সারা দেশ

আবারও গ্যাস সংকট থুবড়ে পড়েছে কারখানার উৎপাদন

আবারও গ্যাস সংকট থুবড়ে পড়েছে কারখানার উৎপাদন

গাজীপুরের কালিয়াকৈর শিল্পাঞ্চলে ফের গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে চাহিদার চেয়ে কম গ্যাসের চাপ থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে এ শিল্পাঞ্চলের অসংখ্য শিল্পকারখানার স্বাভাবিক ও দৈনন্দিন উৎপাদন। এমন পরিস্থিতিতে নিদিষ্ট সময়ে বায়ারের চাহিদা মতো পণ্য রপ্তানি করা নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন সংশ্লিষ্ট কারখানার কর্তৃপক্ষ। জানাগেছে, গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের প্রতিটি এলাকায় কম বেশি গ্যাসের সংকট চলছে গেল কয়েক মাস ধরে।

এর মধ্যেও বিভিন্ন কৌশলে দৈনিক উৎপাদন টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়ে হয়ে উঠে ছিল কারখানা মালিকরা। তবে গেল দুই সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, এখন স্বাভাবিক উৎপাদন প্রতি দিনই ব্যাহত হচ্ছে।সরেজমিনে, কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন কারখানা ঘোরে সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে জানাগেছে, এই মহূর্তে গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, ডাইং, নিটিং ছাড়াও আরও যেসব অন্যান্য রপ্তানি মুখি শিল্প কারখানা রয়েছে।

প্রত্যেকটি কারখানায় গ্যাসের কম বেশি সংকট দেখা দিয়েছে। এমন কি পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে এসেছে।গ্যাসের অভাবে বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং তা প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। চলমান সংকটে কারখানার জেনারেটর ব্রয়লার ডাইং সেকশনসহ গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় কোম্পানিকে লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।গ্যাস সংকটে পড়ে হাবুডুবু খাওয়া এমন একাধিক কারখানার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমে জানিয়েছেন আর মাত্র কিছু দিন পরেই রোজা।

রোজার মাসে শ্রমিকদের দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করানো অমানবিক হয়ে পড়ে। এ জন্য রোজার পূর্বেই কারখানা মালিকরা অতিরিক্ত কাজ করার মাধ্যমে বায়ারের চাহিদা মতো টার্গেট পুরণ করে থাকেন। এ ভাবে কাজ করার ফলে ঈদের সময় শ্রমিকদের ছুটি প্রদান ও উৎস বোনাসসহ সকল বেতন-ভাতা সঠিক সময়ে এবং সঠিক ভাবে দেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু এখন যে ভাবে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে সঠিক সময়ে পণ্য রপ্তানি করতে না পারলে সকল সমস্যার সৃষ্টির শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বিভিন্ন কারখানা সূত্রে জানাগেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় ৩ শতাধিক শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। গত কয়েক মাস ধরে এসব শিল্প কারখানায় গ্যাস সংকট দেখা দেওয়ায় উৎপাদন কমে তা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এ ভাবে যদি আগামী ১/২ সপ্তাহ চলতে থাকে। তাহলে মালিক-শ্রমিক উভয়ের কাঁপালে শনি নেমে আসবে।কারখানার উৎপাদন কমে গেলে প্রতিষ্ঠানের উপার্জন করে যায়। আর উপার্জন কমে গেলে কারখানার উচ্চ ব্যায় বহন করে শ্রমিকদের বেতন ভাতা প্রদানে গড়িমসি সৃষ্টি হয়।

উপজেলার গোমতী টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার সিও জাহিদুর রহমান আনিস বলেন, গত কয়েক মাস ধরে গ্যাস সংকট চলছে। ১০ দিন ধরে এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। গ্যাস সংকটে ফ্যাব্রিকস ডাইং করাতে না পারায় প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। ব্রয়লার মেশিন চলে না, ডাইং মেশিন চালু দিলে গ্যাসের কারণে কাপড়ের রং বদলে যায়। শিপমেন্ট সময়মতো দেওয়া যাচ্ছে না।তিনি আরও বলেন,এখন আমরা যে সময় পার করছি।

এটা হলো কারখানার উৎপাদন ও শিপমেন্ট এর সময় প্রচুর পরিমাণে গ্যাসের চাপ থাকতে হবে। তাহলে পণ্য উৎপাদন সঠিক সময়ে করা যাবে। কিন্তু কি হচ্ছে গ্যাস বিল আগের তুলনায় অনেক বেশি দিতে হচ্ছে। উৎপাদন সাংঘাতিকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। লাখ লাখ টাকা প্রতিদিন লোকসান হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আসন্ন ঈদে শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।

এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি কালিয়াকৈর জোনের সহকারী প্রকৌশলী মাসুদ বিন ইউসুফ বলেন, চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ কম। কবে ঠিক হবে বলতে পারছি না। চেষ্টা চলছে ওই অবস্থা থাকবে না। আশা করি সংকট কেটে যাবে। তিনি বলেন, আগে যে পরিমাণে মেইন লাইনে গ্যাস সরবরাহ পাওয়া যেতো। এখন সে ভাবে আমরা পাচ্ছি না। এজন্য জুন ভিওিক গ্যাস সরবরাহ আমরাও সঠিক ভাবে করতে পারছিনা। তিনি বলেন, এটা খুব শিগগিরই সমাধান হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।

আরও খবর

Sponsered content

%d bloggers like this: