আন্তর্জাতিক

আবারও বদলে গেল চিত্র জোট গঠনের দৌড়ে নামলেন ইমরান খান

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে দুইদিন হলো। কিন্তু এখনও কে হতে চলেছে দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। দেশটির নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সবশেষ ফলাফল অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, সরকার গঠনের জন্য কোনো দলই এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৫ আসনে (একটি স্থগিত) ভোটগ্রহণ হয় বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)।

কোনো দলের সরকার গঠনে প্রয়োজন হবে ১৩৪ আসন। নির্বাচনের প্রায় ৪০ ঘণ্টা পার হলেও সব আসনের ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৬৫ আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৫২টি আসনের ফল ঘোষণা করেছে কমিশন।এরমধ্যে সাবেক প্রধামন্ত্রী ইমরান খানের পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা পেয়েছেন ৯৯টি আসন। আর নওয়াজ শরিফের মুসলিম লীগ-এন (পিএমএলএন) জয় পেয়েছে ৭৩টি আসনে। বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৩টি আসন।

এছাড়া জমিয়ত উলামা-ই ইসলাম দুটি ও অন্যরা পেয়েছে ৩৩টি আসন।স্বাভাবিক ভাবেই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে ছিলেন নওয়াজ শরিফ ও বিলাওয়াল ভুট্টো। কারণ ইমরান খানের দল পিটিআই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। তার দলের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।তবে শনিবার দুপুরের পর থেকেই বদলে যেতে শুরু করেছে দৃশ্য। এদিন দাঙ্গা সংশ্লিষ্ট ১২টি মামলা এবং সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর ও সেনা জাদুঘরে হামলা সংশ্লিষ্ট দুটি মামলায় পিটিআই প্রধান ইমরান খানকে জামিন দিয়েছেন আদালত। ১৩টি মামলায় জামিন পেয়েছেন ইমরান সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিটিআইয়ের নেতা শাহ মাহমুদ কুরেশিও।

এতেই নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে দলের নেতারা। ক্ষমতা পুনরুদ্ধারে অন্যান্য দলের সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক ডেকেছে পিটিআই। বৈঠকে সাবেক ক্ষমতাসীন দল ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে। যে বিষয়টি জেল থেকেই নিয়ন্ত্রণ করছেন ইমরান খান। তার পরামর্শ অনুসারেই হাঁটছে দলটির নেতারা।পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম জিও টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকে পিটিআই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহর খান, আসাদ কায়সার, আলী মুহাম্মদ খান এবং অন্যরা যোগ দেবেন। নতুন কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা হবে সেখানে।

এদিকে জোট সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএলএন) ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। তবে এক্ষেধে বাঁধা হচ্ছে, দুলই চাইছে- প্রধানমন্ত্রী হবে তাদের শীর্ষ নেতা।পিএমএলএন চাইছে, নতুন জোট গঠিত হলে সেই জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন নওয়াজ শরিফ। কিন্তু ভোটের হিসেবে তৃতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) জানিয়েছে, নতুন জোটে যেতে তেমন কোনো সমস্যা না থাকলেও নওয়াজ শরিফকে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে আপত্তি রয়েছে দলটির।

পিপিপির শীর্ষ মুখপাত্র খুরশিদ শাহ শুক্রবার জিও নিউজকে বলেন, ‘নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী হতে চান। এজন্যই জোট গঠনের তৎপরতা চালাচ্ছেন…. জোট সরকারের অংশ হতে আমাদের আপত্তি নেই, কিন্তু আমরা তাকে (নওয়াজ) প্রধানমন্ত্রীর পদে দেখতে চাই না। আমরা চাই, পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন আমাদের দলের চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।দুই দলের প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে দ্বন্দের সুযোগটা নিতে চাইবেন ইমরান খান। সেজন্যই জেলে থেকেই এবার নেমে পড়লেন জোট গঠনের দৌড়ে। পাকিস্তানের সরকার গঠন নিয়ে আর কী কী নাটক হয়, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায়।

আরও খবর

Sponsered content

%d bloggers like this: