19 June 2025 , 8:20:11 প্রিন্ট সংস্করণ
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.)আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, আজকে আমাদের কমিশনের সপ্তম সভা অনুষ্ঠিত হলো। এই সভার আলোচ্যসূচিতে ছিল রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা চূড়ান্তকরণ। যেটা রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা- ২০২৫ হিসেবে পরিগণিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এ তথ্য জানান।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আরেকটি বিষয় ছিল জাতীয় সংসদে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত আলোচনা। আমরা প্রথম এজেন্ডাটা সম্পন্ন করতে পেরেছি। সময়ের অভাবে কিছু উপাত্ত এখনও বাকি আছে বিধায় সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণী বিষয়ক আলোচনাটা আজকে আর আমরা এগিয়ে নিই নাই। আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহের শেষ নাগাত সংসদীয় আসনের বিষয়টা সম্পন্ন হবে। আজকের মূল আলোচনাটা হয়েছে রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীর আচরণবিধি সংক্রান্ত।
এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আমি বলতে পারি যে এখানে উল্লেখযোগ্য যে বিষয়গুলো এসেছে নতুনভাবে, প্রথমত হচ্ছে গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে আরপিওর ধারা ৯১ যেটা আছে (প্রার্থিতা বাতিল করার) এটা ইতোপূর্বে আচরণবিধিতে ছিল না, এটাকে সন্নিবেশ করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, বিলবোর্ডের ব্যবহার অতীতে ছিল না, এটা যুক্ত করা হচ্ছে। পোস্টার ব্যবহার বাদ করার ব্যাপারে যেটা সংস্কার কমিশনেরও একটা প্রস্তাব ছিল। আমরাও একমত হয়েছি। আমরা পোস্টার ব্যবহার বাদ দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছি। ব্যানার, ফেস্টুন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইত্যাদিগুলোকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে যারা বিবেচিত হন সেখানে উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যদেরকেও যোগ করা হয়েছে।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, বিভিন্ন সরকারি ফ্যাসিলিটির ব্যবহার যেমন সার্কিট হাউস, ডাকবাংলো, রেস্ট হাউস এর এটার ওপরে কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। আমাদের পরিবেশ বিষয়ে বিশেষভাবে আলোচনা করা হয়েছে যে প্রচার প্রচারণায় পরিবেশবান্ধব সামগ্রীর ব্যবহারের ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। ভোটার স্লিপ ইন্ট্রোডিউস করার ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। টিশার্ট, জ্যাকেট ইত্যাদির ব্যাপারে অতীতে যে বিধিনিষেধ ছিল। এটার ব্যাপারে একটু শিথিল মনোভাব পোষণ করা হয়েছে।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ আরও বলেন, আর্মসের যে সংজ্ঞা ছিল সেই সংজ্ঞার মধ্যে অর্থাৎ অস্ত্র এর সংজ্ঞার মধ্যে দেশীয় অস্ত্র শামিল করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ওপরে বিশদভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াকে ডিফাইন করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ভিতরে ডুজ এন্ড ডোন্টস কে ডিফাইন করা হয়েছে। শব্দের ব্যবহারে আমরা আগে যেমন শব্দের মাত্রার ওপরে কোন বিধিনিষেধ ছিল না। সেটাকে ৬০ ডেসিবল ইনকর্পোরেট করা হয়েছে। প্রচারণা তিন সপ্তাহই থাকবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে সকল প্রার্থী সভাপতি বা সদস্য হিসেবে পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন বা মনোনীত হয়েছেন সিদ্ধান্ত হয়েছে যে তাদেরকে এই প্রার্থীতা চূড়ান্ত হওয়ার পরে সেখান থেকে পদত্যাগ করতে হবে।
এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বা সদস্য হিসেবে যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো প্রার্থী থাকেন তাহলে নির্বাচনে তিনি যখন প্রার্থিতা লাভ করবেন তার আগেই তাকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাই প্রিজাইডিং অফিসার পোলিং অফিসার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকেন এবং এটা সংস্কার কমিশনেরও একটা সুপারিশের মধ্যে ছিল। সরকারি ব্যক্তি, সরকারি প্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রপার্টি ইত্যাদি ব্যবহারের উপরে আরো নিষেধাজ্ঞা কঠোর করা হয়েছে।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে কোনো ধরনের ফরেন ইনভেস্টমেন্ট না করার কথা বলা হয়েছে। কমনভাবে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে সকল প্রার্থী যাতে ইশতেহার ঘোষণা করতে পারেন বা করেন সেটার বিধান করা হয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়াতে যে ডায়ালগের আয়োজন হয়ে থাকে এটাকে সম্মতি দেওয়া হয়েছে। বিধিমালা লঙ্ঘনে যে নরমাল শাস্তি ছিল সেটা বাড়ানো হয়েছে। আগে ছিল ছয় মাস কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা সেটাকে ছয় মাস কারাদণ্ড এবং দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এটা সংস্কার কমিশনের একটা প্রস্তাবনা ছিল।
পোস্টার কি একবারেই থাকবে না- এমন প্রশ্নে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, পোস্টার আমরা রাখছি না। কেউ কোনো পোস্টার দিয়ে প্রচার চালালে পারবে না। ব্যানার আছে, ফেস্টুন আছে। বিলবোর্ড নতুনভাবে যুক্ত করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া আছে, লিফলেট আছে হ্যান্ডবিল আছে, এগুলো সব আছে শুধু পোস্টার নেই।





