জাতীয়

গুলি চালানোদের শাস্তির আওতায় আনা হবে বললেন আসিফ মাহমুদ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ আরও দুই শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন-ইমন ও রিয়াজ হোসেন। ইমন টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের গোড়াই এলাকায় ৪ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হন। আর রাজধানীর ঝিগাতলা এলাকায় ৪ আগস্ট মিছিল করার সময় গুলিবিদ্ধ হন বরিশালের একটি কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াজ হোসেন।

ঢাকা : ইমন রোববার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ইমনের বন্ধু ইমরান হোসেন বলেন, মির্জাপুরের গোড়াই এলাকায় পুলিশের গুলিতে আহত হন ইমন। সেসময় শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উত্তরা লেকভিউ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে ৬ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ইমনের বাড়ি টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর উপজেলার জগতপুরা গ্রামে। ভুয়াপুর মনিরুজ্জামান খান কলেজ থেকে এইচএসসি পাশের পর সে অন্য কলেজে ভর্তির চেষ্টায় ছিল। তিন ভাই, এক বোনের মধ্যে সে বড়।ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, ভোরে ইমনের মৃত্যু হয়।

বরিশাল ও হিজলা : রিয়াজ হোসেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউতে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে মারা যান। রোববার দুপুরে তার বড় ভাই রেজাউল করিম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একই দিন জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

ঝিগাতলা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আন্দোলনকারীদের কয়েকজন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।রিয়াজ হোসেন হিজলা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাহমুদুল হক রাড়ীর ছেলে। তিনি মুলাদী সরকারি কলেজের স্নাতক শ্রেণির শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। এছাড়া, রিয়াজ হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রস্তাবিত কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন।

হিজলা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহসিন সিকদার বলেন, রিয়াজ ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তার এ ত্যাগ জাতি ভুলবে না। গত ৩১ জুলাই থেকে সহপাঠীদের সঙ্গে রাজধানীর আন্দোলনে ঝিগাতলা এলাকায় অবস্থান করছিলেন। রেজাউল করিম বলেন, মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ায় রিয়াজের শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। গত কয়েকদিন ধরে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউতে) রাখা হয়।

আন্দোলনে গুলি চালানোদের শাস্তির আওতায় আনা হবে : ঢাবি প্রতিনিধি জানান, যারা নির্বিচারে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে তাদেরকে মানবতাবিরোধী অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে মন্তব্য করেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। রোববার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ওই দুই শিক্ষার্থীর জানাজায় অংশ নিয়ে এই কথা বলেন আসিফ মাহমুদ।

এতে অংশগ্রহণ করেন সমন্বয়ক সারজিস আলম, আসিফ মাহমুদ ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।আসিফ মাহমুদ বলেন, রিয়াজ ও ইমন ভাইসহ যারা শহিদ হয়েছেন তাদের পরিবারের দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকার নেবে এবং যারা আহত আছেন বর্তমানে এবং তাদের ভবিষ্যৎ সব চিকিৎসার দায়িত্ব ইতোমধ্যে সরকার নিয়েছে। আমরা এটি স্পষ্টভাবে বলতে চাই- যারা আমাদের ভাইদের শহিদ করেছে, নির্বিচারে গুলি চালিয়েছেন তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতে নিশ্চিত করা হবে।