করে দেখার চেষ্টা করবো জানার জন্য। তবে যতটুকু বুঝেছি মুদির দোকানের যেই অংশটি ছিল ওই অংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যারা ছিল তাদের দুই একজন কিছুটা আহত হয়েছে। এর বাইরে কোনো বড় ধরনের হতাহতের তথ্য নেই।