জাতীয়

রাজধানী আতঙ্কে তিন দলের সমাবেশকে ঘিরে

দেশের চির রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ডাকা শনিবারের সমাবেশের ঠিক আগে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে এবং অনেক সাধারণ জনগণের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে এই আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে পুলিশের নিষেধ উপেক্ষা করে জামায়েতের সমাবেশের ঘোষণা।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য ছোট বিরোধী দলগুলোও একই ধরনের সমাবেশের পরিকল্পনা করছে। সমাবেশ চলাকালে সম্ভাব্য সহিংসতা ঠেকাতে রাজধানীতে হাজার হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী-পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্যান্য সংস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এবং এর উপকণ্ঠে স্থাপিত চেকপোস্টগুলোকে ম্যানেজ করছেন অনেকে। ঢাকাগামী বাসে যাত্রীদের চেক করতে দেখা গেছে পুলিশকে। শহরের প্রবেশপথে নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে।

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার সেলিম রেজা বলেন, আগামীকাল দুই দলের মহাসমাবেশ সঙ্গে জামায়াত অনুমতি না পেয়েও সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। এ অবস্থায় অনেক আতঙ্কে আছি। কখন কি হয় বলা যায় না। তাই কাল বাসা থেকে বের না হওয়ার চিন্তা ভাবনা করছি।কারওয়ান বাজার এলাকার রিকশাচালক নিজামউদ্দিন বলেন, কাল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ আবার শুনলাম জামাতেরও। তাই কাল গাড়ি নিয়ে বের হব না। কখন কোথায় কি হয়। আমরা গরিব মানুষ ঝামেলায় পড়তে চাই না।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছ থেকে তাদের নিজ নিজ স্থানে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে। জামায়াত অবশ্য ডিএমপির কাছ থেকে কোনো অনুমতি পায়নি।বিএনপি, জামায়াত এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচনের তদারকি এবং অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়ার এবং একটি নির্দলীয় প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছে।

আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হওয়ার কথা। বিএনপিও তাদের অসুস্থ চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে। বিরোধীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা উল্লেখ করে নির্বাচন আয়োজনে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। তারা বলেছে, বর্তমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিধান নেই।

রাজনৈতিক অচলাবস্থা অব্যাহত থাকায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। সেখানে শনিবার বিএনপিকে কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টি না করার হুঁশিয়ারি দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি তার দলের সদস্যদের বলেছেন, বিএনপি সহিংসতার হুমকি দিচ্ছে, কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।

এদিকে হাজার হাজার বিএনপি নেতা-কর্মী দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নয়া পল্টনে অবস্থান নেয়। তারা পুলিশ ও আওয়ামী লীগের বাধার অভিযোগের ভয়ে তাড়াতাড়ি পৌঁছে গেছে বলে জানা যায়। বিকালে তাদের অনেকেই শনিবারের বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিয়ে রাস্তায় বসতে শুরু করেছেন, যাকে তারা মহাসমাবেশ বলছেন। তবে উভয় দলই তাদের সমাবেশ শান্তিপূর্ণ করার অঙ্গীকার করেছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে। এটা আমাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বের সূচনা। আমরা জয়ী হব।ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের নেতারা এবং নগরবাসীও চান রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে ও সহিংসতা ছাড়াই পালন করুক।

আরও খবর

Sponsered content