5 September 2023 , 2:52:03 প্রিন্ট সংস্করণ
২০১৫ সালের মে মাসে আমেরিকার ডেট্রয়েটে খুন হন ৪৬ বছর বয়সি মার্টিন ডুরাম নামে এক ব্যক্তি। খুব কাছ থেকে পাঁচটি গুলি করা হয় তাকে।মৃত্যু হয় মার্টিন ডুরামের। অন্য দিকে তার স্ত্রী গ্লেনা ডুরাম মাথায় আঘাত পান।দীর্ঘদিন পর এই খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন তার স্ত্রী। সাক্ষী দিল মৃতের পোষা তোতা! তার সাক্ষীর ভিত্তিতেই দোষী সাব্যস্ত করা হল ৪৯ বছর বয়সি গ্লেনা ডুরামকে।
মামলা ওঠে আদালতে। কে খুন করল মার্টিন ডুরামকে? মার্টিনের প্রাক্তন স্ত্রী ক্রিস্টিনার দাবি, প্রাক্তন স্বামীকে খুন করেছেন তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী গ্লেনা। তার পর নিজেকে আঘাত করে মামলা ঘোরাতে চেয়েছেন। কিন্তু তার প্রমাণ কী?আদালতে সাক্ষী হিসেবে আনা হয় মৃত মার্টিনের পোষা তোতাটিকে। নাম তার ‘বাড’।
মার্টিনের প্রাক্তন স্ত্রীর অভিযোগ, গুলি চালানোর সময় সামনেই ছিল তোতাটি। মার্টিনকে গুলি চালানোর সময় ছটফট করে ওঠে সে।তোতাটিকে কথা বলা শিখিয়েছিলেন মার্টিন। মালিকের দিকে তার মালকিন বন্দুক তাক করতেই না কি বাধা দেয় সে। বলে ওঠে ‘মেরো না’। তার গলার শব্দ ছিল ঠিক মার্টিনের মতোই।
প্রাক্তন স্বামীর মৃত্যুর পরে ক্রিস্টিনা ওই পাখিটিকে নিয়ে যান। কারণ, মার্টিনের পর তোতাটি সবচেয়ে বেশি চিনত তাকেই।ভরা আদালতে পাখির সাক্ষ্য নেওয়া হয়। কিন্তু একটা পাখির সাক্ষ্যের ভিত্তিতে কি কাউকে অপরাধী করা যায়? বাদী এবং বিবাদী পক্ষের মধ্যে শুরু হয় আইনি তরজা।
দীর্ঘ সওয়াল-জবাব চলে। প্রথমে আদালত জানিয়ে দেয় একটা তোতার সাক্ষ্য নিয়ে কাউকে অপরাধী করা যায় না। অগত্যা মামলা খারিজ হয়।কিন্তু আবার আদালতে ওঠে মামলা। আদালতে বলতে ওঠেন ক্রিস্টিনা। মার্টিনের মৃত্যুর পর তোতাটি ছিল তার কাছে। সে নাকি মাঝে মধ্যেই বলে ওঠে ‘ফা…ডোন্ট শুট’ (গুলি কোরো না)।
ক্রিস্টিনার দাবি, তাদের পোষ্য ‘বাড’-এর মনে থেকে গিয়েছে সে দিন তার মালিককে খুনের ঘটনা। তাই সে হঠাৎ হঠাৎ চেঁচিয়ে ওঠে বলে, ‘গুলি কোরো না’।এরপর দীর্ঘ সওয়াল জবাবে স্বামীকে খুনের অপরাধে গ্লেনাকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।কিছু দিনের মধ্যেই স্বামী খুনে দোষী সাব্যস্ত হওয়া গ্লেনা ডুরামের সাজা ঘোষণা করবে আদালত।
মার্টিনের পোষ্যটি আফ্রিকার গ্রে প্যারট (আফ্রিকার ধুসর প্রজাতির তোতা)।বহু গবেষকের দাবি, আফ্রিকার এই বিশেষ প্রজাতির পাখি, ২০০টির বেশি শব্দ মনে রাখতে পারে। এরা বেশ বুদ্ধিমান।‘বাড’ সেই আফ্রিকান প্রজাতির তোতা, যার স্মৃতিশক্তি বেশ ভাল। তাই মালিকের গলায় তার ডেকে ওঠা ‘ফা… ডোন্ট শুট’ শব্দবন্ধই হয়ে উঠল এই বিচার প্রক্রিয়ার সাক্ষী।