পরিবেশ

কুষ্টিয়া পৌরসভার ফটকের সামনে বর্জ্য ফেলে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বিক্ষোভ

মজুরি বাড়ানোর দাবিতে কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রধান ফটকের সামনে বর্জ্য ফেলে আন্দোলন করেছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। গতকাল রবিবার (১৩ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে পৌরসভার প্রধান ফটকের সামনে ভ্যানে করে ময়লা এনে ফেলা শুরু করেন তাঁরা। তাঁরা পৌরসভার কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এতে পৌরসভার সেবা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। আন্দোলনকারীদের দাবি, কুষ্টিয়া পৌরসভায় বিভিন্ন মজুরিতে অন্তত ৪৮০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করছেন। দুই ঘণ্টার কাজে সর্বনিম্ন মজুরি ৬০ টাকা আর দৈনিক সর্বোচ্চ মজুরি ২৭৫ টাকা। মাসের ৩০ দিন কাজ করলেও তাঁদের মজুরি দেওয়া হয় ২৯ দিনের। অসুস্থ হয়ে কাজে না এলে সেদিনের মজুরিও কাটা হয়। চিকিৎসার জন্যও কোনো সহায়তা মেলে না। আন্দোলনকারীরা আরও জানান, গত আট মাস আগে মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল। সে সময় দুই মাসের মধ্যে মজুরি বৃদ্ধির আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আট মাস পার হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিষয়টি জেলা প্রশাসক, পৌরসভার প্রশাসক, শ্রম অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। রবিবার সকাল ৯টার দিকে কয়েকটি ভ্যানে করে ময়লা এনে পৌরসভার প্রধান ফটকের সামনে ফেলে দেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, পুরো ফটকের সামনের এলাকা ময়লায় ভরে আছে। অনেকে নাক চেপে পৌরসভায় প্রবেশ করছেন। দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা পরিচ্ছন্নতাকর্মী জীবন কুমার বলেন, মাসের পর মাস আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু মজুরি বাড়ে না। বাধ্য হয়ে আজ ময়লা ফেলে প্রতিবাদ করছেন। আরেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের দিনরাত কাজ করিয়ে নেয়, কিন্তু সেই তুলনায় কোনো মজুরি দেওয়া হয় না। আমাদের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়। অথচ আমরায় সবচেয়ে মূল্যবান কাজ করে দিই। আমাদের প্রতি কেন এই অবহেলা।’ কুষ্টিয়া পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক জহুরুল ইসলাম আন্দোলনের বাজার পত্রিকাকে বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছেন। শুনেছি, তাঁদের মজুরি বাড়ানো হচ্ছে, কিন্তু আন্দোলনকারীরা কোনো আশ্বাস শুনতে চাইছেন না। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌরসভার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘জুলাই মাসের মজুরি আগামী আগস্টে দেওয়া হবে। নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ৩০/৪০ শতাংশ বেতন বাড়ানো হয়েছে। এর লিখিত কপি সোমবার দেওয়া হবে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে। আশা করছি, তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন।’ এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মিজানুর রহমান জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাদের ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এরপরেও তারা কোনো প্রকার আলাপ-আলোচনা ছাড়াই এ কর্মসূচি পালন করছেন। আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

আরও খবর

Sponsered content