আন্তর্জাতিক

আল-শিফা হাসপাতাল এখন মৃত্যুপুরী বললেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার আল-শিফা হাসপাতালের অবস্থা ভয়াবহ। হাসপাতালটিকে ‘মৃত্যুপুরী’ বলে অভিহিত করে সেখান থেকে আশ্রয় নেওয়া মানুষকে চলে যেতে বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)।রোববার (১৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে আল-জাজিরা এ তথ্য জানায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘের কয়েকজন সদস্যরা ইসরায়েলি সেনাদের অভিযান চালানো হাসপাতালটি পরিদর্শন করে এ মন্তব্য করেছেন। এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার (১৮ নভেম্বর) উত্তর গাজায় জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলসহ শরণার্থী শিবিরে করা দুটি হামলায় ৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

রোববার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আরও জানায়, জাতিসংঘের একটি দলটি সেখানে পৌঁছেছে। হাসপাতালটি পুরো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালটির প্রবেশপথে একটি গণকবরও দেখতে পান তারা। ভেতরে ৩০০ জনের বেশি রোগী ও ২৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে।সাধারণ মানুষকে যাতে আর কষ্ট ভোগ করতে না হয়, তার জন্য দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির জাবালিয়ার স্কুলে করা ইসরায়েলি এ হামলায় অনেক রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে। অনেক বিছানাপত্র স্কুলের বেঞ্চগুলোর নিচে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে আছে।ইউএন এজেন্সি ফর প্যালেস্টিনিয়ান রিফিউজি এর প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি এ ঘটনাটিকে ‘ভয়াবহ’ বলেছে।

এদিকে মিশর ইসরায়েলের করা এ হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ এবং ‘জাতিসংঘের জন্য অপমান’ হিসেবে মনে করছে।শনিবার (১৮ নভেম্বর) জাবালিয়ায় হওয়া বিচ্ছিন্ন একটি হামলায় একই পরিবারের ৩২ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জন শিশু ছিল বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

তবে হামলার দিকে কোনো ইঙ্গিত না দিয়ে ইসরায়েলি সেনারা জানান, জাবালিয়াতে হওয়া একটি ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।৭ অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে অতর্কিত একটি হামলা চালায়। যেখানে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়। এছাড়া হামাসের কাছে বন্দী আছেন ২৪০ জনের বেশি মানুষ।

এ হামলার জবাবে ওইদিন থেকেই ইসরায়েল গাজায় বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করে। তাদের নির্বিচার মলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ৫ হাজার শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার শাসনে থাকা হামাস।এদিকে জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, গত ৬ সপ্তাহের যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৬ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। শনিবার ইসরায়েলি সেনারা জানিয়েছে, তারা গাজার আশেপাশের এলাকায় মূল কার্যক্রম চালানো শুরু করেছে।