খেলাধুলা

এবার আইসিসির নতুন উদ্যোগ টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচাতে

টেস্ট ক্রিকেট বাঁচাতে মরিয়া আইসিসি। লঙ্গার ফরম্যাটের জন্য নতুন করে প্রায় ২০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করতে যাচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০২৫ সাল থেকে ম্যাচ প্রতি প্রায় ১২ লাখ টাকা ম্যাচ ফি পাবেন ক্রিকেটাররা। তবে, এই প্রজেক্টের আওতায় থাকছেনা ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড। কয়েক বছর আগেও টেস্ট ক্রিকেটের শেষ দেখে ফেলেছিলেন অনেকে।

দীর্ঘতম ফরম্যাটের বিলুপ্তির আশঙ্কার কথা প্রায়ই বলেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা। টি-টোয়েন্টি আর ফ্র্যাঞ্জাইজি টুর্নামেন্টের ব্যাপক জনপ্রিয়তার যুগে ‘ক্লিশে-একঘেয়ে’ এসব বিশেষণ জুড়ে দিয়ে টেস্ট ম্যাচকে ৫ দিনের পরিবর্তে ৪ দিনে খেলানোর পরামর্শও দিতে দেখা যায়। কিন্তু, এতসব কথার মাঝে এলিট ফরম্যাটের আবেদন টিকিয়ে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেছেন অনেকে। অ্যাশেজ, বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির মতো সিরিজে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারতের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপভোগ করে গোটা বিশ্ব।

পাশাপাশি দিনে দিনে সাদা পোশাকে উন্নতির ছাপ রাখছে অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলোও। যা নতুন করে আশাবাদী করে তুলেছে টেস্ট ক্রিকেটপ্রেমীদের। এমনিতে বাংলাদেশের টেস্ট রেকর্ড ভালো নয়। তবে, সবশেষ ম্যাচে ক্রিকেট বিশ্বকে এক্সাইটিং এক পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে টাইগাররা। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচটির পরপরই টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে এক সুসংবাদ দিয়েছে আইসিসি।

সাদা পোশাকের ফরম্যাটের প্রসারে আলাদা ফান্ড গঠন করতে যাচ্ছে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। যার পরিমাণ হবে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ২০০ কোটি টাকা। মূলত, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চেয়ারম্যান মার্ক বেয়ার্ড এই উদ্যোগ নেন। ভারত ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডেরও সম্মতি রয়েছে এতে। টেস্ট ফরম্যাটকে আরও আকর্ষণীয় করতে এবং খেলোয়াড়দের আগ্রহ বাড়াতে ম্যাচ ফি বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে প্রভাবশালী বোর্ডগুলো।

তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী, ম্যাচ ফি করা হবে ১০ হাজার ডলার বা প্রায় ১২ লাখ টাকা। আগামী বছর থেকে যা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে আইসিসির। বিসিসিআই সচিব জয় শাহ এবং ইসিবি চেয়ারম্যান রিচার্ড থম্পসনসহ প্রভাবশালীদের সমর্থন থাকায় সিএ প্রধান বেয়ার্ড বিষয়টি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। যদিও সবকিছু এখনও আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে। এক্সিকিউটিভ কমিটির মিটিংয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করা হবে প্রস্তাবটি।

এই ‘মিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের’ আওতায় থাকবেনা বিগ থ্রি বোর্ড— ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। বাকি ৬ বোর্ডের লোকসান পুষিয়ে নিতেই মূলত এই উদ্যোগ নীতি নির্ধারকদের। ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনি গ্রেভ জানিয়েছিলেন, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া দলের সিরিজ আয়োজনে ২ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ২৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে তাদের।

কিন্তু, সিরিজগুলো থেকে এতো অর্থ উঠিয়ে আনা দুরূহ বিষয়। টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহ কমেছে খেলোয়াড়দের মাঝে। ইজি মানি ইনকামে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দিকেই ঝোঁক বেশি। তবে, আইসিসির এই নতুন উদ্যোগের মধ্য দিয়ে টেস্ট নিয়ে নতুন করে আশার সঞ্চার হলো।