জাতীয়

জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারলেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, জনগণ যেখানে সত্যিকার অর্থে স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে, তা মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারলে আমাদের সার্থকতা হবে। এর সঙ্গে আরেকটি বিষয় যুক্ত হয়েছে ক্রেডিবিলিটি। আমাদেরকে সমন্বিতভাবে চাইতে হবে এবং এটি বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে নির্বাচন কমিশনের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা জানান।তিনি বলেন, নির্বাচন কোনো সহজ কর্ম নয়। আমাদের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি সর্বোচ্চ ধাপে পৌঁছায়নি। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেখানে নির্বাচন নিয়ে হা-হুতাস করতে হয় না। বিশেষ করে ইউরোপের অনেকগুলো দেশ, যেখানে নির্বাচনগুলো খুব শান্তিপূর্ণভাবে হয়ে যায়। ওরা গণতন্ত্রের একটা বিশেষ অবস্থানে গিয়ে স্থির হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। কাজেই প্রস্তুতি প্রয়োজন। যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন, তাদের প্রশিক্ষণে উপযুক্ত করা হবে। ৯ লাখের মতো নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবেন। ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব উপলব্ধি করতে হবে। রিটার্নিং অফিসারের যে দায়িত্ব ও ক্ষমতা, তা বর্ধিত এবং দায়িত্বপূর্ণ করা হয়েছে।এদিকে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে।শনিবার (০২ সেপ্টেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রথম ধাপে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষক (টিওটি) কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।এ সময় আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এ অনুষ্ঠানে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন। প্রতিব্যাচে শতাধিক প্রশিক্ষক নিয়ে তিন হাজার ২০০ জনকে টিওটি দেওয়া হবে।

ইসি আনিছুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের গোড়ার দিকে অর্থাৎ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে আমরা এখনও কোনো ভোটগ্রহণের কোন তারিখ ঠিক করিনি। আজকের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়ে গেল।তিনি বলেন, আপনারা যারা এখান থেকে প্রশিক্ষণ নেবেন তারা প্রথমে অঞ্চলভিত্তিক প্রশিক্ষণ করাবেন। এরপর অঞ্চলে যারা প্রশিক্ষিত হবেন তারা জেলা পর্যায়ে এবং জেলার প্রশিক্ষিতরা উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেবেন। সাধারণত নির্বাচনের কয়েকদিন আগে আমি নিজেও দুবার সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছিলাম।

ইসি আনিছুর রহমান বলেন, আমাদের ইলেকশনের তিন-চারদিন আগে অল্প সময়ের জন্য, তারপরে এরকম তিন-চারদিন আগে ট্রেনিং করা হতো। সেই সময় কোনো প্রশ্ন বা কোনো জবাব দেওয়ার সুযোগ ছিল না। কারণ দু-তিনদিনের মধ্যে অনেক কাজ করতে হতো। ওই সময় কাজের তুলনায় লোকবল ছিল না। এখন লোকবল পাওয়া যাচ্ছে। সীমাবদ্ধতা থাকবে তবে আমার ধারণা, আপনারা আইন-কানুন বিধি-বিধান সম্পর্কে জানবেন।তিনি আরও বলেন, প্রিসাইডিং অফিসারের ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি ভোটের দিনে। না জানার কারণে অনেকে বিষয়টা জানেন না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেও করণীয় আছে, আইনে প্রিসাইডিং অফিসারের ভোট বন্ধ করারও ক্ষমতা দেওয়া আছে। সে সময় ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া থাকে, তা-ও কাজে লাগানোর সুযোগ আছে।

নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, আমাদের চাকরিতে ঢুকেছি তখন নির্বাচনে কোনোরকম প্রশিক্ষণই হতো না। কিন্তু নির্বাচন তো ঠিকই করতাম। তারপরও নির্বাচন নিয়ে কোনোরকম কথাবার্তা হতো না। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে ততই সবকিছু জটিল হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে নির্বাচনও জটিল হয়ে গেছে। এই জটিল হওয়ার কারণে এতো আইনকানুন ও এতো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। আমাদের নির্বাচন আইন আছে, সেগুলো আপনারা দেখে বা পড়ে নিবেন। আপনাদের কাছে বেশি কথা না বলাই ভালো। নিজে পড়লেই জানা যায় সবকিছু।নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, আপনারা আইনকানুনগুলো ভালো করে দেখে নেবেন, পড়ে নেবেন।

নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করবেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য করার চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান বলেন, কঠিন প্রশিক্ষণ সহজ যুদ্ধ। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার জন্য সকলের সহযোগিতা দরকার। যত সুন্দরভাবে প্রশিক্ষণ হবে, ততই একটা সুন্দর নির্বাচন হবে। আমরা দায়িত্ব নিয়ে ১ হাজার নির্বাচন সুন্দর ও অবাধভাবে করেছি। কোনো কথা ওঠেনি সেসব নির্বাচন নিয়ে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ভূমিকা অনেক। একটা সুন্দর সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনে ভূমিকা রাখেন।

আরও খবর

Sponsered content

%d bloggers like this: